WB Drug Control Infrastructure: কোথাও ফাটল, কোথাও চাঙড় খসে পড়ছে ; নিভু নিভু আলোতেই রাজ্যে ওষুধের গুণমান যাচাই ! উঠছে প্রশ্ন
Fake Medicine Issue: জাল বা নিম্নমানের ওষুধের কারবার নিয়ে যখন চাঞ্চল্য়কর তথ্য় সামনে আসছে, তখন অবধারিতভাবে প্রশ্ন উঠবে, স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াব কী করছে ?

ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : ওষুধের গুণমান কেমন, তা ধরা পড়তে পারে স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াবের পরীক্ষায়। কিন্তু, এরাজ্য়ে সেই ল্য়াবের কী অবস্থা? ভেজাল এবং নিম্নমানের ওষুধের কারবারের পর্দাফাঁসের প্রেক্ষিতে, আমরা গেছিলাম তা দেখতে। আর সেখানে প্রায় চোখ কপালে ওঠার জোগাড়! কোথাও ফাটল, কোথাও চাঙড় খসে পড়ছে। কোথাও নিভু নিভু আলোতে চলছে ওষুধের গুণমান যাচাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কর্মীর সংখ্য়াও তথৈবচ।
হাসপাতালেরই যদি ভগ্নপ্রায় দশা হয়, তাহলে রোগ ধরবে কে ? না, আজ আমাদের উদ্বেগ মানুষের হাসপাতাল নিয়ে নয়, ওষুধের হাসপাতাল থুড়ি ল্য়াবরেটরি নিয়ে। মানুষের রোগ পরীক্ষার জন্য় যেমন হাসপাতাল রয়েছে, তেমন ওষুধের গুণমান পরীক্ষার জন্য় রয়েছে স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াব।
জাল বা নিম্নমানের ওষুধের কারবার নিয়ে যখন চাঞ্চল্য়কর তথ্য় সামনে আসছে, তখন অবধারিতভাবে প্রশ্ন উঠবে, স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াব কী করছে ? সেখানে কি পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে ? তা দেখতে স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবে পৌঁছেছিলাম আমরা। আর সেখানে যে ছবি দেখা গেল তা ভয়ঙ্কর !
'স্টেট ড্রাগ টেস্টিং' ল্য়াবে এবিপি আনন্দ। কী অবস্থা 'ওষুধের হাসপাতালের' ? ভগ্নপ্রায়, কোথাও ফাটল, কোথাও চাঙড় খসে পড়ার অবস্থা। নিভু নিভু আলো। তার মধ্য়ে চলছে ওষুধের গুণমান যাচাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াবে ২ ভাবে নমুনা আসে। 'সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর' বা CMS থেকে। দ্বিতীয়ত, 'স্ট্য়াটুটারি' পদ্ধতিতে। অর্থাৎ, ড্রাগ কন্ট্রোলের ইন্সপেক্টররা বিভিন্ন জায়গায় থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করতে পাঠান। কিন্তু নমুনার সংখ্য়া বিপুল হলেও, তা পরীক্ষার মতো পর্যাপ্ত কর্মী কি আদৌ আছে ?
স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াবরোটরিতে ৬টি বিভাগে যেখানে ৪৭ জন অ্য়ানালিস্ট থাকার কথা, আছেন মাত্র ১০ জন। যার মধ্যে আবার অবসরপ্রাপ্ত ৪ জনকে পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে।
চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলছেন, ড্রাগ কন্ট্রোলার অফিস...রাজ্য সরকারের হোক বা ভারত সরকারের...তাদের কাজ এগুলো পর্যায়ক্রমে দেখা। তার গুণগত মান পরীক্ষা করা এবং গুণগত মান পরীক্ষার পরে সার্টিফিকেশনের অথেনটিকেশন করার পরেই কিন্তু বাজারজাত হওয়ার কথা। কিন্তু কেন কীভাবে একশ্রেণির ব্যবসাদার এই অনুমতিগুলি পান...আমাদের বোধগম্য হয় না।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, বর্তমানে যে ভগ্নপ্রায় বিল্ডিং রয়েছে তার পাশে নতুন ভবন করা হয়েছে। মার্চ মাসের পর সেই ভবনের ৩টে তলায় এই ল্য়াবগুলো ধাপে ধাপে স্থানান্তরিত করা হবে।
স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াবের বর্তমানে National Accreditation Board for Testing and Calibration Laboratories অর্থাৎ NABL অথবা International Standardization Organization অর্থাৎ ISO-র স্বীকৃতি নেই। কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন ভবনে স্থানান্তরের পর স্বীকৃতির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করবেন তাঁরা।
স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্য়াবের মতোই পরিস্থিতি, ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসেরও। না আছে কর্মী, না পরিকাঠামো।
পরিস্থিতি শোচনীয় ঠারেঠোরে মানলেও, প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি কেউই। এখানেও, ড্রাগ ইনস্পেক্টর থাকার কথা ৯৯ জন, যেখানে রয়েছেন ৭৮ জন। সিনিয়র অ্য়ানালিস্টের ৪৯ জনের সবক'টি পদ খালি রয়েছে।
সূত্রের দাবি, ড্রাগ ইনস্পেক্টর নিয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু, 'ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সর্দার', এই অবস্থায় কি জাল বা নিম্নমানের ওষুধের রমরমা আদৌ ঠেকানো সম্ভব ?
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
