UP convict: স্বাধীন ভারতে প্রথম এক মহিলার ফাঁসি, তৈরি হচ্ছে মথুরা জেল
Death Sentence of a lady: ফাঁসির দিন এখনও ঠিক হয়নি।
লখনউ: স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার এক মহিলার ফাঁসি হতে চলেছে। উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলে এই সাজা কার্যকর হবে। এখনও ফাঁসির দিন চূড়ান্ত হয়নি, তবে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। মথুরা জেলে ইতিমধ্যেই এই মহিলাকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। ফাঁসি দেওয়ার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে পবন জল্লাদকে, যিনি নির্ভয়াকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসি দিয়েছেন। পবন কয়েকবার মথুরা জেলের ওই বিশেষ কক্ষ পরিদর্শনও করেছেন। তিনি কক্ষটিতে প্রয়োজনীয় কিছু বদল আনার পরামর্শও দিয়েছেন।
যে মহিলাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে, তাঁর নাম শবনম। তাঁর বিরুদ্ধে প্রেমিক সেলিমের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পরিবারের সাতজনকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টও এই রায় বহাল রাখে। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন শবনম। তবে রাষ্ট্রপতি সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে ফাঁসির সাজা কার্যকর করতে আর কোনও বাধা নেই।
শবনম একজন উচ্চশিক্ষিত মহিলা। তাঁর ইংরাজি ও ভূগোলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। কিন্তু তিনিই কী করে এই নৃশংস অপরাধ করে বসলেন? তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার হাসানপুর থানা এলাকার বাওয়ানখেড়া গ্রামে। তাঁর বাবা শওকত আলি ছিলেন শিক্ষক। একজন নিরক্ষর শ্রমিক সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে শবনমের। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর পরিবারের লোকজন এই সম্পর্ক নিয়ে আপত্তির কথা জানান। পথের কাঁটা দূর করতে পরিবারের সবাইকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শবনম। তিনি সেলিমের সঙ্গে মিলে পরিবারের সবার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। এরপর সবাইকে কুপিয়ে খুন করেন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন শবনমের বাবা, মা। এমনকী ১০ মাসের ভাইপোও বাদ যায়নি। দিনটা ছিল ২০০৮-এর ১৪ এপ্রিল।
তদন্তে নেমে শবনম ও সেলিমকে গ্রেফতার করে জেল পুলিশ। যে কুঠারের সাহায্য খুন করা হয়েছিল, সেলিমকে জেরা করে সেটি খুঁজে বের করে পুলিশ। শুরু হয় মামলার বিচার প্রক্রিয়া। দোষী সাব্যস্ত হন শবনম।
প্রায় দেড়শো বছর আগে মথুরা জেলে মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কক্ষটি ব্যবহার করার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়নি। ১৯৯৮ সালের ৬ এপ্রিল রামশ্রী নামে এক মহিলার ফাঁসির সাজা দেয় আদালত। কিন্তু তিনি জেলেই সন্তানের জন্ম দেওয়ায় সেই সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করে দেওয়া হয়। ফলে স্বাধীনতার পর প্রথম মহিলা হিসেবে ফাঁসি হচ্ছে শবনমেরই।
এ প্রসঙ্গে মথুরা জেলের সুপার শৈলেন্দ্র কুমার মৈত্রেয় জানিয়েছেন, ‘পরোয়ানা জারি হলেই ফাঁসি দেওয়া হবে। দিন ঠিক না হলেও, আমরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। পবন জল্লাদই ফাঁসি দেবেন। তিনি ফাঁসির কক্ষ পরিদর্শন করে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। বিহারের বক্সার জেলা থেকে ফাঁসির দড়িও আনা হয়েছে।’