(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Kali Puja 2021: সাড়ে ৪০০ বছরের ইতিহাস, রঘু ডাকাতের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ‘বিপ্লবী’ বাড়ির কালীপুজো
বাঁকুড়া জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যমণ্ডিত কালী মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া শহরের বড় কালীতলার মন্দির।
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: মাঝে কেটে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৪০০ বছর। এ পুজোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ইতিহাস। রঘু ডাকাতের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই বাড়ির কালীপুজো। বাঁকুড়ার বড় কালীতলা মন্দির ও ‘বিপ্লবী’ বাড়ির কালীতলা পুজো আজও স্থানীয়দের মুখে মুখে ফেরে।
বাঁকুড়া জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যমণ্ডিত কালী মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া শহরের বড় কালীতলার মন্দির। শোনা যায়, এই মন্দিরের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ইতিহাস মেলে। এখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গীতাপাঠ, শক্তি সাধনা আর বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষা নেওয়ার কাজও চলত। এরপর বংশানুক্রমে শহরের এই মন্দিরে পুজো করে আসছেন চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরাই।
বছর ঘুরে ফের কালীপুজো এসেছে। আগের মতো সেই জাঁকজমক না থাকলেও পুজোর আয়োজনে ভাটা পড়েনি। বর্তমান পুরোহিত ভৈরবনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এখানে তান্ত্রিক মতে পুজো আরম্ভ হয়। আমার পিতামহর মুখে শুনেছি রঘু ডাকাত এই পুজো শুরু করেন। তার পর আমরা বংশপরম্পরা পুজো করে আসছি এই মন্দিরে। তিনি আরও বলেন, 'বিপ্লবীদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল এখানে। আমার পিতামহ কমলাকান্ত চট্টোপাধ্যায় ছিলেন একজন বড় তান্ত্রিক। তাঁর কাছেই বিপ্লবীরা আসতেন লাঠি খেলা, ছড়া খেলা শিখতেন। শক্তির আরাধনাও করতেন। পাশেই রয়েছে এক বিপ্লবী বাড়ি। সেখানেই বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল।'
আলিপুর বোমা মামলায় দণ্ডিত ও সাজাপ্রাপ্ত অধিকাংশ বিপ্লবীই কালীতলার কালীমন্দিরে কালী মূর্তির সামনে, গীতা পাঠ মন্ত্র পাঠ বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষা নিতেন ও শক্তি সঞ্চয়ের জন্য শক্তি সাধনা করতেন বলে শোনা যায়।
এই বড় কালীতলা মন্দিরের সন্নিকটস্থ এলাকায় রয়েছে ভাঙাচোরা একটি বাড়ি, যা এলাকার মানুষের কাছে ‘বিপ্লবী’ বাড়ি নামে পরিচিত। শহরে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বড় কালীতলা গার্লস হাইস্কুল সংলগ্ন এই প্রাচীন বাড়িতে বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল।
তৎকালীন অনুশীলন সমিতির গোপন আস্তানা হিসেবেও এই বাড়ি ব্যবহৃত হত বলে লোকমুখে শোনা যায়। সেই সূত্রেই বাংলার অনুশীলন সমিতির বহু বিপ্লবীর আনাগোনা ছিল এই বাড়িতে। বিপ্লবীরা ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে গা ঢাকা দিয়ে দিনের পরদিন লুকিয়ে থাকতেন বাড়িটিতেই থাকতেন। বাড়ির ভিতরেই রয়েছে একটি গুপ্তকক্ষ। সেখানে রাখা থাকত বিপ্লবীদের আগ্নেয়াস্ত্র। এমনকি এমন তথ্যও পাওয়া যায় যে, এই বাড়ির সদস্য ধরণিধর মুখোপাধ্যায় নিজে বিপ্লবীদের সহায়তা করার পাশাপাশি সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন।