এস-৪০০: জাতীয় স্বার্থ মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবে ভারত, মার্কিন চাপের মুখে পম্পিওকে জয়শঙ্কর
LIVE
Background
নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন: দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে ভারতে এলেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পিও। লোকসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম কোনও দেশ থেকে এত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি এলেন ভারতে।
আগামী ২৮-২৯ জুন জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, বুধবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হবে পম্পিওর। সেই তালিকায় রয়েছে সন্ত্রাসবাদ, এইচ১বি ভিসা, বাণিজ্য ও ইরান থেকে ভারতের অশোধিত তেল কেনা নিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। তবে, সবকিছুকে ছাপিয়ে যেতে পারে রাশিয়া থেকে ভারতের এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম কেনার ইস্যুটি।
Working together to further deepen our strategic partnership@SecPompeo called on PM @narendramodi to exchange views on various aspects of Indo-US relationship. PM will meet President @realDonaldTrump on the sidelines of the upcoming #G20OsakaSummit pic.twitter.com/Jjjp9gTKbd
— Raveesh Kumar (@MEAIndia) June 26, 2019
প্রসঙ্গত, এস-৪০০ ইস্যুতে ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল মার্কিন প্রশাসন। সূত্রের খূবর, ওয়াশিংটনের ইচ্ছা ছিল, রাশিয়া থেকে এস-৪০০ মিসাইল না কিনে ভারত তাদের থেকে ‘প্যাট্রিয়ট’ মিসাইল সিস্টেম কিনুক। যদিও, ভারত ওই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এই প্রেক্ষিতে রাশিয়া ও ভারতের ওপর পরোক্ষ চাপসৃষ্টিও করতে থাকে ট্রাম্প প্রশাসন।
কিন্তু, ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সম্পর্ক যথেষ্ট শক্তিশালী এবং ভারত আমেকিকার স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স পার্টনার হওয়া সত্ত্বেও মস্কো যে নয়াদিল্লির দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা-বন্ধু, সেটা অস্বীকার করা যায় না।
Resuming engagement with a valuable strategic partner after elections@SecPompeo arrives in India on a 2-day visit. He will call on PM @narendramodi and meet EAM @DrSJaishankar to exchange views on a range of bilateral and regional issues of mutual interest. pic.twitter.com/EkXh12TrPX
— Raveesh Kumar (@MEAIndia) June 25, 2019
কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, পম্পিওর সফরের আগে, এস-৪০০ মিসাইল কেনা নিয়ে কিছুটা সুর নরম করেছে মার্কিন প্রশাসন। কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, ভারতকে নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দিতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ, ভারত সেই যোগ্যতা অর্জন করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার সঙ্গে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি করে ভারত। মার্কিন হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও মস্কোর সঙ্গে চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। এর জেরে ভারতের ওপর আর্থিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ভাবনা নেয় মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত, আমেরিকা সেই পথ থেকে সরে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া, ইরান থেকে তেল কেনা নিয়ে ভারতের ওপর নারাজ আমেরিকা। প্রসঙ্গত, একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইরান থেকে তেল কেনার ছাড় দিয়েছিল আমেরিকা। ওয়াশিংটনের দাবি ছিল, এই মধ্যে ভারতকে বিকল্প জায়গা খুঁজে নিতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, পম্পিওর কাছে ভারত সেই সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন চালাতে পারে। কিন্তু, বর্তমানে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সম্প্রতি একটি মার্কিন ড্রোন মেরে নামিয়েছে ইরান। যে কারণে তেহরানের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ওয়াশিংটন।
এছাড়া, ভারতীয়দের এইচ১বি ভিসা ইস্যু নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হতে পারে। সূত্রের খবর, এখনই এই ভিসার ঊর্ধ্বসীমা নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়ার কথা ভাবছে না ট্রাম্প প্রশাসন। ফলত তা ভারতকে স্বস্তি দিতে পারে। কথা হতে পারে বাণিজ্যিক ছাড় নিয়েও।