আলাপনের পাশে রাজ্য, কেন্দ্রের আচরণ দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, 'আইন আইনের পথেই চলবে। দেশটা শুধু বিজেপির নয়।'
কলকাতা: 'আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের আচরণ দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো। গায়ের জোরে আইন চলে না।' মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ফের একবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এ দিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, 'আইন আইনের পথেই চলবে। দেশটা শুধু বিজেপির নয়। রাজীব গাঁধীর সরকারেও ৪০০ সাংসদ ছিলেন। কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের কিন্তু অত সংখ্যা নেই। গায়ের জোরে দেশ, সরকার চালানো যায় না।'
গত ৩১ মে মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁকে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন থামছেই না। এ দিনের পর থেকে তিনি মুখ্য়মন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা পদে কাজ করতে শুরু করেছেন। কিন্তু নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লঙ্ঘনের কারণ দেখিয়ে সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে শোকজ করে কেন্দ্রীয় সরকার। থামেনি এখানেও, গতকালই ফের কেন্দ্রের রোষের মুখে পড়েন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়েছে, নিয়ে আলাপনের কোনও বক্তব্য থাকলে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা জানাতে হবে। তাছাড়াও জানানো হয়েছে, কেন তাঁর বিরুদ্ধে মেজর পেনাল্টি প্রসিডিং নয়, তা তাঁকে জানাতে হবে। এই ৩০ দিনের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সামনাসামনি গিয়েও জানাতে পারেন, কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া উচিত নয়। এ ছাড়া লিখিতভাবেও নিজের বক্তব্য জানাতে পারেন আলাপন। কিন্তু, ৩০ দিনের মধ্যে উত্তর না দিলে কমিটি যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে এগোতে পারে। সবমিলিয়ে কেন্দ্রের নিশানায় রয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে তার হয়েই কথা বলেছেন সমস্ত বিরোধী শিবিরও।
কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিরত থাকার অভিযোগে শো-কজ করা হয়েছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৩১ মে ছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির শেষ দিন। সেদিনই তাঁকে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিল্লি না গিয়ে সেদিনই অবসর নেন এই আমলা। রাজ্য সরকার তাঁর কর্মজীবনের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানোর কথা জানালেও, শেষপর্যন্ত আর বাড়তি সময় চাকরি না করারই সিদ্ধান্ত নেন আলাপন। সেদিনই তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে তিন বছরের জন্য নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন ভূমিকায় দেখা যায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।