DA : ভাল নয় আর্থিক অবস্থা, বেশি ডিএ দিতে গেলে আসতে পারে আর্থিক বিপর্যয়, কার্যত মেনে নিল রাজ্য সরকার
West Bengal Government : স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চ DA মামলায় একের পর এক ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার।
কলকাতা : ডিএ মামলা (DA Case) গড়াল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অবধি। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দেওয়ার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে গেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার (West Bengal Government)। আর যে পথে হলফনামায় নিজেদের দাবি রাখতে গিয়ে রাজ্যের আর্থিক হাল যে কার্যত বেহাল, সেটা একপ্রকার মেনেই নিল রাজ্য সরকার।
'আসতে পারে আর্থিক বিপর্যয়'
রাজ্যের আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল নয়, কার্যত তা মেনে নিল রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে রাজ্য জানিয়েছে, তারা যে হারে ডিএ দেয় তার থেকে বেশি ডিএ দিতে গেলে অপ্রত্যাশিত সমস্যা তৈরি হবে। আসতে পারে আর্থিক বিপর্যয়। এর আগে রাজ্য সরকারের কর্মীদের প্রাপ্য ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সিঙ্গল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চও একই নির্দেশ বহাল রাখে। এরইমধ্যে আদালতে হলফনামা দিয়ে রাজ্য জানিয়ে দিল, তারা কতটা অপারগ। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার।
একের পর এক ধাক্কা
স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চ DA মামলায় একের পর এক ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে রাজ্য সরকার।
এবছরের ২০ মে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA মেটাতে হবে। সময়সীমা শেষের আগে, ১২ অগাস্ট ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে, হাইকোর্টে যায় রাজ্য। ৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে, রাজ্য সরকার দাবি করে, সরকারি কর্মীদের কোনও DA বকেয়া নেই! ২২ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে পুরনো রায় বহাল রাখে দেয় আদালত। এবার হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার।
দীর্ঘ আইনি লড়াই
DA’র দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আইনি লড়াই চলছে বহুদিন ধরে। ২০১৭’র ফেব্রুয়ারিতে SAT রায় দেয়, DA দয়ার দান। তা দেওয়া, বা না দেওয়া, রাজ্য সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে! সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ৩০ মার্চ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সরকারি কর্মী সংগঠন।
২০১৮ সালের ৩১ অগাস্ট, কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয়, DA সরকারি কর্মীদের অধিকার। ২০১৯’এর ২৬ জুলাই, SAT নির্দেশ দেয়, ১ বছরের মধ্যে সরকারি কর্মীদের DA মেটাতে হবে। রাজ্য সরকার তা না দেওয়ায়, সরকারি কর্মী সংগঠন ফের SAT’এর দ্বারস্থ হয়। রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশন দাখিল করলেও তা খারিজ করে SAT। তারপর রাজ্য সরকার হাইকোর্টে আবেদন জানায়। এবছরের ২০ মে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৩ মাসের মধ্যে বকেয়া DA মেটাতে হবে।
বকেয়া DA নিয়ে রাজ্য সরকার, আদালতের নির্দেশ মানেনি, এই অভিযোগে রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলাও হয়েছিল। সেই মামলায় মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের কাছে হলফনামা তলব করেছিল আদালত। সেখানেই রাজ্যের খারাপ আর্থিক হালের কথা স্বীকার করে নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন- কেষ্টকে টিকিটই বেচেননি তিনি! সিবিআই-কে বললেন লটারি বিক্রেতা, বাড়ছে রহস্য