Kanchenjunga Train Accident : মেয়ের সঙ্গে ফাদার্স ডে পালন করবেন বলে ডিউটি বদল করেছিলেন, ফিরল রেল কর্মীর নিথর দেহ !
Train Accident News : গতকাল ডিউটি ছিল নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শিয়ালদাগামী জনশতাব্দী এক্সপ্রেসে। পরে কাঞ্চনজঙ্ঘায় ডিউটি নিয়েছিলেন আশিস।
শিলিগুড়ি : মেয়ের সঙ্গে ফাদার্স ডে পালন করবেন বলে ডিউটি বদল করেছিলেন। আর সেটাই কাল হল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গার্ড আশিস দে-র। গতকাল ডিউটি ছিল নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শিয়ালদাগামী জনশতাব্দী এক্সপ্রেসে। কিন্তু ফাদার্স ডে উপলক্ষ্যে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির সুকান্ত পল্লির বাড়িতে ফিরেছিল মেয়ে। অনেক রাত পর্যন্ত জমিয়ে খাওয়াদাওয়া চলে। তাই কাঞ্চনজঙ্ঘায় ডিউটি নিয়েছিলেন আশিস। ফাঁসিদেওয়ার কাছে ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে শুনেই বিপদ আশঙ্কা করেছিলেন আশিসের পরিবারের সদস্যরা। সকালে হাসিমুুখে বেরিয়েছিলেন, বিকেলে বাড়ি ফিরল রেল কর্মীর নিথর দেহ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "খালি রেলের কর্মচারীদের সুরক্ষা নয়, রেলের যাত্রীদের সুরক্ষা পর্যন্ত নেই। যখন আমাদের পাড়ায় বা এলাকায় হয় তখন আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করি। সামগ্রিকভাবে মানুষ তো বুঝতে পারে না কোথায় কী হচ্ছে না হচ্ছে। আজ আমাদের ঘরে হয়েছে। এটা তো ঘরে হওয়া। পাড়ার ছেলে। ছোটবেলা থেকে এখানে মানুষ হয়েছেন। এখানেই থাকেন। এভাবে যদি প্রাণগুলো চলে যায় ! যারই হোক। মালগাড়ির যিনি চালক গেলেন, তাঁরও ২টো বাচ্চা আছে। আজ সামগ্রিকভাবে রেলের যা অবস্থা, তার ফলে এই প্রাণগুলো যাচ্ছে। বাচ্চা মেয়েটাকে তার বাবা হারা হতে হল। এই মহিলাকে অল্প বয়সে তাঁর স্বামীহারা হতে হল। সবগুলোয় যে LHB কোচ আছে তা নয়, বলা হয়েছিল ৭ বছরের মধ্যে। আজ ৭ বছর হয়ে গেল। হয়নি তো । তারপরে এগুলো করলেও যে দুর্ঘটনা থামাতে পারবেন তা নয়। কারণ, এটা পরিচালনার জন্য দক্ষ লোক দরকার। সেই লোক কি আছে রেলের ? সেই লোক কি নিয়োগ করা হচ্ছে ? একজন ড্রাইভারকে যদি দিনের পর দিন ডিউটি করতে পাঠানো হয়, সেটা কি সম্ভব ? মানুষ তো ! রোবট নন। "
শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। আহত ৩৩ জন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ সকালে মালদার চাঁচলের বাসিন্দা ৬ বছরের এক শিশুকন্যা ও বিহারের বাসিন্দা বিজয় কুমারের মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের আঘাত গুরুতর বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনা নিয়ে রেলের দাবি, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ি একই লাইনে থাকলেও, দুই চালককে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল নিয়ম মেনে। কাঞ্চনজঙ্ঘার জন্য সকাল ৮টা ২০-তে মেমো ইস্যু করা হয়েছিল। নিয়ম মেনে ১৫ মিনিট পর ৮টা ৩৫-এ মেমো দেওয়া হয় মালগাড়ির চালককে। প্রশ্ন উঠছে, নিয়ম মেনে সমস্ত কিছু হলে, সিগনাল উপেক্ষা করার বিষয়টি ঘটল কী করে? দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল। উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার জনককুমার গর্গের তত্ত্বাবধানে কাল থেকে এই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে। কারও কাছে দুর্ঘটনা সম্পর্কিত কোনও তথ্য থাকলে তাঁরা তা তদন্ত কমিশনের কাছে জানাতে পারবেন। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের ADRM-এর অফিসে এই কমিশন বসবে। এ ছাড়াও সুরক্ষা কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েও দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া যেতে পারে।