Mitrabha Guha Exclusive: লকডাউনে ৮-৯ ঘণ্টা কাটত দাবা খেলে, সার্বিয়ায় নতুন কৃতিত্ব মিত্রাভর
ABP LIVE EXCLUSIVE: বিশ্বনাথন আনন্দ (Viswanathan Anand) নন, তাঁর প্রিয় দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেন (Magnus Carlsen)। সেই কার্লসেন, যিনি ছক ভাঙায় বিশ্বাসী।
কলকাতা: বিশ্বনাথন আনন্দ (Viswanathan Anand) নন, তাঁর প্রিয় দাবাড়ু ম্যাগনাস কার্লসেন (Magnus Carlsen)। সেই কার্লসেন, যিনি ছক ভাঙায় বিশ্বাসী।
বাংলার মিত্রাভ গুহও (Mitrabha Guha) তাই যেন চিন্তাভাবনায় একটু ব্যতিক্রমী। করোনা অতিমারিতে যখন গোটা বিশ্ব ঘরবন্দি, আতঙ্কে দিশাহারা, মিত্রাভ তখন ধীর-স্থির। লকডাউন বরং তাঁকে দাবার জগতে আরও সড়গড় হতে সাহায্য করেছিল। কীভাবে?
মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যায় সার্বিয়া থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে মিত্রাভ বলছিলেন, 'লকডাউনের সময় রোজ ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা করে অনলাইনে দাবা খেলতাম। অনেক টুর্নামেন্ট খেলেছি অনলাইনেই। তা প্রস্তুতিতে কখনও কোনও খামতি হয়নি। বরং আরও ভালভাবে নিজেকে ঘষামাজা করার সময় পেয়েছি।'
মঙ্গলবার যেন সেই সাধনার ফল পেলেন মিত্রাভ। সার্বিয়ার নোভি সাডে জিএম থার্ড স্যাটারডে মিক্স ২২০ টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় তথা চূড়ান্ত জিএম নর্ম পেলেন বাংলার দাবাড়ু। সেই সঙ্গে বাংলার নবম দাবাড়ু হিসাবে গ্র্যান্ডমাস্টার হলেন মিত্রাভ।
যদিও আবেগে ভেসে যাচ্ছেন না ২০ বছর বয়সী দাবাড়ু। বললেন, 'খুবই আনন্দ হচ্ছে। অনলাইনে প্র্যাক্টিস চলত। তাই খেলার মধ্যেই ছিলাম।' মিত্রাভ কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে শেখ রাসেল জিএম টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় জিএম নর্ম পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের টুর্নামেন্টকে যিনি সার্বিয়ার প্রতিযোগিতার চেয়েও বেশি কঠিন বলে মনে করছেন। মিত্রাভর কথায়, 'বাংলাদেশেরটা বেশি কঠিন টুর্নামেন্ট ছিল। কারণ নটা ম্যাচের মধ্যে আটটা ম্যাচ আমাকে খেলতে হয়েছিল গ্র্যান্ডমাস্টারদের সঙ্গে। এখানে সেই জায়গায় চারটে গ্র্য়ান্ডমাস্টারের বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছে আমায়।'
মিত্রাভ সাউথ পয়েন্টের ছাত্র। এখন বিবিএ থার্ড ইয়ারে পড়াশোনা করছেন। করোনাকাল অনুশীলনের বাড়তি সময় দিলেও অবশ্য তাঁকে ভিসা পাওয়া নিয়ে সমস্যায় ফেলেছিল। আন্তর্জাতিক যাতায়াত নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছিল বলে স্পেনের ভিসা পাননি। তাই বার্সেলোনার একটি টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়া হয়নি। যদিও বাংলাদেশ ও সার্বিয়ার সাফল্য দিয়ে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিয়েছেন স্বল্পভাষী দাবাড়ু।
পরবর্তী লক্ষ্য কী? মিত্রাভ বলছেন, '২৬৫০ রেটিং পাওয়া।' গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার সাফল্য উৎসর্গ করছেন বাবা রাজ গুহ ও মা সুজাতাকে। মিত্রাভ বলছেন, 'বাবা-মা আমার জন্য অনেক লড়াই করেছেন। বাবাই আমাকে দাবা খেলা শিখিয়েছিলেন। তখন আমার বয়স ৪ বছর। উনি নিজেও দাবা খেলতে ভালবাসতেন। স্কুল পর্যায়ে খেলেছেন। আর আমি যখন যেখানে খেলতে গিয়েছি, মা গিয়েছে, আমাকে আগলে রেখেছে।'
২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দিব্যেন্দু বড়ুয়ার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারপর ২০১৬ সাল পর্যন্ত সোহম দাসের ছাত্র ছিলেন। তারপর অতনু লাহিড়ীর কাছে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নেন। মিত্রাভ এখন অবশ্য নিজেই খেলেন। অনলাইনে প্রস্তুতি সারেন।
দাবার পাশাপাশি মিত্রাভর পছন্দ সিন্থেসাইজার আর ভিডিও গেমস। আপাতত ২৬৫০ এলো রেটিংকে পাখির চোখ করে চৌষট্টি খোপের দুনিয়ার নিজেকে মগ্ন রাখতে চান বঙ্গ দাবাড়ু।