AstraZeneca Vaccine Side Effect: আশঙ্কায় সিলমোহর, করোনা-টিকায় বিরল রোগ, ভারতীয়দের ঝুঁকি কতটা
Thrombocytopenia Syndrome: AztraZeneca এবং অক্সফোর্ট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মিলে কোভিড প্রতিরোধী টিকা তৈরি করেছিলেন।
নয়াদিল্লি: আশঙ্কা ছিল গোড়া থেকে, এবার তাতে সিলমোহর পড়ল। কোভিড-১৯ টিকা প্রস্তুতকারী ব্রিটেনের সংস্থা AstraZeneca জানাল, তাদের তৈরি টিকা নিলে একটি বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম Thrombosis with Thrombocytopenia Syndrome (TTS). তাদের তৈরি কোভিড টিকা নিয়ে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতেই অভিযোগ কার্যত মেনে নিল AstraZeneca. (AstraZeneca Rare Side Effect)
AztraZeneca এবং অক্সফোর্ট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মিলে কোভিড প্রতিরোধী টিকা তৈরি করেছিলেন। ভারতের Serum Institute of India সেই টিকা তৈরি করে। করোনা কালে ভারতের বহু মানুষ 'Covishield' নামের ওই টিকা গ্রহণ করেন। সেই নিয়ে মামলা-মকদ্দমা চলাকালীন সম্প্রতি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা মেনে নেয় AstraZeneca. (Thrombocytopenia Syndrome)
AstraZeneca যে Thrombocytopenia Syndrome-এর উল্লেখ করেছে, তা একটি বিরল রোগ। এর আওতায় শরীরের অস্থানে (সচরাচর যেখানে রক্ত জমাট বাঁধে না) রক্ত জমাট বেঁধে যায়। রক্তে প্লেটলেট যায় অস্বাভাবিক হারে। এই প্লেটলেট আসলে কিছু ক্ষুদ্র কোষ, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য় করে। তাই প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যাওয়া মোটেই শুভ লক্ষণ নয়।
এখনও পর্যন্ত এমন একাধিক রিপোর্ট সামনে এসেছে, যাতে Adenoviral Vector COVID-19 টিকা, Vaxzevria, Covishield (AstraZeneca), Johnson & Johnson/Janssen Covid-এর মতো টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উল্লেখ মেলে। টিকা নেওয়ার পর শরীর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়, রক্ত জমাট বাঁধার নেপথ্যে যে প্রোটিন কাজ করে, তার বিরুদ্ধএ অ্যান্টিবডি গড়ে তোলে, তা থেকেই রোগীরা কাবু হয়ে পড়েন বলে গবেষণায় উঠে আসে।
AstraZeneca-র তৈরি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে যে Thrombocytopenia Syndrome রোগের কথা উঠে এসেছে, তাকে আবার দু'টি পর্যায়ে বাগ করেছেন বিজ্ঞানীরা, Tier 1. Tier 2.
Tier 1
- এক্ষেত্রে মস্তিষ্ক, পেটে এমনকি পা এবং ফুসফুসেও রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
- প্রতি মাইক্রোলিটারে প্লেটলেট কমে ১ লক্ষ ৫০ হাজারের নীচে চলে আসে।
- Positive Anti-PF4 ELISA পরীক্ষা করে এই রোগ নির্ধারণ সম্ভব, তবে সবসময় প্রয়োজন পড়ে না।
- Tier 1-ই সবচেয়ে গুরুতর এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
- অল্পবয়সিদের প্রকোপিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
Tier 2
- পায়ে, ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধে।
- প্রতি মাইক্রোলিটারে প্লেটলেট কমে ১ লক্ষ ৫০ হাজারের নীচে নেমে যায়।
- রোগ নির্ধারণে অবশ্যই Positive Anti-PF4 ELISA পরীক্ষার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: কোভিশিল্ডে শরীরে বিরল রোগ-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অ্যাস্ট্রাজেনেকার 'দায় স্বীকারে' বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য
Thrombocytopenia Syndrome-এর ক্ষেত্রে কিছু উপসর্গও চিহ্নিত করা গিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে, মাথার যন্ত্রণা, পেটের যন্ত্রণা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, চিন্তা-ভাবনা গুলিয়ে যাওয়া, মস্তিষ্কে খাটানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার অনুভূতি। টিকা নেওয়ার পর এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যানের নিরিখে, মোট ২০০ কোটির মধ্যে ভারতে করোনা কালে মোট ১৬০ কোটি Covishield টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে রোগীদের শরীরে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এই মুহূর্তে AstraZeneca-র বিরুদ্ধে ৫১টিরও বেশি মামলা রয়েছে। টিকা নেওয়ার পর শরীরে রোগ বাসা বাঁধা থেকে, মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে। AstraZeneca পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা মেনে নেওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে ভারতেও। তবে চিকিৎসকদের মতে, ভারতে দু'বছর আগে টিকাপ্রদান হয়েছিল। সাধারণত টিকা নেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাই এক্ষেত্রে ভারতীয়দের ভীত হওয়ার তেমন কারণ নেই।
এ নিয়ে কেন্দ্রের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও পর্যন্ত। তবে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। AstraZeneca-র তৈরি Covishield নিয়েছিলেন কোটি কোটি ভারতীয়। তাই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের বিবৃতি দাবি করেছেন তিনি।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )