Bengal Pro T20: মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস! আক্ষেপ নেই ওয়ার্নার-ভক্তের, মুখে গম্ভীর-দর্শনের স্মৃতি
Eden Gardens: ৫৭ বলে অপরাজিত ৯৯ রান। যে ইনিংসকে অবলম্বন করে বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগে (Bengal Pro T20) হারবার ডায়মন্ডসকে ৩১ রানে হারাল হাওড়া ওয়ারিয়র্স।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: একটা ইনিংসেই যেন এক রাশ প্রতিশ্রুতি।
৫৭ বলে অপরাজিত ৯৯ রান। যে ইনিংসকে অবলম্বন করে বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগে (Bengal Pro T20) হারবার ডায়মন্ডসকে ৩১ রানে হারাল হাওড়া ওয়ারিয়র্স। যে টুর্নামেন্টে রান পেতে ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha), মনোজ তিওয়ারির (সোমবারও ২ রান করে আউট হন মনোজ) মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ব্যাটারও সমস্যায় পড়ছে, প্রশ্ন উঠছে ইডেনের (Eden Gardens) বাইশ গজ নিয়ে, সেখানেই ব্যাট হাতে যেন হাজার ওয়াটের আলো হয়ে জ্বললেন শেখ আসিফ হুসেন। হাওড়ার ছেলের ব্যাটে টুর্নামেন্টে প্রথমবার বোলার শাসনের ছবি দেখল ক্রিকেটের নন্দনকানন। চলতি টুর্নামেন্টে এটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর।
মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ায় আক্ষেপ নেই? বছর ছাব্বিশের ওপেনার এবিপি আনন্দকে বলছিলেন, 'সত্যিই নেই। কারণ, দল জিতেছে। ভাল খেললাম। অপরাজিত ছিলাম। সেটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোনও আক্ষেপ নেই। খুব খুশি নিজের পারফরম্যান্সে।'
৮ চার, ৫ ছক্কায় সাজানো ইনিংস। স্ট্রাইক রেট? একেবারে টি-২০ সুলভ। ১৭৩.৬৮। বেঙ্গল প্রো টি-২০-তে ইডেনের পিচে প্রায় সব ম্যাচেই ব্যাটারদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সেখানে এই আগ্রাসী ব্যাটিং কোন মন্ত্রে? আসিফ বললেন, 'শুরুর দিকে আমিও সমস্যায় ছিলাম। তবে ঠিক করেছিলাম উইকেট দেব না। পাওয়ার প্লে-তে যেভাবে রান হওয়া উচিত ছিল, হয়নি। তবে উইকেটে থাকার সুবিধা পেয়েছি। পরের দিকে বড় শট খেলতে পেরেছি। আমার আর রুকুদার (অনুষ্টুপ মজুমদার) পার্টনারশিপ বড় স্কোর তুলতে সাহায্য করেছিল।' প্রথমে ব্যাট করে হাওড়া ওয়ারিয়র্স তোলে ১৭৯/৪। জবাবে ১৪৮/৮ স্কোরে আটকে যায় হারবার ডায়মন্ডস।
স্থানীয় ক্রিকেটে গত মরশুমে স্পোর্টিং ইউনিয়নে খেলেছেন। স্থানীয় ওয়ান ডে টুর্নামেন্টে ১৮৯ রানের ইনিংস খেলে নজর কেড়েছিলেন আসিফ। ক্রিকেটের শুরু কীভাবে? 'ছোটবেলা টিভিতে খেলা দেখে মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, পাড়ায় খেললেই কি এরকম দলে সুযোগ মিলবে? তখন আমি ক্লাস টুয়ে পড়ি। আমার উৎসাহ দেখে মা নিয়ে গিয়ে ভিডিওকন অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করে দেয়। সেই থেকে শুরু,' বলছিলেন আসিফ। যোগ করলেন, 'বাংলার অনূর্ধ্ব ১৬ ও অনূর্ধ্ব ১৯ দলে খেলেছি। মাঝে দুই মরশুম মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশের হয়ে অনূর্ধ্ব ২৩ বিভাগে খেলি। হাজারের ওপর রান করেছিলাম। তবে করোনা লক ডাউনের পরে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিয়ে বাংলায় ফিরি। গত মরশুমে বাংলার অনূর্ধ্ব ২৫ দলের হয়ে ওয়ান ডে খেলেছি।'
বাবা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। বাবা, মা ও ভাইকে নিয়ে সংসার। আসিফের ধ্যান-জ্ঞান ক্রিকেটই। টি-২০ ক্রিকেটে এটাই তাঁর সর্বোচ্চ স্কোর। প্রিয় ক্রিকেটার? আসিফ বলছেন, 'ডেভিড ওয়ার্নার। তবে বিরাট কোহলির খেলাও ভাল লাগে।' যোগ করলেন, 'আমি মিডিয়াম পেস বলও করি। অনূর্ধ্ব ১৬ ক্রিকেট খেলার সময় কলকাতা নাইট রাইডার্সের নেটে গৌতম গম্ভীর, রবিন উথাপ্পাদের বিরুদ্ধে বল করেছি। গম্ভীর স্যরের ব্যাটিং কাছ থেকে দেখেছি। সকলকেই উৎসাহ দিয়েছিলেন।'
বেঙ্গল প্রো টি-২০-তে সোমবারই প্রথম ম্যাচ খেললেন আসিফ। কোচ শুভময় দাস তৈরি থাকতে বলেছিলেন। তৈরি যে ছিলেন, প্রমাণ করে দিয়েছেন আসিফ। সুযোগ পেয়েই দলকে ম্যাচ জিতিয়েছেন। তাঁর ব্যাটে চার-ছক্কার ঝড় দেখে সিএবি কর্তাদের মুখেও যেন স্বস্তি।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হতেই ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ স্তিমাচকে ছাঁটাই