Purba Bardhaman: ১০০ দিনের কাজ থেকে কোটি টাকা উদ্ধার, ভাইরাল ভাদুগানে উঠে এল পার্থ-অর্পিতাও
Viral Folk Song: গানটি পোস্ট করেছেন পূর্ব বর্ধমানের এক বাম কৃষক নেতা বিনোদ ঘোষ। তারপরেই যা ভাইরাল। আর ওই গান ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।
কমলকৃষ্ণ দে, শিবাশিস মৌলিক ও অনির্বাণ বিশ্বাস, পূর্ব বর্ধমান ও কলকাতা: বাংলার সমাজ জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে বাংলার প্রাচীন লোক সংস্কৃতি। সেই লোক সংস্কৃতিরই একটি দিক হল ভাদু গান। সমাজে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা উঠে আসে বাংলার এই লোকগানে (Folk Song)। সাম্প্রতিক কালে বাংলার সমাজ-রাজনীতি আলোড়িত হয়েছে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায়। দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়িয়ে মন্ত্রীর জেলযাত্রা হয়েছে। এসবই এবার উঠে এসেছে ভাদুগানে (Bhadu Song)। পাশাপাশি সেখানে জায়গা পেয়েছে ১০০ দিনের কাজের (100 Days Work) নানা সমস্য়ার কথাও। এই গানটি পোস্ট করেছেন পূর্ব বর্ধমানের এক বাম কৃষক নেতা বিনোদ ঘোষ। তারপরেই যা ভাইরাল। আর ওই গান ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। ভাইরাল ভিডিও সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
ভাইরাল গান:
সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) গ্রেফতারি নিয়ে আলোড়ন হয়েছে। তার চেয়েও হয়তো বেশি আলোড়ন হয়েছে পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ও সোনার গয়না উদ্ধারের ঘটনায়। রাজ্যে শোরগোল ফেলে দেওয়া এই ঘটনার কথা উঠে এসেছে ভাইরাল হওয়া ভাদু গানে। সেখানে শিল্পীরা গাইছেন, 'পার্থবাবুর কাছে যত টাকা আছে, টাকার দায়ে পার্থ ঢুকল জেলখানায়, এ বছরে অভাব যাবে না....কত সোনা যে আছে, আমরা জানি না।' এখানেই শেষ নয়। গ্রাম বাংলায় নির্ভরযোগ্য রোজগারের অন্যতম উৎস ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ। তা নিয়েও নানা সমস্যা-অভিযোগ রয়েছে। ভাদুগানে জায়গা পেয়েছে সেগুলোও। ভাইরাল ভিডিওটিতে শিল্পীদের গাইতে শোনা যাচ্ছে, 'ওরে একশো দিনের টাকা হয়ে গেল ফাঁকা,টাকার কথা বললে ভাদু, বলে আমরা জানি না। এ বছর অভাব যাবে না......।' ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে, প্রত্যন্ত কোনও গ্রামে ঢোল, হারমোনিয়াম সহযোগে গান গাইছেন ভাদু শিল্পীরা। একাধিক ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে সিপিএমের কৃষক সংগঠনের নেতা বিনোদ ঘোষের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। সেখানে লেখা ওই গান হয়েছে খণ্ডঘোষের বারিশালী গ্রামে। কোথাও দেখা যাচ্ছে গ্রামের রাস্তার পাশে চলছে ভাদুগান। কোনওটায় দেখা যাচ্ছে, কোনও গ্রামের উঠোনে গান পরিবেশন করছেন শিল্পীরা। আর তাঁদের ঘিরে উৎসুক গ্রামবাসী।
সিপিএমের কৃষক সংগঠন কৃষকসভার রাজ্য কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষ বলেন, 'আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে এসব। বর্তমান ঘটনা প্রতিফলিত হচ্ছে। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। মানুষ অসুবিধায় পড়েছেন। নিয়োগ-দুর্নীতি থেকে আরও নানা দুর্নীতি, সবই উঠে এসেছে গানে। এটা শিল্পীসত্ত্বারই পরিচয়।'
গানের সৃষ্টি:
রাজ্যের প্রচীন লোকসংস্কৃতি ভাদুগান। পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) খণ্ডঘোষের বারিশালী গ্রামে বাস করেন বেশ কয়েকজন ভাদু শিল্পী। গান গাওয়া হয় ভাদ্র মাসে। গানে গানে উঠে আসে সেই সময়ের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা পরিস্থিতির কথা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই গানের কথায় উঠে এসেছে ১০০ দিনের কাজ থেকে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগ।
শুরু রাজনৈতিক তরজা:
বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'ভাদু গান, কবি গান, কীর্তন - এসব করে কোনও লাভ হবে না। কেন্দ্র জনগনের টাকা দিয়েছিল, ফলে রাজ্যের কাছে সেই হিসেব চেয়েছে, যা রাজ্য দিতে পারছে না। হিসেব না দেওয়ার কারণেই ফান্ড পেতে সমস্যা।' তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, 'এ বাংলায় লোকসংস্কৃতি ও লোকশিল্পীদের পর্যাপ্ত সম্মান যদি কেউ দিয়ে থাকেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএম এগুলো ছড়াচ্ছে, শেয়ার করছে। এগুলোই ওদের কাজ। ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ করেননি। ১০০ দিনের টাকা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে বহুবার দরবার করেও টাকা মেলেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু উন্নয়ন করেন, তাই এসব কথায় কান দিয়ে লাভ নেই।'
আরও পড়ুন: দোরগড়ায় পুজো, ডেঙ্গির মশাদের প্যান্ডেল হপিং রুখতে কী পদক্ষেপ কলকাতায়?