Abhijit Gangopadhyay: ভেবেছিলাম রুল ইস্যু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকব, এবিপি আনন্দে বিস্ফোরক বিচারপতি
Ghantakhanek Sange Suman: 'আমি আমার মতো করে কাজ করতাম আর ভয়ঙ্কর কঠোর কাজ করতে হতো। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম', এবিপি আনন্দে সোজাসাপ্টা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কলকাতা: কেউ বলেন তিনি অরণ্যদেব, কেউ বলেন তিনি সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট। কেউ বলেন তিনি জনগণের বিচারপতি। কেউ বলেন তিনি আইনের এ বি সি ডি-ও জানেন না।
কিন্তু তথ্য বলছে, গত ১০ মাসে নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত ১০টি মামলায় তদন্তভার তিনি সটান তুলে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। তাঁরই নির্দেশে তিন দফায় ১৮৭ জন চাকরিপ্রার্থী দুর্গাপুজোর মুখে শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি পেতে চলেছেন। বিধাননগরে নিজের ফ্ল্যাটে বসে এবিপি আনন্দের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডা দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)।
এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে (Suman De) প্রশ্ন করেছিলেন, বিচারব্যবস্থার সমালোচনা হচ্ছে রাজনীতিবিদদের দিক থেকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দুজনই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারব্যবস্থার পক্ষপাত নিয়ে। শুনলে কী মনে হয়?
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'অত্যন্ত খারাপ চোখে দেখি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন প্রথম সমালোচনা করেছিলেন, আমি লাদাখে ছিলাম। শুনে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, যেহেতু এর সঙ্গে আমারও কিছু কাজ জড়িয়ে রয়েছে, ভেবেছিলাম একটা রুল ইস্যু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকব। আমি আমার মতো করে কাজ করতাম আর ভয়ঙ্কর কঠোর কাজ করতে হতো। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু যখন কলকাতায় এলাম, দেখলাম একটা মামলা ডিভিশন বেঞ্চে হয়ে গিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ অতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি। মনে হয়েছিল এদের অকারণ গুরুত্ব বাড়িয়ে লাভ নেই।'
যদিও কঠোর হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন মহামান্য বিচারপতি। অভিজিৎবাবু বলেছেন, 'কিন্তু এ বিষয়ে আমার ভিন্ন মত রয়েছে। আমি যদি আবার শুনি আমাকে জড়িয়ে কোনও কথা হচ্ছে, এবং তা অন্যায়, তাহলে আমি কঠোর ব্যবস্থা নেব। কঠোরতম ব্যবস্থা নেব যা এরা কল্পনাও করতে পারবে না। যারা এসব কথা বলে তারা কল্পনাও করতে পারবে না আইনের মধ্যে থেকে কত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আইন যদি কঠোর হতে শুরু করে এবং তা যদি কঠোরভাবে প্রয়োগ হয়, লোকে জানেই না আইন কতটা কঠোর হতে পারে। আমি একদিন বলেছি যে, জুডিশিয়ারি যদি হঠাৎ রেগে যায়, আপনারা কোথায় থাকবেন!'
ক্রুদ্ধ স্বরে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, 'আপনারা এইভাবে কোর্ট বয়কট করছেন, আপনারা ঠিক করে দিচ্ছেন কোন জাজ কোন মামলা নেবে, চিফ জাস্টিসসে গিয়ে ধরছেন এই জাজকে এই মামলা থেকে সরিয়ে দিতে হবে। কেন? আপনার তো সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব নয়, দায়িত্ব চিফ জাস্টিসের। আপনারা ভেবে দেখেছেন যদি সারা আদালত, জাজেরা ক্ষেপে ওঠে আপনাদের বিরুদ্ধে তাহলে কী হবে। বলেছি আমি এ কথা, সতর্ক করতে হয়েছে।'
সরাসরি দেখুন নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে
সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হওয়ার পর হতে পারে বিতর্ক হতে পারে। শুরু হতে পারে সমালোচনা। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বলছেন, 'শুধু আমি নয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে বিচারপতি রুখে দাঁড়াবেন, তিনিই প্রোজেক্টেড হবেন।' যোগ করেছেন, 'আমায় জুডিশিয়ারি থেকে বহিষ্কার করে দিলেও, আমি মনে করি, যা করেছি ঠিক করেছি। আমি জানি বেকার জীবন কী। রুপোর চামচ মুখে দিয়ে জন্মাইনি। টেরর মাঝেমাঝে অত্যন্ত ভাল ফল দেয়। অফিসারদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে যে বেনিয়ম করে পার পাওয়া যাবে না।'