Fact Check: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে ভারত ? চলছে তুমুল জল্পনা; সত্যতা কী ?
World Health Organisation: 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাধীনতা হারিয়েছে, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য (WHO) সংগঠন থেকে এবার বেরিয়ে আসবে ভারত'। এই শিরোনামেই পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।

Fact Check: সমাজমাধ্যমে সম্প্রতি একটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে যেটি আদপে ইকোনমিক টাইমস সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে ভারত সরকার পরিকল্পনা করছে যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সদস্যপদ (Fact Check) ছেড়ে বেরিয়ে আসবে নিকট ভবিষ্যতে। এই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা আছে, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাধীনতা হারিয়েছে, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য (WHO) সংগঠন থেকে এবার বেরিয়ে আসবে ভারত'। এমনকী এই শিরোনামের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লোগোও ছবি হিসেবে দেওয়া রয়েছে। আর এই প্রতিবেদনকে ঘিরেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
কী দাবি করা হচ্ছে
জনৈক নেটিজেন এক্স হ্যান্ডলে এই পোস্ট শেয়ার করে তার ক্যাপশনে লেখেন, 'আপনি যখনই ভাববেন যে আপনার দিন খারাপ যাবে, সেই সময়ই ভারত পরিকল্পনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসার।' এই প্রতিবেদন লেখার সময় এই পোস্টে ইতিমধ্যেই ৪ লক্ষ ২০ হাজার ভিউ এসেছে, ৩৮ হাজার লাইক এসেছে, ৯৪০০ শেয়ার হয়েছে এই পোস্ট। এই পোস্টের আর্কাইভড ভার্সন এবং একইরকম আরও পোস্টের লিঙ্ক এখানে সংযুক্ত করা হল।
পোস্ট দেখুন এখানে
২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পরেই এই দাবি দ্রুত সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। তবে লজিকালি ফ্যাক্টসের ফ্যাক্ট চেক ডেস্কের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করে দেখা গিয়েছে এমন কোনো সিদ্ধান্ত ভারত সরকার নেয়নি, ভাইরাল হওয়া এই প্রতিবেদন ২০২৩ সালে প্রকাশিত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিষয়ে ইন্দো-ব্রিটিশ চিকিৎসক ডা. অসীম মলহোত্রার ব্যক্তিগত মতামত ছিল এই প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু।
তথ্য অনুসন্ধান করে কী জানা গেল
সংশ্লিষ্ট কিওয়ার্ড দিয়ে গুগল সার্চ করে দেখা গিয়েছে ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশট আদপে ইকোনমিক টাইমস সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন যা প্রকাশিত হয়েছিল ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর। এই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল 'WHO স্বাধীনতা হারিয়েছে, ভারত সরকারের উচিত এই আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে বেরিয়ে আসা'।
এই প্রতিবেদনে ইন্দো-ব্রিটিশ কার্ডিওলজিস্ট ডা. অসীম মলহোত্রা যিনি অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস-এ একটি বক্তব্য রেখেছিলেন ডিসেম্বর মাসেই যার শিরোনাম ছিল 'দ্য কর্পোরেট ক্যাপচার অফ মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ'।
এই প্রতিবেদন অনুসারে, মলহোত্রা বলেন, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭০ শতাংশ ফান্ডিং আসে বাণিজ্যিক সংগঠনগুলি থেকে। ইন্ডাস্ট্রির ফান্ডিং যতদিন ধরে পাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে কোনোভাবেই স্বাধীন বলা চলে না। ভারত সরকারের উচিত এই সংস্থার পরামর্শ না মানা। এইসব বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি আপনার স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নয় মোটেও, লোক ঠকিয়ে তারা অর্থোপার্জন করছেন'।
ফ্যাক্ট চেক ডেস্কের পক্ষ থেকে ডা. মলহোত্রার একটি এক্স পোস্টও পাওয়া যায় যা ২০২৫ সালের ২৯ জানুয়ারি পোস্ট করেছিলেন তিনি। এই পোস্টেই তিনি সেই স্ক্রিনশটটি দিয়েছিলেন। ফলে বোঝা যাচ্ছে যে এই প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ভারতের সদস্যপদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডা. মলহোত্রা। এর সঙ্গে ভারতের সিদ্ধান্তের কোনো সম্পর্ক নেই, ভারতের কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছ থেকে এই ধরনের কোন মন্তব্য আসেনি। এমনকী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে এই ধরনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সিদ্ধান্ত
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনের ভাইরাল স্ক্রিনশট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ভারতের সদস্যপদ প্রত্যাহার সম্পর্কে কোনো মতামত দেখায় না। এজেন্সি থেকে প্রত্যাহারের বিষয়ে সরকারি তরফে কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি।
ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে লজিকালি ফ্যাক্টস এবং শক্তি কালেক্টিভের অংশ হিসেবে, প্রতিবেদনটির অনুবাদ করেছে এবিপি লাইভ বাংলা।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
