Narendra Modi Meditation : ফল ঘোষণার আগেই নতুন এই সংকল্প মোদির, কন্যাকুমারীর ধ্যান সেরেই রামকৃষ্ণ মিশনের ভক্তদের বিশেষ বার্তা
'আগামী ২৫ বছরে নতুন ভারতের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। দ্রুত এগিয়ে চলো, উন্নত ভারত গড়ো', ব্লগে লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের প্রচার পর্ব শেষ করে তিনি সোজ চলে গিয়েছিলেন কন্যাকুমারী। ভারতের দক্ষিণতম রাজ্যে স্বামী বিবেকানন্দর স্মৃতি বিজড়িত শিলায় বসে ধ্যান করেছিলেন টানা ৪৫ ঘণ্টা। তাই নিয়ে সারা দেশে চর্চার অন্ত ছিল না। বিরোধীরা মোদির এই ধ্যান-কর্মসূচিকে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবেই দাবি করে। ১ জুন কন্যাকুমারীতে ধ্যান সেরে দিল্লি ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী। আকাশপথে তাঁর মধ্যে যা যা ভাবনা এসেছে, তা তিনি তুলে ধরেছেন ব্যক্তিগত ব্লগে।লিখেছেন, কীভাবে ধ্যানে মগ্ন হয়ে তাঁর মন থেকে যাবতীয় অশান্তি মুছে গিয়েছিল।
'নির্বাচনের উন্মাদনা আমার হৃদয়-মনে প্রতিধ্বনিত হওয়া স্বাভাবিক। জনসভা ও রোড শোতে দেখা অসংখ্য মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। নারী শক্তির আশীর্বাদ, বিশ্বাস, স্নেহ ...আমার চোখ ভিজে যাচ্ছিল তারপর আমি একটি 'সাধনা' (ধ্যান) শুরু করলাম। এবং তারপরে, উত্তপ্ত রাজনৈতিক বিতর্ক, আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ, কণ্ঠস্বর এবং অভিযোগ, যা যা হয়ে থাকে নির্বাচনের আবহে... সেগুলি সবই শূন্যতায় মিলিয়ে গেল। আমার মধ্যে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি এল... আমার মন বাহ্যিক জগত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।'
ধ্যান তাঁর মনে কতটা প্রশান্তি জুগিয়েছে, তা বোঝাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, 'কন্যাকুমারীর উদীয়মান সূর্য আমার চিন্তাকে নতুন উচ্চতা দিয়েছে, সমুদ্রের বিশালতা আমার ধারণাগুলিকে প্রসারিত করেছে, এবং বিস্তৃত দিগন্ত ক্রমাগত আমাকে মহাবিশ্বের গভীরে নিহিত একতাকে উপলব্ধি করিয়েছে।'
ধ্যানের জন্য হঠাৎ কন্যাকুমারী কেন? অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ব্লগে নিজেই দিলেন ব্যাখ্যা। 'কন্যাকুমারী বরাবরই আমার হৃদয়ের খুব কাছের। এখানে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল একনাথ রানাডেজির উদ্যোগে নির্মিত হয়েছিল। একনাথজির সঙ্গে আমার অনেক ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে। এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সময় কন্যাকুমারীতেও কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছিলাম'
"Every nation has a message to deliver, a mission to fulfil, a destiny to reach."স্বামীজির বাণী উল্লেখ করে বলেন, 'একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের বহু দেশ আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে ভারতের দিকে। বৈশ্বিক দৃশ্যপটে এগিয়ে যেতে আমাদের বেশ কিছু পরিবর্তন করতে হবে। সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের চিরাচরিত চিন্তাধারাও বদলাতে হবে। ভারত সংস্কারকে শুধু অর্থনৈতিক সংস্কারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে না। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কারের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি বিকশিত ভারতের স্বপ্ন সফল করতে সংস্কারগুলি করতে হবে।'
মোদির কন্যাকুমারী ধ্যানের অভিজ্ঞতা বর্ণণা ও আগামী দিনের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি স্বামী আত্মস্থানন্দ এবং স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের কথা স্মরণ করেন তিনি। তিনি বলেন, এই মহান সন্ন্যাসীরা সব সময় আধুনিক শিক্ষা, দক্ষতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। আত্মস্থানন্দ মহারাজের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রত্যেকটি জায়গা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। জরাতে থাকতে তিনি গুজরাতি বলতে শিখেছিলেন। তিনি এমনকি তাঁর সঙ্গে গুজরাতি ভাষায় কথা বলতেন। সবশেষে মোদি ফের একবার শ্রদ্ধা জানালেন রামকৃষ্ণ মিশেনকে। বললেন' আবারও, সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে, আমি এমন সাধক আত্মাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমি নিশ্চিত যে রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যুক্ত সব মানুষ তাঁদের দেখানো পথে আরও এগিয়ে যাবে। ওম শান্তি।'