Anna Hazare: 'অনেক বলেছিলাম, শোনেননি, ধন-দৌলতে ভেসে গিয়েছেন', কেজরিওয়ালের পরাজয়ে মুখ খুললেন ‘গুরু’ আন্না
Delhi Election Results: শনিবার সকালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত যা হিসেব সামনে এসেছে, তাতে ২৭ বছর পর রাজধানীতে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বিজেপি।

নয়াদিল্লি: দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটানা অনশন, আন্দোলন চলছিল। দেড় দশক আগে সেই মঞ্চ থেকেই জন্ম নেয় আম আদমি পার্টি। আর সেই দলের প্রধান হিসেবে রাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। বাকিটা ইতিহাস বললেও কম বলা হয়। কিন্তু ইতিহাস শাসকের উত্থান যেমন মনে রাখে, পতনও মনে রাখে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হল না। যাঁর অনশন মঞ্চ থেকে উত্থান কেজরিওয়ালের, সেই আন্না হাজারে এবার দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে মুখ খুললেন। প্রতিক্রিয়া জানালেন, কেজরিওয়ালের 'পতন' নিয়ে।
শনিবার সকালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত যা হিসেব সামনে এসেছে, তাতে ২৭ বছর পর রাজধানীতে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বিজেপি। কেজরিওয়ালের হ্যাট্রিক করার স্বপ্নই শুধুমাত্র অধরা রইল না, নয়াদিল্লি আসনে তিনি পিছিয়েই রয়েছেন। সেই নিয়ে কাটাছেঁড়ার মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে 'একদা শিষ্য'কে নিয়ে মুখ খুললেন আন্না।
দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে আন্নার বক্তব্য, "আমি প্রথম থেকে বলে আসছি, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে প্রার্থীর চরিত্র, ভাবনা শুদ্ধ হতে হবে জীবন হতে হবে নিষ্কলঙ্ক। তাঁর মধ্যে ত্যাগ থাকতে হবে, অপমান হজম করার শক্তি থাকতে হবে। তবেই ভোটারদের বিশ্বাস অটুট থাকে যে ইনি আমাদের জন্য কাজ করবেন। বার বার একথা বলেছি। কিন্তু ওঁর মাথায় ঢোকেনি। মদের দোকান এল। টাকা-পয়সা, ধন-দৌলতে ভেসে গিয়েছেন। মদের জন্য বদনাম হয়ে গেলেন। আর মানুষও সুযোগ পেলেন যে, যিনি ভাবমূর্তির কথা বলেন, তিনিই মদের দোকান বাড়ান!"
#WATCH | On #DelhiElectionResults, social activist Anna Hazare says, "I have been saying it for a long that while contesting the election - the candidate must have a character, good ideas and have no dent on image. But, they (AAP) didn't get that. They got tangled in liquor and… pic.twitter.com/n9StHlOlK9
— ANI (@ANI) February 8, 2025
আবগারি দুর্নীতি মামলায় দলের নেতাদের পাশাপাশি কেজরিওয়াল খোদ গ্রেফতার হন। দিল্লির তিহাড় জেলে দীর্ঘ সময় বন্দি থাকতে হয় তাঁকে। অভিযোগ ওঠে, মোটা টাকার বিনিময়ে কিছু ব্যবসায়ীকে মদের দোকানের লাইসেন্স পাইয়ে দিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। সেই প্রসঙ্গেই কেজরিওয়ালকে নিশানা করেছেন আন্না। তাঁর কথায়, "প্রথম থেকে বলেছি, চরিত্র, ভাবনা শুদ্ধ রাখো। কিন্তু মাথায় ঢোকেনি। কম ভোট পেয়ে আজ নির্বাচনে হেরে গেলেন।"
দিল্লিতে কেজরিওয়ালের পরাজয়ের জন্য দুর্নীতির অভিযোগকেই দায়ী করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আবগারি দুর্নীতি ছাড়াও, জনগণের টাকায় ৫২ কোটির 'শিশমহল' বানানোর অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাই কেজরিওয়ালের উত্থানের সঙ্গে যেমন অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আন্না, কেজরিওয়ালের পতনেও তাঁর মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দুর্নীতির অভিযোগ যদিও প্রমাণিত হয়নি, কিন্তু কেজরিওয়াল নিজেকে নির্দোষও প্রমাণ করতে পারেননি বলে মত আন্নার।
আন্নার কথায়, "রাজনীতিতে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপের পালা চলে। কিন্তু অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করে দেখানোও জরুরি। প্রমাণ করতে হয় যে আমি নির্দোষ, মিথ্যা অভিযোগের শিকার। প্রমাণ করতে পারলে, কেউ কিছু করতে পারবে না। কারণ যাহা সত্য, তাহা সত্য, যাহা মিথ্যা, তাহা মিথ্যাই।"
তাঁর হাত ধরে উত্থান ঘটলেও, কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় নিতে নারাজ আন্না। তিনি বলেন, "প্রথম বার যখন দিল্লিতে বৈঠক হয়, দলে যোগ দেওয়ার জন্য যেতে বলা হয়, আমি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। তখনও দূরে ছিলাম, আজও দল থেকে দূরে আছি। নতুন দলকে মানুষ বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু মদের দোকান, মদের বিক্রি বাড়ানো, টাকার আমদানি, এসবে ভাবমূর্তি নষ্ট হল। রাজনীতি নিষ্কাম কর্ম। ফলের আশা না করে যিনি কাজ করেন, মানুষের সেবা করেন, তা ঈশ্বরের সেবার সমান। উনি সেটা বুঝতে পারেননি। ফলে ভুল রাস্তায় হেঁটেছেন, যার জন্য় পতন হয়েছে ওঁর।"
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
