Daily Wage Earners Suicide: গালভরা প্রতিশ্রুতিই সার! তিন বছরে দলে দলে আত্মঘাতী দিনমজুর, কৃষক, পড়ুয়া, গৃহবধূও বাদ নেই
NCRB Data: সোমবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব।
‘পাহাড়-কাটা সে পথের দু’পাশে পড়িয়া যাদের হাড়,
তোমারে সেবিতে হইল যাহারা মজুর, মুটে ও কুলি,
তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি;
তারাই মানুষ, তারাই দেবতা, গাহি তাহাদেরই গান’
নয়াদিল্লি: ‘সর্বহারা’ শ্রেণির জ্বালা-যন্ত্রণা দেখিছিলেন সচক্ষে। তাই গর্জে উঠেছিল বিদ্রোহী কবির কলম। কিন্তু সেকালের সঙ্গে একালের যে তেমন ফারাক নেই, তা বোঝা গেল আরও একবার। অতিমারিতে দলে দলে রাস্তায় পা পড়তে দেখে পরিস্থিতির আঁচ পাওয়া গিয়েছিল কিছুটা। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তা সামনে এল সোমবার। সরকার জানাল, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ভারতে আত্মঘাতী হওয়া দিনমজুরের সংখ্যা ১.১২ (Daily Wage Earners Suicide)।
বাস্তব পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, সামনে এল সোমবার
সোমবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট (NCRB Data) তুলে ধরে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। মন্ত্রী জানান, অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত মানুষজনকে সামাজিক নিরাপত্তা দিতে দায়বদ্ধ সরকার। তার মধ্যে পড়েন দিনমজুরাও। তাঁদের কল্যাণে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কেন্দ্র, জীবন বিমা, অঙ্গহানি, স্বাস্থ্য এবং মাতৃত্বকালীন সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে তার মধ্যে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমান যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার সুবিধা রয়েছে দিনমজুরদের জন্য। তার আওতায় ১৮ থেকে ৫০ বয়সিরা পড়েন। পোস্ট অফিসে অ্যাকাউন্ট থাকলেই হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা মিলবে, সে যে কারণেই মৃত্যু হোক না কেন। বার্ষিক ৪৩৬ টাকার প্রিমিয়াম দিলেই হল, যা পোস্ট অফিস অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হবে। এই প্রকল্পে ২০২২ সালে ৩১ জনুয়ারি পর্যন্ত ১৪ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষের নাম নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
1.12 lakh daily wage earners committed suicide in 2019-21: Govt to Lok Sabha
— Press Trust of India (@PTI_News) February 13, 2023
কিন্তু মন্ত্রীর মুখে সরকারি প্রকল্পের কথা শোনা গেলেও, মৃত্য়ুর যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির ফারাক রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার সময় লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে রাস্তায় নেমে আসতে দেখা গিয়েছিল। সন্তান, ব্যাগপত্র বয়ে কয়েকশো মাইল হেঁটেই পাড়ি দিতে হয় তাঁদের। সেই যাত্রাপথে বেঘোরে মৃত্য়ুও হয় অনেকের। যদিও সরকারের কাছে মৃত্যুর কোনও রেকর্ড নেই বলে পরে জানা যায় সংসদে।
করোনার সময় লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে রাস্তায় নেমে আসেন
তাই দিনমজুরদের মৃত্যুর এই সরকারি পরিসংখ্যানে বেড়েছে উদ্বেগ। শুধু দিনমজুরই নয়, বিগত ৩ বছরে দেশএ ৬৬ হাজার ৯১২ গৃহবধূ, ৫৩ হাজার ৬৬১ স্বনির্ভর, ৪৩ হাজার ৪২০ বেতনভোগী এবং ৪৩ হাজার ৩৮৫ কর্মহীন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলেও এ দিন জানায় কেন্দ্র। গত তিন বছরে আত্মঘাতী হয়েছেন ৩৫ হাজাপ ৯৫০ পড়ুয়া। কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত ৪৩ হাজার ৪২০ জন মানুষ আত্মঘাতী হয়েছেন।