PIB Fact Check Unit: ভুয়ো খবর বাছাইয়ের নামে স্বাধীনতা হরণ? কেন্দ্রের PIB বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
Supreme Court: ২০২১ সালের তথ্যপ্রযুক্তি (মধ্যস্থতাকারী নির্দেশিকা এবং ডিজিটাল মিডিয়া নীতি-নিয়ম) আইনে গত বছর সংশোধন ঘটায় কেন্দ্র, তাতে PIB-কে সত্যতা যাচাইয়ের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়।
নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের আগে ভুয়ো খবর রুখতে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB)-কে সত্যতা যাচাইয়ের সরকারি মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্র। বুধবারই সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় কেন্দ্রের তরফে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের সেই বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের এই নির্দেশ বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে জানাল দেশের শীর্ষ আদালত। (PIB Fact Check Unit)
২০২১ সালের তথ্যপ্রযুক্তি (মধ্যস্থতাকারী নির্দেশিকা এবং ডিজিটাল মিডিয়া নীতি-নিয়ম) আইনে গত বছর সংশোধন ঘটায় কেন্দ্র, তাতে PIB-কে সত্যতা যাচাইয়ের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়। সেই নিয়ে বিতর্ক বাধলে, PIB-র নাম সাময়িক সরিয়ে নেওয়া হয় কেন্দ্রের তরফে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে, বুধবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, PIB-র সত্যতা যাচাই বিভাগই কেন্দ্রীয় সরকার সম্পর্কে অনলাইন মাধ্যমে যাবতীয় ভুয়ো খবর যাচাইয়ের সরকারি মাধ্যম। কেন্দ্রীয় সরকার সম্পর্কে কোনও ভুল খবর গেলে, PIB সেগুলি চিহ্নিত করবে এবং সেই মতো পদক্ষেপ করতে পারবে। (Supreme Court)
কেন্দ্রের এই বিজ্ঞপ্তি সামনে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায়। কারণ ২০২১ সালে তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী, ওয়েবসাইট থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে কোনও খবর ভুল, বিভ্রান্তিকর এবং বেঠিক বলে চিহ্নিত হলে অনলাইন মাধ্যমগুলি আইনি নিরাপত্তা হারাতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই খবর তুলে নিতে হবে। তাই নির্বাচনের আগে সরকার বিরোধী কণ্ঠস্বরগুলিকে দমিয়ে রাখতেই কেন্দ্র PIB-কে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ ওঠে। PIB-র গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ এর আগে, একাধিক বার যথার্থ খবরকে ভুয়ো হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার নজির রয়েছে PIB-র। তাই PIB-কে ব্যবহার করে কোন খবর প্রকাশিত হবে, আর কোনটি হবে না, বকলমে সরকার তা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে বলে অভিযোগ ওঠে।
আজকের দিনে ভুয়ো খবর যে অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, সেই নিয়ে কোনও সংশয় নেই যদি। কিন্তু PIB-র হাতে গুরুদায়িত্ব অর্পণ করে সরকার আদৌ ভুয়ো খবর নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট নাকি সরকার-বিরোধী কণ্ঠস্বর দমনে উৎসুক, সেই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম 'Al Jazeera'-য় প্রকাশিত CAA নিয়ে একটি রিপোর্টকে 'ভুয়ো' বলে চিহ্নিত করে PIB. দু'টি রিজয়েন্ডারও দেওয়া হয় 'Al Jazeera'-কে। কিন্তু তাতে যে যে প্রশ্ন তোলা হয়, 'Al Jazeera'র প্রতিবেদনে সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্যই ছিল না বলে উঠে আসে পরবর্তীতে।
তাই PIB-কে সত্যতা যাচাইয়ের সরকারি মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা এবং এডিটর্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া। বম্বে হাইকোর্ট সরকারি সিদ্ধান্তের সপক্ষেই রায় দেয়। এর পর শীর্ষ আদালতে মামলাটি ওঠে। সেখানে বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তির উপর স্থগিতাদেশ বসল।