IAS Success Story: জুতোর দোকানে কাজ থেকে IAS অফিসার , জানুন শুভম গুপ্তা- এক সাধারণ ছেলের অসাধারণ কাহিনি
IAS Topper Shubham Gupta: ছোট থেকেই শুরু হয়েছিল জীবন যুদ্ধে লড়াই। পরিবারের আর্থিক ভিত খুব শক্তিশালী না হওয়ায় ভুগতে হয়েছিল শুভমকে। কিন্তু তাতে লক্ষ্যচ্যুত হয়নি কিশোর শুভম।
Success Story Of IAS Topper Shubham Gupta: একাগ্রতা আর কঠোর পরিশ্রম। সাফল্য পেতে এর কোনও বিকল্প নেই। সাফল্যের শীর্ষস্তরে পৌঁছতে নেই কোনও শর্টকার্ট। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের মুখেই নানা সময়ে উঠে এসেছে এই কথা। প্রতিযোগিতা যেখানে চরম, সেখানে সফল হতে যে পরিশ্রমের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছতে হবে তা আরনতুন কী ! আর সেই প্রতিযোগিতার নাম যদি হয় IAS-IPS,তাহলে প্রস্তুতির জন্য পরিশ্রম ঠিক কতটা হতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে কি? UPSC-র দরজা পেরোতে সফল হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের লড়াইয়ের গল্প কঠিন রাস্তাটা সুগম করে দিতে পারে। আজ থাকল শুভম গুপ্তার লড়াইয়ের জার্নি।
কেমন ছিল ছেলেবেলা ? রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে জন্ম। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা। যদিও আর্থিক অনটনের কারণে জয়পুর ছাড়তে হয় শুভমের পরিবারকে। রাজস্থান থেকে চলে আসতে হয় মহারাষ্ট্রের ছোট্ট গ্রামে। সেখানে গিয়ে শুরু হয় আরও এক সমস্যা।
পড়াশোনা চালাতে হাজারো প্রতিকূলতা সংবাদপত্রের রিপোর্ট বলছে, মহারাষ্ট্রে গিয়ে আরও সমস্যার মধ্যে পড়ে শুভমের পরিবার। গ্রামে একটিও হিন্দি ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল না থাকায় থমকে যায় পড়াশোনা। মারাঠি না জানায় পড়াশোনায় অসুবিধা হচ্ছিল শুভমের। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি শুভমকে গুজরাতের ভাপির একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চলে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া। তবে স্কুল যাওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য বিষয়। বাড়ি থেকে অনেক দূরে স্কুল হওয়ায় সকাল ৬টার ট্রেন ধরে স্কুল যেতে হত শুভমকে। বাড়ি আসতে আসতে ৩টে। দিদির সঙ্গেই স্কুলে যেত কিশোর শুভম।
বাড়ির জুতোর দোকানে কাজ এক সময় সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের কাছে। অনটন সামলাতে মহারাষ্ট্রের ধানু রোডের কাছে জুতোর দোকান খোলেন শুভমের বাবা। ভাপির স্কুলে ক্লাস ১২ পর্যন্ত পড়াশোনার পর বাবার জুতোর দোকানে কাজ শুরু করেন শুভম। কিন্তু তাতে থমকে যায়নি তাঁর লেখাপড়া। কাজের সঙ্গে সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে যান শুভম।
এবার দিল্লিতে পাড়ি দ্বাদশ পাশ করেই দিল্লিতে চলে আসে শুভম। সেখানে দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে বি.কম ও এম.কম করেন তিনি। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় ইউপিএসসির জন্য বিশেষ প্রস্তুতি। তবে প্রথম চেষ্টাতেই আসেনি সাফল্য। ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার ইউপিএসি পরীক্ষায় বসেন শুভম। সেবার ৩৬৬ র্যাঙ্ক আসে তাঁর। এখান থেকেই ইন্ডিয়ান অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্স সার্ভিসে কাজের সুযোগ পান তিনি।
আরও ভাল ফলের আশা সরকারি চাকরি পেয়েও ভাটা পড়েনি আইএএস হওয়ার স্বপ্নে। তাই পরীক্ষার প্রস্তুতি চালিয়ে যান শুভম। অবাক করার বিষয়, ২০১৭ সালে প্রিলি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি তিনি।
চারবারে লক্ষ্যপূরণ শুভমের
UPSC-তে পাশ করেই চাকরির সঙ্গে সঙ্গে চলে IAS হওয়ার প্রস্তুতি। লক্ষ্য ছিল IAS হয়েই কর্মক্ষেত্রে থিতু হবেন তিনি। কিন্তু একের পর একে চেষ্টা বিফলে যেতে থাকে। যদিও তাতে দমে যায়নি শুভমের ইচ্ছেশক্তি। 'হাল ছেড়ো না বন্ধু' মন্ত্রে শান দিয়ে যান তিনি। সব মিলিয়ে চারবার IAS হওয়ার পরীক্ষা দেন শুভম। শেষে চতুর্থবারে আসে সেই সুখবর।IAS টপারদের তালিকায় ৬ নম্বরে নাম ওঠে শুভম গুপ্তার। মাহারাষ্ট্র ক্যাডারের চাকরি পান তিনি। সম্পূর্ণ হয় সাধারণ ছেলের অসাধারণ কাহিনি।
লক্ষ্যে পৌঁছতে শুভমের পরামর্শ
UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে কঠোর পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই বলেই মনে করেন শুভম। তবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া যে এগোনো সম্ভব নয় তাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। শুভমের মতে, এই ধরনের পরীক্ষায় কোচিং নেওয়া ভালো। তবে কেউ চাইলে কোচিং ছাড়াই প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। সিলেবাস অনুযায়ী স্টাডি মেটিরিয়াল তৈরি করাটাই এখানে আসল কাজ। এই ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সুবিধা নিতে পারেন সবাই। এই কাজ পূরণ হলে শুধু নিয়ম মেনে পড়া চালিয়ে যেতে হবে পরীক্ষার্থীকে। তাতেই আসবে সাফল্য।
আরও পড়ুন: IAS Success Story: নিজের বিশ্লেষণ করতে হবে নিজেকেই, ছোট্ট গ্রামের পরিচয় এখন মমতাতেই
আরও পড়ুন: Asiatic Society Recruitment: কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটিতে একাধিক পদে নিয়োগ, কীভাবে করবেন আবেদন ?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI