East Bengal: মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আইএসএলে শততম ম্যাচে লড়াই করে ড্র, পয়েন্ট টেবিলেও ওপরে উঠল ইস্টবেঙ্গল
Indian Super League: এই ড্রয়ের ফলে তারা ১৮ ম্যাচ থেকে ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে লিগ টেবলে ১০ নম্বরে উঠে এল। মুম্বই সিটি এফসি তাদের সপ্তম ড্র করে ১৮ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানেই রয়ে গেল।

মুম্বই: মুম্বইয়ে লড়াকু ইস্টবেঙ্গল এফসি-র (East Bengal FC) মশাল ফের জ্বলে উঠলেও জয় অর্জন করতে পারল না লাল-হলুদ ব্রিগেড। গতবারের কাপ চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে শুক্রবার রাতে মাঠ ছাড়ল তারা। বিপর্যস্ত ইস্টবেঙ্গল শুক্রবার আইএসএলে তাদের শততম ম্যাচে দুর্দান্ত লড়াই করে শেষ পর্যন্ত নিজেদের গোল অক্ষত রাখলেও গোল করতে পারেনি। আইএসএলে মুম্বইয়ের ঘরের মাঠে নিজেদের গোল অক্ষত রাখার নজির বজায় রাখল তারা। এই নিয়ে মুম্বইয়ে তিনটি ম্যাচ খেলে একটিতেও কোনও গোল খায়নি লাল-হলুদ বাহিনী। দু’টি গোলশূন্য ড্র ও একটিতে ১-০ জয় রয়েছে তাদের।
এই ড্রয়ের ফলে তারা ১৮ ম্যাচ থেকে ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে লিগ টেবলে ১০ নম্বরে উঠে এল। অন্য দিকে, মুম্বই সিটি এফসি তাদের সপ্তম ড্র করে ১৮ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানেই রয়ে গেল। তবে সারা ম্যাচে ৬২.৪% বলের দখল রাখার পরেও গোল করতে পারেনি তারা।
এ দিন ম্যাচের শুরু থেকেই গতি বাড়ায় তিনটি পরিবর্তন করে মাঠে নামা ইস্টবেঙ্গল এফসি, যাতে দ্রুত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে তারা। ১৪ মিনিটের মাথায় সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে মুম্বই সিটি এফসি-র রক্ষণভাগে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে তাদের আক্রমণ বিভাগ। দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস মাঝমাঠ থেকে খেলোয়াড়দের আকৃষ্ট করেন এবং বাঁ প্রান্তে থাকা নাওরেম মহেশ সিংহ-এর সামনে খোলা জায়গা দেখতে পান এবং তাঁর উদ্দেশে একটি পাস বাড়ান। মহেশ দ্রুত তাঁর পায়ের ক্যারিশমা দেখিয়ে নীচু ক্রস বাড়ান নন্দকুমার শেকরের উদ্দেশ্যে। নন্দকুমার প্রথম টাচটি দারুণভাবে নিলেও তাঁর শটকে গোলরক্ষক ফুরবা লাচেনপা ডান দিকের নিচু কোণ থেকে রুখে দেন।
৪৪তম মিনিটে দিয়ামান্তাকস আবারও সবার নজরে আসেন, কিন্তু গোলবারের একদম সামনে থেকেও লক্ষ্যভ্রষ্ট করেন। ডান প্রান্তে দুর্দান্ত আক্রমণে উঠে ডেভিড লালহ্লানসাঙ্গা বল বাড়ান পিভি বিষ্ণুকে, যিনি দ্রুত একটি ক্রস বাড়ান দিয়ামান্তাকসের উদ্দেশে। তবে যথাযথভাবে পজিশন নিতে পারেননি গ্রিক স্ট্রাইকার এবং তাঁর হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাঁ দিকে চলে যায়।
এই ঘটনার মাত্র দু’মিনিট পরে, মুম্বই সিটি এফসি যখন নিজেদের ছন্দ ফিরে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে, তখন জন টোরালের পা থেকে বল ছিনিয়ে নেন দিয়ামান্তাকস এবং দুর্দান্ত এক শট নেন, যা বাঁ দিকের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এ দিনের ম্যাচে এটি ছিল ইস্টবেঙ্গলের সেরা সুযোগগুলির একটি, কিন্তু এটি গোলে পরিণত করতে পারেননি গ্রিক তারকা।
৪৯তম মিনিটে মুম্বই সিটি এফসি-র বিক্রম প্রতাপ সিংহ গোলের খুব কাছ থেকে দারুণ একটি সুযোগ মিস করেন। অ্যাটাকিং থার্ডে তারা ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে ছাপিয়ে যায় এবং বিপিন সিংহ বাঁ দিক থেকে একটি ক্রস বাড়ান বিক্রমের উদ্দেশে। তবে তিনি ব্যালান্স হারিয়ে ফেলায় মাত্র কয়েক গজ দূর থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন।
গোলের কাছ থেকে শট নিতে গিয়েও ব্যর্থ হয় ইস্টবেঙ্গল এফসি-ও । মহেশ বাঁ দিক থেকে দুর্দান্ত গতিতে ঢুকে পড়েন, কিন্তু ১৮ গজের বক্সে প্রবেশ না করে কোণাকুনি বল বাড়ান দিয়ামান্তাকসের কাছে। তিনি দুর্দান্ত হেড নেন, কিন্তু আবারও বল বাঁ দিকের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো পোস্টে আঘাত করে তাঁর শট।
৬৩ মিনিটের মাথায় থায়ের ক্রোমার পরিবর্তে মাঠে নামেন জর্জ অর্টিজ এবং তিনি ৮১তম মিনিটের মধ্যে দুটি বড় সুযোগ তৈরি করেন। প্রথমে, ইয়োল ভ্যান নিফের পাস পেয়ে তিনি গোল লক্ষ্য করে শট নেন, যা প্রভসুখন সিংহ গিল আটকে দেন। এর কিছুক্ষণ পর লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে বলের দখল নিয়ে অর্টিজকে পাস দেন। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় শটও রুখে দেন গিল, ফলে ইস্টবেঙ্গল এফসি এই ম্যাচ থেকে একটি মূল্যবান পয়েন্ট পেয়ে যায়।
শেষে ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের উল্লেখ করতেই হবে। তিনি ৪৫টি পাসের মধ্যে ২৬টি সফলভাবে দেন ও পাশাপাশি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ এবং একটি ক্লিয়ারেন্স করেন। শেষ দিকে যখন গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল মুম্বই সিটি এফসি, তখন গিলের সেভগুলি খুব মূল্যবান হয়ে ওঠে। দলের খেলায় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাঁর সেভগুলি।
ইস্টবেঙ্গল এফসি দল (৪-২-৩-১): প্রভসুখন সিংহ গিল (গোল), নন্দকুমার শেকর (প্রভাত লাকরা-৮০), লালচুঙনুঙ্গা, হেক্টর ইউস্তে, নিশু কুমার, শৌভিক চক্রবর্তী, নাওরেম মহেশ, পিভি বিষ্ণু (সায়ন ব্যানার্জি-৮৫), ডেভিড লালনসাঙ্গা (মার্ক জোথানপুইয়া-৬৯), রিচার্ড সেলিস, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস।
পরিসংখ্যানে ম্যাচ
বল পজেশন: মুম্বই সিটি এফসি ৬২.৪% - ইস্টবেঙ্গল এফসি ৩৭.৬% , সফল পাসের হার: ৮৪%-৭৪%, গোলে শট: ৪-২, ফাউল: ১১-৮, ইন্টারসেপশন: ১০-৭, ক্রস: ২০-২০, কর্নার: ৩-৭, হলুদ কার্ড: ২-৪।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়: নাওরেম মহেশ (ইস্টবেঙ্গল এফসি) (সৌ: আইএসএল মিডিয়া)
আরও পড়ুন: ধোনিকে না দেখে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের সেরা! ঋদ্ধিমানের অজানা গল্প শোনালেন স্ত্রী রোমি
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
