WBCS Exam Preparation: WBCS-এ সাফল্য কীভাবে? এগোতে হবে কোন পথে?
ABP Live Exclusive: কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়? কী ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে? টাইম ম্যানেজমেন্ট কীভাবে করা যাবে? MCQ ও ডেসক্রিপটিভ অনুশীলন কীভাবে?
কলকাতা: সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে পরীক্ষার্থীদের নানা জিজ্ঞাসা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন অনেকেই। এই তালিকায় রয়েছে WBCS পরীক্ষাও। এই নিয়ে পরীক্ষার্থীদের একাধিক প্রশ্ন থাকে। কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়? কী ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে? টাইম ম্যানেজমেন্ট কীভাবে করা যাবে? MCQ ও ডেসক্রিপটিভ অনুশীলন কীভাবে? এবিপি লাইভে এই সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন ২০১৮ সালে WBCS পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানাধিকারী বর্তমানে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত অভিরূপ ভট্টাচার্য।
এবিপি লাইভ : সবাই বলেন WBCS পরীক্ষা খুব কঠিন? ঠিক কতটা কঠিন?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: এই পরীক্ষার প্রস্তুতি একটা জার্নির মতো। আর বিভিন্ন বিষয়ে মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব, চিন্তাভাবনারও বিকাশ ঘটে। কারোর স্বপ্ন বা মানুষকে সেবা করার আকাঙ্ক্ষা যতটা তীব্র, ততটাই সহজ WBCS পরীক্ষা। আপাত দৃষ্টিতে কঠিন মনে হলেও, পরীক্ষার ফর্ম্যাট মানসিক, শারীরিকভাবে প্রস্তুত করে দেয়।
এবিপি লাইভ: অন্য সরকারি পরীক্ষার সঙ্গে কি একই দাঁড়িপাল্লায় রাখা যায় WBCS পরীক্ষাকে?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: এই সময়ে যে কাজ অন্ন জোগায় তা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। এই পরীক্ষা রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে নিয়োগের পরীক্ষা। এই পরীক্ষা দিয়ে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, ডেপুটি কালেক্টর হই। পরবর্তীকালে সাব ডিভিশানাল ম্যাজিস্ট্রেট, জয়েন্ট সেক্রেটারি, স্পেশাল সেক্রেটারি হই। পাশাপাশি জয়েন্ট বিডিও সহ একাধিক পদে নিয়োগ হয়।
এবিপি লাইভ :যে কোনও পরীক্ষা মানেই একটা ভয়। WBCS- র মতো বড় পরীক্ষায় তা আরও বড় বেশি। এই ভয়ের জন্যই অনেক ভুলের সম্ভাবনা থাকে। এই ভয় কাটানোর উপায় কী?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: সিভিল সার্ভিস কেন পাশ করতে চাইছি আগে সেটা ভাবতে হবে। অন্য চাকরি ভাল লাগছে না তাই সিভিল সার্ভিস পাশ করতে চাইছি, সেই জায়গা থেকে ভয় আসতে পারে। অনেক সময় বন্ধুর সরকারি চাকরি পেয়েছে তাই আমাকে পেতেই হবে, এই দিক থেকেও ভয় কাজ করতে পারে। কোনও কিছু না পাওয়া থেকেই আসলে ভয়টা তৈরি হয়। নেতিবাচক দিক থেকে শুরু করা যাবে না। সিভিল সার্ভিস পাশ করে যে জীবনটা পাওয়া যাবে, তাকে ভালবাসতে হবে আগে। নিজেদের ভাবনা, অন্য কেউ কী ভাবছে তা একেবারেই ভাবলে চলবে না।
এবিপি লাইভ : কোন কোন বিষয় মেনস পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: WBCS মেনস পরীক্ষা ১৬০০ নম্বরের হয়। প্রথমেই থাকে মাতৃভাষা। বাংলা, হিন্দি, নেপালি এবং উর্দু ভাষার হয়ে থাকে। ইংরাজি পরীক্ষায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকে। ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, পলিটি, বিজ্ঞান, প্রতিটি বিষয় নিজের নিজের জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি বিষয়ের যে মান দেওয়া থাকে তা মাথায় রেখে প্রথম থেকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।
এবিপি লাইভ: মেনসের ক্ষেত্রে অপশনাল বা স্কোরিং হিসেবে কোন বিষয় ভাল?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: অপশনাল নিয়ে অনেকের মধ্যে ভয় কাজ করে। এর মধ্যে কয়েকটি বিষয়কে আমরা স্কোরিং বলে থাকি। আবার অনেক বিষয়ের ক্ষেত্রে ততটা নম্বর পাওয়া যায় না বলা হয় না। যে কোনও অপশনালই একইভাবে স্কোরিং। এর মধ্যে দুটো বিষয় কাজ করে, ওই বিষয়টাকে কে কতটা ভালবাসছে এবং তা পরীক্ষার খাতায় কীভাবে প্রতিফলন হচ্ছে। কোনও অপশনাল বিষয় পরীক্ষার খাতা একদম পয়েন্ট ধরে, ডায়াগ্রাম, চার্ট করলে সুবিধা হবে পরীক্ষার্থীদের। এমন বিষয় বাছতে হবে যে বিষয়ে পরীক্ষার্থীরা কমফর্টেবল। স্নাতক স্তরে ওই বিষয় থাকলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। পূর্ববর্তী বছরে প্রশ্ন চর্চা করতে হবে। বিষয়টা নতুন হলেও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যেতে পারে। বিজ্ঞান বিভাগে অ্যান্থ্রপলজি, সাইকোলজি, কলা বিভাগের মধ্যে সোশিওলজি, পলিটিক্যাল সায়েন্স, ইতিহাস রাখা যেতে পারে অপশনাল বিষয় হিসেবে।
এবিপি লাইভ: ইতিহাস বা পলিটিক্যাল সায়েন্সের মতো আর্টসের বিষয় অনেকেই বলে থাকেন নম্বর কম ওঠে। সেক্ষেত্রে স্কোরিং বিষয় হিসেবে কতটা উপযোগী?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: কলা বিভাগের বিষয় মানেই প্রচুর লিখতে হয় এই ধারণা ভুল। এক্ষেত্রে সব থেকে বড় বিষয় টাইম ম্যানেজমেন্ট। আমি কতটা লিখব, প্রশ্নের মান কতটা রয়েছে। প্যারাগ্রাফ সাব পার্টসে ভেঙে উত্তর লেখা যায়। পয়েন্ট ধরে, ফ্লো-চার্ট বা ডায়াগ্রাম ধরে লেখা যায়। কোনও বিষয়ে যদি ৪০ নম্বরের ৫টা প্রশ্ন থাকে। তবে একেকটা প্রশ্নে ৩০ থেকে ৩২ মিনিট সময় পাওয়া যাবে। প্রত্যেকটা প্রশ্নের সাব পার্টস ধরে লেখা উপযোগী হবে।
এবিপি লাইভ: WBCS পরীক্ষায় এই টাইম ম্যানেজমেন্ট কীভাবে করা যায়?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: বাড়িতেই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে হবে। অনেকেই চাকরি করতে করতেও পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। তাঁদের হাতে প্রস্তুতির সময় এমনই কম থাকে। ১২ ঘণ্টা ১৩ ঘণ্টা পরার থেকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা মনযোগ সহকারে পড়া অনেক বেশি উপকারী। তাই এই সব থেকে টাইম ম্যানেজমেন্টে সব থেক ভাল উপায় মক। কত সংখ্যক মক সমাধান করতে পারছি তার উপর এটা নির্ভর করে। কোন প্রশ্নে বেশি এবং কোন প্রশ্নে কম সময়ে লাগবে তা বোঝা যাবে মক সমাধানের মাধ্যমেই।
এবিপি লাইভ: মাধ্যমিক স্তরে পরীক্ষায় যাঁরা অঙ্ক ছেড়েছেন বা আর্টসের ছেড়েছেন তাঁরা কীভাবে এতদিন পর প্রস্তুতি নেবেন?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: খুব স্বাভাবিকভাবে যাঁরা মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত অঙ্ক সহ বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয় পড়েছেন তাঁদের ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক। আবার, যাঁরা মাধ্যমিক পর্যন্ত আর্টস পড়েছেন তাঁদের সেই বিষয় ভুলে যাওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়। WBCS এর ক্ষেত্রে নতুন করে সেই বিষয়গুলো আবার পড়তে হচ্ছে। নতুন সেই বিষয়গুলো পড়া শুরু করার আগে তা ভালবাসতে হবে। এর পাশাপাশি সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই প্রশ্ন বাছাই গুরুত্বপূর্ণ।
এবিপি লাইভ: MCQ-র উত্তর দেওয়ার জন্য কোন কোন বিষয় মনে রাখতে হবে?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: অনেকেই ভাবেন পরীক্ষা একটু সহজ হয়েছে। কিন্তু একেবারেই ভুল ধারণা। বইটা খুঁটিয়ে পড়তে হবে। শুধু MCQ-র বই সমাধান করে গেলে বিপদে পড়বে পরীক্ষার্থীরা। রুটিন এমনভাবেই সাজাতে হবে যে কোনও বিষয়ে বই পড়া এবং MCQ-র বই সমাধান দুটোই করা যায়।
এবিপি লাইভ: Descriptive প্রশ্নের উত্তর অনেক সময় যায়। প্রয়োজনের তুলনায় বড় লিখে ফেলেন অনেকেই। এক্ষেত্রে উত্তর কম্প্যাক্ট রাখা যাবে কীভাবে?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: সিভিল সার্ভিসের কোনও প্রশ্নের উত্তরের বৈচিত্র যেন থাকে তা দেখতে হবে। যে কোনও বিষয়কে ভেঙে লেখা যেতে পারে। SPRITE অর্থাৎ সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রযুক্তিগত দিক থেকে ভাঙলে লেখা অনায়াসেই কম্প্যাক্ট হবে।
এবিপি লাইভ: WBCS মেনসের জন্য বাংলায় প্রস্তুতি নিয়ে, পরে ইংরেজিতে 10 years question paper solve করলে কী কোনও সমস্যা হতে পারে?
অভিরূপ ভট্টাচার্য: WBCS পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মূল সমস্যা থেকে যেতে পারে। প্রাথমিকভাবে বাংলা পড়া শুরু করা যায়। তবে ধীরে ধীরে ইংরেজি বই পড়া শুরু করতে হবে। কারণ, প্রিলিমস বাংলা এবং ইংরেজিতে হলেও মেনসে প্রশ্ন ইংরেজিতেই আসে। সায়েন্স, ইকোনমিস, পলিটিতে বেশ কিছু শব্দ আছে যার অনুবাদ হয় না। ফলে দুই ভাষার জন্য সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI