এক্সপ্লোর
Advertisement
জিপিএস চিপ লাগানো আংটি-কার্ড, করোনা ঠেকাতে জৈব সুরক্ষা বলয়ে অভিনব ব্যবস্থা আইপিএলে
অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা সিরিজ শেষ করে সরাসরি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পৌঁছে দলের প্র্যাক্টিসে যোগ দিতে পারবেন। বাধা থাকবে না টুর্নামেন্টের শুরু থেকে মাঠে নেমে পড়তেও।
কলকাতা: আইপিএলের অঙ্গ, অথচ জৈব সুরক্ষা বলয়ের নিয়ম ভেঙে চুপিসারে চলে গিয়েছেন রেস্তোরাঁয় ডিনার সারতে! টিমমালিক ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষকর্তাদের কাছে পৌঁছে যাবে সে খবর। করোনার সুরক্ষাবিধি অগ্রাহ্য করে টিমহোটেলের বাইরে বেরিয়ে পড়ামাত্রই সিগন্যাল পৌঁছে যাবে টুর্নামেন্টের আয়োজক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষের কাছে। নিয়ম ভাঙায় শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। সে আপনি বিরাট কোহলিই হোন বা মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, ছাড় নেই কারও!
করোনা আবহে আইপিএলে জৈব সুরক্ষা বলয়ে সকলে নিয়ম মেনে চলছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে অভিনব বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ক্রিকেটার হোক বা সাপোর্ট স্টাফ, ভারতীয় বোর্ডের কর্তা হোক বা সম্প্রচারকারী চ্যানেলের কর্মী, টিমহোটেলে কর্মরত কেউ হোক বা পিচ কিউরেটর, সকলকেই নজরবন্দি করা হচ্ছে জিপিএস চিপের মাধ্যমে! প্রত্যেকের গতিবিধি পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট জায়গায়।
ভারতীয় বোর্ডের কয়েকজন কর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আইপিএলে জৈব সুরক্ষা বলয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রেস্ট্রাটা নামক এক ব্রিটিশ সংস্থাকে। ভারতীয় এক সংস্থাও এই বরাত পেতে দর দিয়েছিল। তবে করোনা মোকাবিলায় অভিজ্ঞতা আর মুন্সিয়ানার জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে ব্রিটিশ সংস্থাকে। কীরকম অভিজ্ঞতা? এক বোর্ড কর্তা এবিপি আনন্দকে মোবাইল ফোনে বললেন, ‘রেস্ট্রাটা সংস্থাটি সদ্যসমাপ্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইংল্যান্ড সফর, পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজ, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে জৈব সুরক্ষা বলয়ের দায়িত্বে ছিল। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ওদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। বেশ পারদর্শিতার সঙ্গেই ওরা দায়িত্ব সামলেছে। ওই সিরিজগুলোতে করোনা হানা দিতে পারেনি। আমরা কোনওরকম সুযোগ নিতে চাইছি না। করোনার বিরুদ্ধে সমস্তরকম সতর্কতা অবলম্বন করেই আইপিএল করতে বদ্ধপরিকর বোর্ড।’
অতিমারি পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার ও আইপিএলের সঙ্গে যুক্ত সকলের সুরক্ষার কী বন্দোবস্ত করছে ব্রিটিশ সংস্থা? সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আইপিএলের বিভিন্ন দলের শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ক্রিকেটার, কোচ ও অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফ, সম্প্রচারকারী চ্যানেলের কর্মী, কিউরেটর, মাঠকর্মী-সহ টুর্নামেন্টের সঙ্গে যুক্ত সকলকে আংটি, হার বা অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের মাধ্যমে পরিয়ে দেওয়া হয়েছে জিপিএস চিপ! সেই চিপের মাধ্যমেই প্রত্যেকের গতিবিধি জানা যাবে। জৈব সুরক্ষা বলয়ের সমস্ত নিয়মকানুন মেনে সকলে চলছেন কি না, তার হদিশ প্রত্যেক মুহূর্তে পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে ম্যাচ বা প্র্যাক্টিসের সময় ক্রিকেটারদের চিপ পরে থাকতে হবে না। বাকি পুরো সময়টাই চিপ-সহ থাকতে হবে।
জানা গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড সিরিজে এই জিপিএস চিপের মাধ্যমেই জানা গিয়েছিল যে, জৈব সুরক্ষা বলয়ের বিধি ভেঙে বাড়ি গিয়েছেন ব্রিটিশ পেসার জোফ্রা আর্চার। শাস্তিস্বরূপ ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে পারেননি তিনি। আইপিএলে যদি কেউ একইভাবে জৈব সুরক্ষা বলয় ভাঙেন? বোর্ড সূত্রে খবর, ক্রিকেটার হোক বা অন্য কেউ, বিধি ভাঙলে রেয়াত করা হবে না। নতুন করে আইসোলেশন ও একাধিক করোনা পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তাঁকে। ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সেরকম কিছু হলে তাই বেশ কয়েকটা ম্যাচ মাঠের বাইরে কাটানোর সম্ভাবনা থাকছেই।
ক্রিকেটার-সহ টুর্নামেন্টের সঙ্গে জড়িত সকলের করোনা পরীক্ষার সমস্ত দায়িত্বও ওই ব্রিটিশ সংস্থার। জানা গেল, চেন্নাই সুপার কিংসের যে সমস্ত ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফদের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, তাঁদেরও পরীক্ষা হয়েছিল ওই ব্রিটিশ সংস্থার তত্ত্বাবধানেই। জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে অতিমারির বিরুদ্ধে কতটা সুরক্ষিত ক্রিকেটারেরা? করোনাকে কি নিশ্চিতভাবে রুখে দেওয়া যাবে? টুর্নামেন্ট আয়োজনের সঙ্গে জড়িত বোর্ডের এক কর্তা বলছেন, ‘কেউ যে আক্রান্ত হবেন না, নিশ্চিতভাবে তা বলা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে সদ্যসমাপ্ত আন্তর্জাতিক সিরিজগুলো তো নিরুপদ্রবেই কেটেছে। এত বিজ্ঞানসম্মত আর পরিকল্পিত ব্যবস্থা করা হয়েছে জৈব সুরক্ষা বলয়ে যে, সংক্রমণ ছড়ালে তা ব্যতিক্রমী ঘটনা হবে।’
ব্রিটিশ সংস্থা আইপিএলের জৈব সুরক্ষা বলয়ের দায়িত্বে থাকায় বোর্ডের আর একটা বড় সুবিধা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা সিরিজ শেষ করে সরাসরি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পৌঁছে দলের প্র্যাক্টিসে যোগ দিতে পারবেন। বাধা থাকবে না টুর্নামেন্টের শুরু থেকে মাঠে নেমে পড়তেও। কেন? বোর্ডের এক কর্তা বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড সিরিজেও এই ব্রিটিশ সংস্থাই জৈব সুরক্ষা বলয়ের দায়িত্বে ছিল। ওই দুই দেশের ক্রিকেটারদের চার্টার্ড ফ্লাইটে করে ইউএই-তে উড়িয়ে আনবে ওই সংস্থাই। পুরোটাই জৈব সুরক্ষা বলয়ের অংশ হিসাবে। তাই ইউএই পৌঁছে ওই দুই দেশের ক্রিকেটারদের আর কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মানতে হবে না।’
অর্থাৎ প্রথম ম্যাচ থেকেই মাঠে নেমে পড়তে পারবেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ডেভিড ওয়ার্নার, রাজস্থান রয়্যালসের স্টিভ স্মিথ বা কলকাতা নাইট রাইডার্সের অইন মর্গ্যানরা। আর মাঠে না থেকেও ধুন্ধুমার ক্রিকেটীয় যুদ্ধ উপভোগ করবেন কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী।
খেলার (Sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement