Ratan Tata Will: ১০০০০ কোটির সম্পত্তি, উইলে নাম পোষ্য-পরিচারক- প্রতিবেশীরও, নিজের শেষকৃত্যের জন্য মাত্র এই টাকা রেখে যান রতন টাটা?
Ratan Tata Assets: ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর, ৮৬ বছর বয়সে মারা যান রতন টাটা।

নয়াদিল্লি: নয় নয় করে পাঁচ মাস হতে চলল তিনি নেই। এবার রতন টাটার সম্পত্তি ও বখরার বিশদ রিপোর্ট সামনে এল। নিজের শেষ উইলে প্রায় ১০ হাজার কোটি রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। তবে শুধুমাত্র পরিবার বা ঘনিষ্ঠদের নাম নেই উইলে, বাড়ির পরিচারক থেকে প্রতিবেশী, পোষ্যের নামও রয়েছে রতন টাটার উইলে। রতন টাটা নিজের সম্পত্তির কতটা দান করে গেলেন, কতটা রেখে গেলেন পরিবার-পরিজনের জন্য, সেই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য সামনে এল। (Ratan Tata Will)
২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর, ৮৬ বছর বয়সে মারা যান রতন টাটা। নিজের সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ, যার মধ্যে ফিক্সড ডিপোজিট, দামি ঘড়ি, পেন্টিং রয়েছে, সেগুলি সৎ বোন শিরিন জিজিভয় এবং ডিয়ানা জিজিভয় এবং মোহিনী এম দত্ত নামের এক পরিচারিকার নামে রেখে গিয়েছেন প্রয়াত শিল্পপতি। সবমিলিয়ে ওই টাকা অঙ্ক প্রায় ৮০০ কোটি। জুহুতে যে বাংলো ছিল রতন টাটার, তা ভাই জিমি নাভাল টাটার নামে করে গিয়েছেন। আলিবাগের সম্পত্তি এবং তিনটি বন্দুক রেখে গিয়েছেন বন্ধু মেহলি মিস্ত্রির নামে। (Ratan Tata Assets)
নিজের উইলে বিশেষ ভাবে পোষ্য টিটোর উল্লেখ করে গিয়েছেন রতন টাটা। তাঁর মৃত্যুর পরও টিটোর দেখভালে যাতে কোনও ত্রুটি না থেকে যায়, তার জন্য ১২ লক্ষ টাকা রেখে গিয়েছেন। প্রতি ত্রৈমাসিকে ৩০ হাজার টাকা করে আসবে টিটোর জন্য। রাজন শ' নামের এক ব্যক্তিকে টিটোর দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজন ছিলেন রতন টাটার নিজস্ব রাঁধুনি। রাজনের জন্য মোট ১ কোটি টাকা রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। এর মধ্যে ৫১ লক্ষে টাকার ঋণ মিটিয়ে গিয়েছেন। পরিচারক সুবাইয়ে কোনারেক জন্য ৬৬ লক্ষ রেখে গিয়েছেন রতন টাটা, যার মধ্যে ৩৬ টাকার ঋণও ছিল। ব্যক্তিগত সচিব ডেলনাজ গিলদারের জন্য রেখে গিয়েছেন ১০ লক্ষ টাকা।
গাড়ির চালক রাজু লিয়নের জন্য ১.৫ লক্ষ টাকা রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। পাশাপাশি, ১৮ লক্ষ টাকার ঋণও মিটিয়ে গিয়েছেন। রতন টাটার কাছের বন্ধু, শান্তনু নায়ডু বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যে ঋণ নিয়েছিলেন, তাও মিটিয়ে গিয়েছেন রতন টানা, প্রায় ১ কোটি টাকা। গাড়ির চালক, পরিচারকদের জন্য সব মিলিয়ে ৩.৫ কোটি টাকা রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। উইলে লেখা আছে, সাত বছর বা তাঁর বেশি সময় ধরে যাঁরা তাঁর সেবা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। পার্টটাইম কাজ করতেন যাঁরা, গাড়ি সাফ করতেন যাঁরা, তাঁরা ১ লক্ষ করে পাবেন।
টাটা গোষ্ঠীর কর্মীদের কয়েক জনের নামও রয়েছে উইলে। টাটা ট্রাস্টে রতন টাটার কনসালট্যান্ট হোশি ডি মলেশ্বরকে ৫ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। আলিবাগের বাংলোর কেয়ারটেকার দেবেন্দ্র কটমল্লু ২ লক্ষ টাকা, ব্যক্তিগত সচিব ১.৫ লক্ষ, পিয়ন গোপাল সিংহ ও পাণ্ডুরং গুরভ পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা করে। সরফরাজ দেশমুখ নামের এক সহায়কের ২ লক্ষ টাকার ঋণ মিটিয়ে গিয়েছেন রতন টাটা।
প্রতিবেশী জেক মালেইতের ২৩.৭ লক্ষ টাকার ঋণ মিটিয়ে গিয়েছেন রতন টাটা। সেশেলসে ৮৫ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ছিল রতন টাটার, যা RNT Asspciates-কে দিয়ে গিয়েছেন। সেটি সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থা, যাতে শেয়ার রয়েছে টাটার প্রাক্তন ট্রাস্টি আর বেঙ্কটরমণ এবং টাটা টেকনোলজিসের প্রাক্তন সিইও প্যাট্রিক ম্যাকগোল্ডরিকের। টাটা ট্রাস্টের ট্রাস্টি ডেরিয়াস খম্বাটার নামও রয়েছে রতন টাটার উইলে। নিজের উইল বাস্তবায়িত হয় যাতে, সেই দায়িত্ব দুই সৎবোনকেই দিয়ে গিয়েছেন। এই কাজের জন্য তাঁরা ৫ লক্ষ টাকা করে পাবেন। নিজের শেষকৃত্যের টাকাও উইলে বরাদ্দ করে গিয়েছিলেন রতন টাটা। কিন্তু তাঁর শেষকৃত্যের যে খরচের হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তা চমকে দেওয়ার মতো, মাত্র ২৫০০ টাকা।
৩৮০০ কোটির যে রিয়েল এস্টেট ছিল, তা অলাভজনক সংস্থা Ratan Tata Endownment Foundation, Ratan Tata Endownment Trust-এর নামে করে গিয়েছেন রতন টাটা। জামা-কাপড় দান করে দেওয়ার কথা লিখে গিয়েছেন। Brooks Brotherm ব্র্যান্ডের শার্চ, Hermes-এর টাই পরতেন রতন টাটা। স্যুট পরতেন Polom Daks, Brioni-র। ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ উইল লিখে যান তিনি। শেয়ার, বিনিয়োগ রেখে গিয়েছেন দুই অলাভজনক সংস্থার নামেই। টাটা সন্স-এ যে শেয়ার ছিল রতন টাটার, তার ৭০ শতাংশ Ratan Tata Endownment Foundation-এর কাছে যাবে, বাকিটা যাবে Ratan Tata Endownment Trust-এর খাতে। টাটার শেয়ার হোল্ডাররা ছাড়া ওই শেয়ার হস্তান্তর সম্ভব নয়।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
