Ration Scam: ইডি-র তলবে CGO কমপ্লেক্সে এবার ধৃত TMC নেতা শঙ্কর আঢ্যর পরিবার
ED Shankar Adhyas family : কেন্দ্রীয় এজেন্সির অনুমান, সপরিবারে রেশন দুর্নীতিতে জড়িত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য।
রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: ইডি-র তলবে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হলেন রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে (Ration Scam) ধৃত তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর মা, মেয়ে ও তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় এজেন্সির (Central Agency) অনুমান, সপরিবারে রেশন দুর্নীতিতে জড়িত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য (Shankar Adhya)। এবিষয়ে শঙ্কর আঢ্যকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া তদন্তের স্বার্থে এজেন্সি ডাকতেই পারে।
কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে দাবি, শঙ্কর আঢ্য শুধু নিজে নন। মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, এমনকি শ্যালককে ডিরেক্টর বানিয়ে বিভিন্ন ফোরেক্স সংস্থার মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন তিনি। ইডি সূত্রে দাবি, যে সব মুদ্রা বিনিময় বা ফোরেক্স সংস্থার মাধ্যমে দুবাই ও বাংলাদেশে টাকা পাচার করা হয়েছে, তার মধ্যে একাধিক সংস্থা রয়েছে শঙ্কর আঢ্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, শঙ্কর আঢ্যর নিজের নামে যেমন রয়েছে এস আর আঢ্য ফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড, তেমনই তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যর নামে রয়েছে অর্পণ ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড।
শঙ্কর আঢ্যর পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যও এস আর আঢ্য ফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেডের অংশীদার। শঙ্কর আঢ্যর ছেলে শুভ আঢ্যর নামে রয়েছে শঙ্কর ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। মেয়ে ঋতুপর্ণা আঢ্যর নামে রয়েছে অর্পণ ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। ভাই মলয় আঢ্যর নামে রয়েছে আঢ্য ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। মা শিবানী আঢ্যর নামে রয়েছে আঢ্য ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। শ্যালক অমিত ঘোষের নামে রয়েছে সঙ্কর ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। ইডি সূত্রে দাবি, এভাবেই নিজের মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ভাইয়ের নামে বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থা খুলে বিদেশে টাকা পাচারের কারবার ফেঁদে বসেছিলেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সহ সভাপতি শঙ্কর আঢ্য।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। তাঁকে আদালতে পেশ করে বিস্ফোরক দাবি করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এক-দু কোটি বা পাঁচশো-হাজার নয়, রেশনে দুর্নীতির অঙ্কটা ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা! এমন কি দুর্নীতির এই অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ইডি! আর এই আবহেই, পেট্রাপোল সীমান্তে শঙ্কর আঢ্যর অফিসে পৌঁছে গিয়েছিল এবিপি আনন্দ। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে শঙ্কর আঢ্যের মানি এক্সচেঞ্জের অফিস।
পেট্রাপোল চেক পোস্ট ওয়েলফেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি অশোক ঘোষ বলেন, 'এই অফিস খোলা হয়নি,বাংলাদেশে ভোট চলছে বলে বন্ধ। ২০-৩০ বছর ধরে ব্যবসা করে। ওর ওখান থেকেই অনেক লাইসেন্স আমার বের করিয়েছে।' কিন্তু এলাকায় ঠিক কতখানি প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল শঙ্কর আঢ্যর? বনগাঁর শিমূলতলা এলাকার বাসিন্দা সিন্টু ভট্টাচার্য। পেশায় শিল্পী সিন্টুকাজ করেন বিভিন্ন মূর্তি তৈরির। শঙ্কর আঢ্যর বিরুদ্ধে রীতিমতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করছেন তিনি। যিনি আবার তৃণমূল কর্মীও।
আরও পড়ুন, সুপ্রিম কোর্টে আপাতত স্বস্তি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের
ED-র দাবি, ধান-চাল-গম কেনাবেচা নয়, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা কোন পথে, কীভাবে ঘুরিয়ে সাদা করা হবে, সেই পরিকল্পনায় শঙ্কর আঢ্যর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কলকাতার মার্কুইস স্ট্রিটে শঙ্কর আঢ্যর কারেন্সি লেনদেনের সংস্থা, আঢ্য ফোরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস। ফুল ফ্লেজ মানি চেঞ্জার হিসেবে কাজ করে এই কোম্পানি। ED-র দাবি, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা দিয়ে তৃণমূল নেতার এই কোম্পানির মাধ্যমে ঘুরিয়ে কেনা হয়েছে সোনা, বিদেশি মুদ্রা। হাওয়ালার মাধ্যমে বাইরে টাকা পাঠানো হয়েছে। ED-র দাবি, রেশন দুর্নীতি তদন্তে উঠে আসে শঙ্কর আঢ্যর নাম। তারপরই তার বিভিন্ন আস্তানায় তল্লাশি ও শেষমেষ গ্রেফতার করা হয়।