Farmers Protest: কৃষক আন্দোলন ঘিরে ফের ধুন্ধুমার, নামল বুলডোজার-ক্রেন, আটক কয়েকশো, বিরোধীদের নিশানায় BJP-AAP
Shambhu Border Farmers Protest: ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে কৃষকদের টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।

নয়াদিল্লি: কৃষকদের আন্দোলন ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কৃষক নেতাদের আটক করল পুলিশ। মাঝরাতে নামানো হল বুলডোজারও। যে অস্থায়ী শিবিরে রাত কাটছিল কৃষকদের, তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। আন্দোলনে যোগ দিতে কৃষকদের আর একটি দল যখন দিচ্ছিল, সেই সময় তাদেরও আটক করল পুলিশ। সবমিলিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়াতেই নতুন করে আন্দোলনের পথ বেছে নেন কৃষকরা। কিন্তু তাঁদের আন্দোলন গায়ের জোরে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। (Farmers Protest)
ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে কৃষকদের টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। আন্দোলনস্থল খালি করতে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে বর্বরোচিত আচরণের অভিযোগ সামনে আসছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এর পর রাতে আন্দোলনস্থলে ক্রেন, বুলডোজার নামানো হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে দেখা যায় অস্থায়ী নির্মাণগুলিকে। আন্দোলনস্থল খালি করে দেওয়া হয়। (Shambhu Border Farmers Protest)
#WATCH | Punjab Police demolished the tents erected by farmers at the Punjab-Haryana Shambhu Border, where they were sitting on a protest over various demands.
— ANI (@ANI) March 19, 2025
The farmers are also being removed from the Punjab-Haryana Shambhu Border. pic.twitter.com/TzRZKEjvXD
পঞ্জাব এবং হরিয়ানার সংযোগস্থল, শম্ভু ও খানাউরি সীমানায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন কৃষকরা। সেই আবহেই বুধবার চণ্ডীগড়ে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে বৈঠক ছিল তাঁদের প্রতিনিধিদের। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে সেই বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্রেতা-গ্রাহক বিভাগের মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূস গয়ালও। পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী হরপাল সিংহ চিমা এবং রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী গুরমীত সিংহ খুড্ডিয়াও বৈঠকে যোগ দেন।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য-সহ একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে ওই বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে শিবরাজ জানান, দু'পক্ষের মধ্যে ইতিবাচক কথা হয়েছে। ৪ মে ফের একদফা আলোচনা হবে। কিন্তু বৈঠক থেকে বেরিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন কৃষকরা। তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি বলে জানান। এর পর কৃষক নেতারা শম্ভু সীমানায় আন্দোলনে যোগ দিতে রওনা দেন। কিন্তু মোহালীতে আটক করা হয় তাঁদের। কৃষক নেতা গুরমীত সিংহ মঙ্গত, সরওয়ান সিংহ পান্ধের, জগজিৎ ডাল্লেওয়াল-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে পঞ্জাব পুলিশ।
VIDEO | Several farmer leaders detained by Punjab Police. Visuals from Shambhu Border.
— Press Trust of India (@PTI_News) March 19, 2025
(Full video available on PTI Videos - https://t.co/n147TvrpG7) pic.twitter.com/G09eESmfPd
সেই নিয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় কৃষকদের। এর পর আটক করা হয় কৃষক নেতা অভিমন্যূ কোহার, কাকা সিংহ কোতড়াদের। প্রথমে প্রায় ২০০ কৃষককে আটক করা হয় বলে জানা যায়, পরে জানা যায় সংখ্যাটা ৫০০-৭০০। শম্ভু এবং খানাউরি সীমানায় তাঁদের যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অস্থায়ী শিবির গড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন কৃষকরা। দিল্লি যেতে বাধা দিলে পঞ্জাব এবং হরিয়ানার মাঝে দুই সীমানা এলাকায় আন্দোলনে বসে পড়েন তাঁরা।
সেই থেকে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিসান মোর্চা, কিসান মজদুর মোর্চা। জগজিৎ ডাল্লেওয়াল টানা ৫৪ দিন অনশনও চালিয়ে যান, যার দরুণ জানুয়ারি মাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ২৪টি ফসলের উপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দাবি করেছেন জগজিৎ। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের পাশাপাশি, ঋণমকুব, কৃষক এবং কৃষি শ্রমিকদের জন্য পেনশন, বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধি না করা, আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা তুলে নেওয়া, ২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনায় পীড়িতদের ন্যায্য বিচার পাইয়ে দেওয়া, ২০১৩ সালে জমি অধিগ্রহণ আইন ফিরিয়ে আনা এবং ২০২০-'২১ সালের আন্দোলনে নিহত কৃষকদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলন চলছে।
Punjab Police removes protesting farmers from Shambhu Border, several leaders detained
— ANI Digital (@ani_digital) March 19, 2025
Read @ANI story | https://t.co/8ODBDKQbbp#Punjabpolice #Shambhuborder #FarmersProtest pic.twitter.com/Me56Llwu2S
কিন্তু কৃষকদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া তো দূর, কৃষকদের সঙ্গে যে আচরণ করছে পুলিশ, তার নিন্দায় সরব হয়েছে কংগ্রেস, শিরোমণি অকালি দল। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং পঞ্জাবের আম আদমি পার্টি সরকারের বিরুদ্ধেও সরব তারা। পঞ্জাবের মন্ত্রী হরপালের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া জানাতে হলে দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করা উচিত কৃষকদের। কিন্তু পঞ্জাব সীমানা আটকে আন্দোলন করছেন কৃষকরা, যাতে রাজ্যের পরিবহণের উপর প্রভাব পড়ছে।
এ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের আম আদমি পার্টি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা তথা পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চান্নি। কৃষকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে, তা অগণতান্ত্রিক এবং বেআইনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। কৃষিব্যবস্থার উপর আক্রমণ হানা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শিরোমণি অকালি দলের নেতা দলজিৎ সিংহ চিমার মতে, কৃষক নেতাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হচ্ছে। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানের জবাবদিহি দাবি করেছেন তিনি। কৃষকদের আটক করার নির্দেশ কোথা থেকে এল, জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি, বিজেপি এবং আম আদমি পার্টির মধ্যে গোপন আঁতাতের অভিযোগও তোলেন চিমা। বলেন, "কেন্দ্রীয় সরতার এবং ভগবন্ত যে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, এটাই তার প্রমাণ। অবিলম্বে কৃষক নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। দেরি করা চলবে না।" অকালি দলের সাংসদ হরসিমরত কউর বাদল বলেন, "মানসিক ভারসাম্য় হারিয়েছেন ভগবন্ত। অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশন চালিয়ে যাওয়া জগজিৎকে আটক করেছে পুলিশ। অথচ নির্বাচনের সময় কৃষকদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে ভগবন্ত কথা দিয়েছিলেন। উনি মিথ্যে বলেছেন। পঞ্জাবে কেউ নিরাপদ নয়।"
এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, পটিয়ালার DG মনদীপ সিংহ সিধুর নেতৃত্বে খানাউরি সীমানায় ৩০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে শম্ভু সীমানাতেও। সবমিলিয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ কৃষককে আটক করা হয়েছিল বলেও দাবি সামনে এসেছে। DG জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারই আন্দোলনকারীদের সরিয়ে রাস্তা খালি করতে নির্দেশ দিয়েছে। খানাউরি সীমানা এবং সংলগ্ন সাঙ্গরুর ও পটিয়ালায় ইন্টারনেট পরিষেবাো বন্ধ রাখা হয় বলে খবর।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
