Azad Hind Formation Anniversary: ১৯৪৩-এ আজকের দিনেই প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজাদ হিন্দ সরকারের-আকর্ষণীয় কিছু তথ্য
১৯৪৩-এর ২১ অক্টোবর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর নেতাজীর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়
কলকাতা: প্রতি বছর ২১ অক্টোবর সারা দেশে জুড়ে আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করা হয়। আজকের দিনেই ভারতের প্রথম স্বাধীন অস্থায়ী সরকার আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৪২-এ আজাদ হিন্দ ফৌজ (আইএনএ) গঠিত হয়েছিল। পরে এই বাহিনীর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। ১৯৪৩-এর ২১ অক্টোবর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর নেতাজীর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি দেয় জাপান, ক্রোয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, ইতালি ও বার্মার মতো আরও কয়েকটি দেশ।
ব্রিটিশ অধীনতা থেকে ভারতকে মুক্ত করতে আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠিত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে।
১৮৯৭-এর ২৩ জানুয়ারি কটকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। স্বল্প কিছু সময়ের জন্য তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং উচ্চতর শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন। অত্যন্ত মেধাবি ছাত্র হিসেবে পরিচিত সুভাষ চন্দ্র বসু সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ করা একেবারেই পছন্দ ছিল না স্বাধীনচেতা সুভাষ চন্দ্র বসুর। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। কালক্রমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।
ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ না করে সুভাষ চন্দ্র বসু স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন এবং কংগ্রেসের সদস্য হন। মহাত্মা গাঁধী ও জওহরলাল নেহরুদের মতো ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি। কিন্তু গাঁধীজীর সঙ্গে মতাদর্শগত পার্থক্য ছিল তাঁর।
কংগ্রেসের চরমপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। ১৯৩৮-এ জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নিযুক্ত হন তিনি। কিন্তু মহাত্মা গাঁধী ও দলের হাই কমান্ডের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে তিনি সভাপতি পদে ইস্তফা দেন। তিনি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে চেয়েছিলেন।
ব্রিটিশ ভারতীয় বাহিনীর যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে সিঙ্গাপুরে ১৯৪২-এ প্রথম আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠিত হয়। পরে তা ভেঙে যায়। সুভাষ চন্দ্র বসু দক্ষিণ এশিয়ার বসবাসকারী ভারতীয়দের সাহায্যে আবার আইএনএ গঠন করেন এবং এই বাহিনীর নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন।
১৯৪৪-এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের কোহিমা ও ইম্ফলের কাছে ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিল। আজাদ হিন্দ সরকার জাপানের কাছ থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অধিকারও অর্জন করেছিল। এই সরকারের ছিল নিজস্ব মুদ্রা,বিচার ব্যবস্থা ও দণ্ডবিধি।
আজাদ হিন্দ বাহিনীর গঠন হয়েছিল জাপানে। এই বাহিনীর প্রতিষ্ঠা ভারতের বিপ্লবী নেতা রাসবিহানী বসু টোকিওতে করেছিলেন। আজাদ হিন্দ ফৌজে সাড়ে আট হাজার সেনা ছিলেন। এতে মহিলাদের একটি ইউনিটও ছিল।
১৯৪৩-এ ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সর্বোচ্চ সেনাপতি হিসেবে স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী সরকার গঠন করেন সুভাষ চন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
আজাদ হিন্দ সরকারের ছিল নিজস্ব ব্যাঙ্কও। এর নাম ছিল আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক। এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৪৩-এ। এই ব্যাঙ্কের ১০ টাকার কয়েন থেকে শুরু করে এক লক্ষ টাকার নোটও ছিল। এক লক্ষ টাকার নোটে ছিল সুভাষ চন্দ্র বসুর ছবি। এই সরকারের ছিল নিজস্ব ডাক টিকিট ও তিরঙ্গা পতাকা।