(Source: Poll of Polls)
Ostader Maar: আউটের আবেদন করতে গিয়েও অসহ্য যন্ত্রণা! অ্যান্টিগায় কুম্বলেকে কুর্নিশ করেছিলেন ভিভ
মার্ভ ডিলনের (Mervyn Dillon) বাউন্সার চোয়ালে আছড়ে পড়ার পরই রক্ত ঝরতে শুরু করেছিল মুখ থেকে। মাঠেই দৌড়ে আসতে হয়েছিল ফিজিওকে। তার পরেও টলানো যায়নি অনিল কুম্বলেকে (Anil Kumble)।
কলকাতা: মার্ভ ডিলনের (Mervyn Dillon) বাউন্সার চোয়ালে আছড়ে পড়ার পরই রক্ত ঝরতে শুরু করেছিল মুখ থেকে। মাঠেই দৌড়ে আসতে হয়েছিল ফিজিওকে। তার পরেও টলানো যায়নি অনিল কুম্বলেকে (Anil Kumble)। অজয় রাতরার (Ajay Ratra) আগে যাঁকে ব্যাট করতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)।
মাঠ থেকে হাসপাতালে
সেদিন মাঠ থেকেই হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল কুম্বলেকে। চোয়ালে এক্স রে করা হয়েছিল। যদিও রিপোর্টে কিছুই ধরা পড়েনি। অগত্যা তাঁকে যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়েছিল শুধু।
কিন্তু পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কুম্বলে দৌড়েছিলেন ফিজিও অ্যান্ড্রু লিপাসের কাছে। চোয়ালে যন্ত্রণা বেড়েছে। উদ্বিগ্ন ফিজিও কুম্বলেকে নিয়ে ফের গেলেন এক্স রে করাতে। দুশ্চিন্তা আরও বাড়ল। রিপোর্টে দেখা গেল, চোয়ালের হাড়ে চিড় ধরেছে। এমনভাবেই ভেঙেছে যে, চোয়াল কার্যত ঝুলছে। ভারতীয় শিবিরে হাহুতাশ। ২০০২ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। সিরিজ তখনও পর্যন্ত ১-১। অ্যান্টিগায় হচ্ছে শেষ টেস্ট ম্যাচ। যে ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করে রয়েছে সিরিজের ভাগ্য। আর এমন অবস্থায় কি না দলের সেরা বোলারের চোয়াল ভেঙেছে!
কৌশল বদল
অগত্যা কৌশল বদল টিম ইন্ডিয়ার। ঠিক হল, একজন বোলার কম থাকায় কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়া হবে না। যতক্ষণ সম্ভব ব্যাট করা হবে। সেই সঙ্গে ঠিক হল, কুম্বলেকে দেশে ফেরানো হবে। যাতে দ্রুত তাঁর চোয়ালে অস্ত্রোপচার করা যায়।
৯ উইকেটে ৫১৩ রান করে ইনিংস ডিক্লেয়ার দেয় ভারত। পিচে তখন স্পিনাররা বেশ সাহায্য পেতে শুরু করেছেন। ঠিক হল, ভারতীয় স্পিন বোলিংয়ে কুম্বলের অভাব ঢাকতে বল করবেন সচিন তেন্ডুলকর।
অদম্য লড়াই
কিন্তু কুম্বলে! তিনি কী করে মাঠের বাইরে বসে থাকেন! দল সিরিজ জয়ের গন্ধ পাচ্ছে, আর বরাবরের লড়াকু তিনি কি না সেই দ্বৈরথের আঁচ থেকে দূরে সরে থাকবেন?
কুম্বলে ছুটলেন লিপাসের কাছে। সঙ্গে অনুরোধ, চোয়ালকে চেপে বেঁধে দাও। যেন ম্যাচে বল করতে পারি। লিপাস তাই করলেন। মাথার ওপর থেকে ব্যান্ডেজ ঘুরিয়ে শক্ত করে বেঁধে গিলেন ভেঙে যাওয়া চোয়াল। দেওয়া হল ব্যথা কমানোর ওষুধ। সেই সঙ্গে সতর্কতা, কোনওমতেই উইকেটের আবেদন করা যাবে না। চিৎকার করলেই বিপত্তি হতে পারে। অসহ্য হয়ে যেতে পারে যন্ত্রণা।
মুগ্ধ রিচার্ডস
কিন্তু কুম্বলে শুনলে তো! তিনি মাঠে নিজেকে নিংড়ে দিলেন। একের পর এক আবেদনও করলেন। শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা ব্যাটার ব্রায়ান লারার উইকেটও তুলে নিলেন। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডসও। ভিভ বলেছিলেন, 'আমি এরকম সাহসী দৃশ্য ক্রিকেট মাঠে কোনওদিন দেখিনি।'
ম্যাচ ড্র হয়েছিল। কিন্তু ভাঙা চোয়াল নিয়ে ১৪ ওভার বল করে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অমর অক্ষয় ছবি তৈরি করেছিলেন কুম্বলে। সৌরভ পরে বলেছিলেন, 'ও একজন চ্যাম্পিয়ন আর আমার চোখে আজীবন চ্যাম্পিয়নই থাকবে।'