ভিডিও বা টাইপ নয়, শেখার জন্য সেরা উপায় হাতে লেখা, বলছে গবেষণা
৪২ জনের ওপর এই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। ওই ৪২ জনকে আরবি বর্ণমালা শেখানো হয়।
![ভিডিও বা টাইপ নয়, শেখার জন্য সেরা উপায় হাতে লেখা, বলছে গবেষণা Study sheds light on benefits of handwriting over typing, watching videos for learning ভিডিও বা টাইপ নয়, শেখার জন্য সেরা উপায় হাতে লেখা, বলছে গবেষণা](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/07/10/28c3f6fc34da8ce8e44cc5514b68920b_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
নিউইয়র্ক: কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের রমরমা হাতে লেখার অভ্যেস ক্রমশই কমিয়ে দিচ্ছে। কথায় বলে লেখা-পড়া। কাজেই হাতে লেখার অভ্যেস কমলে কি শেখার ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়ে? সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, হাতে লেখার অভ্যেস কিছু নির্দিষ্ট দক্ষতা বিস্ময়করভাবে দ্রুত শেখার ক্ষেত্রে সহায়ক। টাইপ করে বা ভিডিও দেখে শেখার থেকে হাতে লেখা তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেগুলি আরও ভালোভাবে শিখতে সাহায্য করে।
সাইকোলজি সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কগনিটিভ সায়েন্সের অধ্যাপক ব্রেন্ডা রাপ বলেছেন, শিশুদের খানিকক্ষণ হাতের লেখার অভ্যেস ভালো কিনা, তা অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাছে একটা প্রশ্ন। অভ্যেসের ফলে হাতের লেখা ভালো হয়। কিন্তু এখন তো লেখাজোখা কম হয়, তাই এ কথা আর কে ভাবে? কিন্তু প্রকৃত প্রশ্ন হল, কোনও কিছু পড়া, বানান করা বা বোঝার ক্ষেত্রে হাতের লেখার উপকার রয়েছে কিনা ?
রাপ ও গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যরা ৪২ জনের ওপর এই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। ওই ৪২ জনকে আরবি বর্ণমালা শেখানো হয়। অংশগ্রহণকারীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়- লেখা, টাইপ করা ও ভিডিও দেখা।
অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককেই ভিডিও দেখিয়ে অক্ষর চেনানো হয়। ভিডিওতে পর্দায় লেখা সহ সেগুলির নাম ও শব্দ জানানো হয়। প্রত্যেক অক্ষর চিনিয়ে দেওয়ার পর এতক্ষণ যা দেখানো ও শোনানো হয়েছে, তা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে শেখার চেষ্টা করে অংশগ্রহণকারীরা।
ভিডিও দেখে শেখার জন্য যাদের নেওয়া হয়, তাদের পর অন-স্ক্রিনে অক্ষর দেখানো হয়। এই গ্রুপে থাকা অংশগ্রহণকারীদের বলতে হয় যে, তারা যেটা দেখেছিল, এটা সেই অক্ষর কিনা। যারা টাইপ করছে, তাদেরকে কি-বোর্ডে অক্ষরটি খুঁজে দেখতে বলা হয়। যারা হাতে লিখছে, তাদের খাতায় কলম দিয়ে লিখতে হয়।
শেষপর্যন্ত প্রায় ছয়টি সেশনে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকেই অক্ষরগুলি চিনতে সক্ষম হয় এবং পরীক্ষার সময় কিছু ভুলচুকও করে। কিন্তু যারা হাতে লেখার দলে ছিল, তারা এক্ষেত্রে দক্ষতার পর্যায়ে পৌঁছতে পারে সবচেয়ে বেশি দ্রুত। কয়েকজন তো দুটি সেশনেই শিখে ফেলেছিল।
এরপর গবেষকরা দেখেন, কতটা মাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের নবলব্ধ জ্ঞানের ব্যবহার করতে পারছে। অন্যভাবে বলতে গেলে, অংশগ্রহণকারীরা অক্ষরগুলি চিনতে পারলেও তারা সেগুলি কতটা রপ্ত করতে পারছে, নতুন শব্দের বানান করতে পারছে ও অচেনা শব্দ পড়তে সেগুলি ব্যবহার করতে পারছে?
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হাতে লেখার দলে যারা ছিল, তারা এগুলির ক্ষেত্রে অনেক ভালোভাবে সক্ষম হয়েছে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী এক অধ্যাপক বলেছেন, অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকেই অক্ষরগুলি চিনতে পারবেও অন্যান্য উপায়ের থেকে লেখার প্রশিক্ষণই সবচেয়ে সেরা ছিল। আর বিষয়টি রপ্ত করতে তাদের অনেক কম সময় লেগেছে।
লেখার দলে যারা ছিল, তারা পড়া ও বানানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি দক্ষতা দেখিয়েছে বাকি দুই দলের তুলনায়। গবেষকরা বলেছেন, হাতের লেখার ক্ষেত্রে দৃশ্য ও শ্রবণ একসঙ্গে কাজ করেছে। হাতে লেখার ক্ষেত্রে উপলব্ধিগত অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ করে দেয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা প্রাপ্তবয়স্ক হলেও শিশুদের ক্ষেত্রেও এরই ফলাফল হতে পারত। গবেষণার এই ফলাফল ক্লাসরুমের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ট্যাবলেট ও ল্যাপটপের মুখোমুখি হয়ে পেনসিল ও নোটবুককে অনেকটাই পিছু হঠতে হয়েছে।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)