Saraswati Puja: চাঁদমালায় লেখা 'মাগো যেন মুখের ভাষা ঠিক হয়', নেতাদের উদ্দেশে বার্তা ছোটদের
বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার বলেন, "আমাদের নজরে এসেছে , যখন বলছি চল খেলব, বাচ্চারা অমনি সবাই মিলে বলছে খেলা হবে, খেলা হবে..."
ঋত্বিক মণ্ডল, কলকাতা: বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। ভোট যত এগিয়ে আসছে সব শিবিরে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা ততই ব্যস্ত হয়ে পরছেন। শীর্ষস্থানীয় নেতা থেকে মধ্যস্থানীয় নেতা, এমনকী স্থানীয় নেতারাও প্রতিদিন ব্যস্ত থাকছেন অসংখ্য রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করতে।
ভোট এগিয়ে আসতেই কেউ দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছচ্ছেন। আবার কেউ নেমে আসছেন হেলিকপ্টার করে। আর সেই সভা-সমাবেশেই রাজনৈতিক নেতারা যে ভাষার ব্যবহার করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শাসক-বিরোধী সব শিবিরের বেশ কিছু নেতার ব্যবহার করা ভাষা প্রশ্নচিহ্নের সামনে। সে ভাষা ভাইরাল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ্য জনসভায় এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করা যায় কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এই বিষয়টাকে উল্লেখ করেই উল্টোডাঙ্গার একটি সরস্বতী পুজোয় দেখা গেল অভিনব ছবি। বিধান শিশু উদ্যানে নিয়মিত শ-পাঁচেক কচিকাঁচা খেলাধুলো করতে আসে। ছেচল্লিশ বছর ধরে সরস্বতী পুজো হচ্ছে বিধান শিশু উদ্যানে। এবারে তারা নিয়ে এসেছে অভিনব ভাবনা যাতে রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ।
প্রতিবারের মতো এবারও উদ্যানবাড়ির চাতালে হচ্ছে সরস্বতী পুজো। আলপনায় সাজানো চাতাল। সাজানো নানান রঙের ফুলের গাছ। মায়ের পায়ের কাছে রাখা বই। সেখানেই অঞ্জলি দিল একদল কচিকাঁচা। কিন্তু ঠাকুরের ডান হাতে যে চাঁদ মালা দেওয়া হয়েছে তাতে লেখা রয়েছে, ''মাগো যেন মুখের ভাষা ঠিক হয়"।
কী কারণে এই ধরনের মন্তব্য? জিজ্ঞাসা করলে বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার বলেন, "আমরা সোজা কথায় রাজনৈতিক নেতাদের জন্য এই বার্তা দিতে চাইছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে যা দেখছি তাই বলছি। রাজনৈতিক নেতারা যে ধরনের ভাষার ব্যবহার করছেন তাতে শিশুমনে প্রভাব পড়ছে"।
কিন্তু গৌতম বাবুদের হঠাৎ এমনটা কেন মনে হল? বিধান শিশু উদ্যান এ প্রতিদিন প্রায় ৫০০ শিশু খেলাধুলো করতে আসে। গৌতম বাবুদের নজরে এসেছে ,"আমরা যখন বলছি চল খেলব, বাচ্চারা অমনি সবাই মিলে বলছে খেলা হবে... খেলা হবে। আসলে টিভিতে দেখে দেখে ওদের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়ছে বুঝতে পারছি"। নির্বাচনের আগে সব শিবিরের রাজনৈতিক নেতাদের ভাষা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আরও সংযত হওয়া উচিত বলে মনে করছেন এই পুজো উদ্যোক্তারা।
সরস্বতী ঠাকুরের হাতে দেওয়া হয়েছে ছবিতে আঁকা ছোটদের রামায়ণ। আর হাতেখড়ির জন্য স্লেট-পেন্সিল। যাতে লেখা 'ম- মমতা'। এ প্রসঙ্গে সম্পাদক গৌতম তালুকদার বলেন, "রামায়ণ হচ্ছে আমাদের শৈশব। ছোটবেলায় রামায়ণ পড়ে শিশুমন বিকাশ পায়। সেই রাম নিয়ে রাজনীতি ঠিক হচ্ছে না। আর মমতা হচ্ছে একটা চারিত্রিক গুণ। সেটা একটা মানুষের মধ্যে থাকাটা ভালো। কিন্তু এখন মমতা বললেই একটা রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে"। এই ভাবনা থেকেই এই দুটো জিনিস এবারের সরস্বতী পুজোয় বিধান শিশু উদ্যানে রাখা হয়েছে।
সকাল থেকে অঞ্জলি দিতে যে কচিকাঁচারা এলো তাদের হাতেও সেই একই প্ল্যাকার্ড।