Suraj Sindhu Jaiswal: কোচ লক্ষ্মীর দেওয়া ব্যাটে ইডেনে ধুন্ধুমার ছাত্রের, কুয়াশা কাটিয়ে সূর্যোদয় বাংলার ক্রিকেটে?
Bengal vs Punjab: আচমকাই গাড়ি ফিফথ গিয়ারে ছুটতে শুরু করল যেন। পরপর ছক্কা ও চার মেরে সেঞ্চুরি। তারপরই আগ্রাসী সেলিব্রেশন। নড়বড়ে নব্বইয়ের স্নায়ুর চাপ কই!

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: নব্বই রান পর্যন্ত তিনি বেশ সতর্কভাবেই ব্যাটিং করেছেন। মারার বল মেরেছেন। ছাড়ার বল ছেড়েছেন।
তবে নব্বইয়ে পৌঁছেই তিনি ধরলেন বিধ্বংসী রূপ। আচমকাই গাড়ি ফিফথ গিয়ারে ছুটতে শুরু করল যেন। পরপর ছক্কা ও চার মেরে সেঞ্চুরি। তারপরই আগ্রাসী সেলিব্রেশন। নড়বড়ে নব্বইয়ের স্নায়ুর চাপ কই! বরং তারুণ্যের তেজে তখন ফুটছেন ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens)।
তিনি, সূরয সিন্ধু জয়সওয়াল (Suraj Sindhu Jaiswal)। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে ১১১ রানের ইনিংস খেললেন। ১৪ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় সাজানো ইনিংস। তাঁর ব্যাটিং দৃঢ়তার জন্যই পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে বড় রানের লিড পেয়েছে বাংলা।
কতটা স্পেশ্যাল এই সেঞ্চুরি? শুক্রবার বাংলা বনাম পাঞ্জাব রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে ক্লাব হাউসের সামনে লবিতে বসে সূরয বললেন, 'ভীষণই স্পেশ্যাল। আমার প্রথম সেঞ্চুরি এটা। এর আগে একবার ৯২ রান করেছিলাম জেলা স্তরে। এবার তিন অঙ্ক স্পর্শ করলাম। সেই জন্যই হয়তো ওইভাবে সেলিব্রেট করেছি।' যোগ করলেন, 'কেরিয়ারের শুরুতে আমি ব্যাটার হতেই চেয়েছিলাম। পরে অবশ্য জোরে বোলার হয়ে যাই।' আগের ম্যাচে কল্যাণীতে হরিয়ানার বিরুদ্ধে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন। ইডেনে পাঞ্জাবের প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়েছেন। এবার ব্যাট হাতেও দলের ত্রাতা।
সূরয সেঞ্চুরি করলেন যে ব্যাটে, সেটি কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লর চেয়ে উপহার পাওয়া। এবিপি আনন্দকে সূরয বলছিলেন, 'লক্ষ্মীরতন শুক্ল শুধু কোচই নন, আমার দাদার মতো। লক্ষ্মীদা এই ব্যাটটা দিয়েছে। সেটা নিয়েই সেঞ্চুরি করেছি বলে ভাল লাগছে।' আরও বললেন, 'লক্ষ্মীদা সব সময় ভীষণ উৎসাহ দেয়। ব্যাটিংয়েও গুরুত্ব দিতে বলে। কয়েকদিন আগেই বলছিল, তোদের এত সুযোগ দিচ্ছি ব্যাটিংয়ে, কবে আর রান করবি! টুর্নামেন্ট তো শেষ হতে চলল। সেই কথাটা ধাক্কা দিয়েছিল। তখনই ঠিক করে নিই, ভাল খেলে লক্ষ্মীদাকে দেখিয়ে দেব। এই সেঞ্চুরি করে তাই বাড়তি আনন্দ হচ্ছে।'
এমন একটা ম্য়াচে সেঞ্চুরি করলেন, যে ম্যাচ কি না বাংলা ক্রিকেটের কিংবদন্তি ঋদ্ধিমান সাহার শেষ ম্যাচ। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলেই জুতোজোড়া তুলে রাখবেন শিলিগুড়ির উইকেটকিপার-ব্যাটার। সূরয বলছেন, 'এই সেঞ্চুরি ঋদ্ধিদাকেই উৎসর্গ করলাম। আমি সৌভাগ্যবান যে ওর মতো কিংবদন্তির সঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে থাকতে পেরেছি।'
বিরাটিতে জন্ম হলেও আদপে উত্তর প্রদেশে রয়েছে সূরযের শিকড়। বাবা রেলে কর্মরত ছিলেন। বাংলায় ছিল পোস্টিং। বাবা মারা গিয়েছেন আচমকাই। সূরয ধাক্কা খেয়েছেন। স্বপ্ন দেখা থামাননি। বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল বলছিলেন, 'ওকে রোজ নেটে ৪০-৪৫ মিনিট বাড়তি ব্যাটিং করাই। ওকে কাল শেষবেলায় নামানোয় অনেকে ভেবেছিলেন নাইট ওয়াচম্যান। আমি জানতাম ও প্রথম শ্রেণির ব্যাটারের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। সেটাই প্রমাণ করল।'
কোন মন্ত্রে সেঞ্চুরি? সূরযের সরল জবাব, 'ছাড়ার বল ছেড়েছি। মারার বল মেরেছি।' লক্ষ্মীরতন শুক্লর পর কি আরও এক ভাল মানের পেসার অলরাউন্ডার প্রাপ্তি হল বাংলা ক্রিকেটের?
আরও পড়ুন: ফ্লাইং সাহার অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়ে ইডেনে ঋদ্ধি-আবেগে লাগাম পরালেন পাঞ্জাব উইকেটকিপার
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
