New Town Encounter: পঞ্জাবে একের পর এক অপরাধ, কীভাবে বাংলায় গা ঢাকা ২ গ্যাংস্টারের?
কীভাবে নিউটাউনের আবাসনের সন্ধান পেল দুই গ্যাংস্টার?
![New Town Encounter: পঞ্জাবে একের পর এক অপরাধ, কীভাবে বাংলায় গা ঢাকা ২ গ্যাংস্টারের? New Town Encounter: Get to know how so many terrorist attack operated from Bengal by the two terrorist New Town Encounter: পঞ্জাবে একের পর এক অপরাধ, কীভাবে বাংলায় গা ঢাকা ২ গ্যাংস্টারের?](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/06/09/aff4ac3fc0c10ddccf270e5b59a66e8e_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: ভর দুপুরে নিউটাউনের আবাসনে এসটিএফের এনকাউন্টারে নিহত ২ দুষ্কৃতী। জসসি খাড়ার এবং জয়পাল ভুল্লার। পঞ্জাবের ওই ২ গ্যাংস্টারদের সঙ্গে কীভাবে যোগ হল বাংলার? কীভাবে প্রায় এক মাস বাংলায় গা ঢাকা দিয়েছিল তারা?
সূত্রের খবর, একটি এজেন্সির মাধ্যমে নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে ভাড়া নেয় ওই দুজন। তারপর গত মাস থেকে থাকতে শুরু করে তারা। ওই আবাসনের ফ্ল্যাটে ১০ হাজার টাকা ভাড়া। তার আগে ২০ হাজার টাকা ডিপোজিট করতে হয়। ১১ মাসের চুক্তিতে ২৩ মে থেকে আবাসনের ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতে শুরু করে। সিআইটি রোডের বাসিন্দা ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের কাছ থেকে ভাড়া নেয়। এমনই দাবি সাপুরজি আবাসনের ফ্ল্যাটের মালিকের ভাইয়ের। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ফ্ল্যাটের মালিকের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
টানটান উত্তেজনা। চিত্রনাট্য থেকে দৃশ্য। একেবারে নিখুঁত। যার কাছে হার মানবে হলিউড বা বলিউডের যে কোনও ক্রাইম থ্রিলার। কিন্তু কীভাবে এই আবাসনের সন্ধান পেল দুই গ্যাংস্টার? লুধিয়ানায় ধৃত ভরত কুমারের মাধ্যমেই কলকাতায় ২ গ্যাংস্টার পৌঁছয়। ভরত কুমারের কাছ থেকে বাংলার নম্বর দেওয়া গাড়ি পায় জসপালরা। ভরত কুমারেরই যোগাযোগ রয়েছে কলকাতার সঙ্গে।
কীভাবে ওই আবাসনে ভাড়া দেওয়া হয়? ওই আবাসনের এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, যাদের ফ্ল্যাট তাদের মধ্যে অধিকাংশই এখানে থাকেন না। কোনও এজেন্সির মাধ্যমে ভাড়া দিয়ে থাকেন। তাতে চুক্তি হয় ওই এজেন্সি পাবে এক মাসের টাকা। বাকি ১১ মাস ভাড়ার টাকা পাবেন খোদ মালিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মালিক জানতেই পারেন না কাকে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। অনেক ব্যাচেলার ছেলে মেয়েরা এখানে থাকে। দুজন ভাড়া নিয়ে চার জন থাকছে এরকমও। আবার এজেন্সি যাকে ভাড়া দিচ্ছে সে না থেকে অন্য কেউও থাকে। আবাসনে যে সংস্কৃতি মানা উচিত, তাও মানা হয় না বলে অভিযোগ ওই ব্যক্তির।
উল্লেখ্য, এদিন বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ হঠাৎই গুলির শব্দ শোনা যায় নিউটাউনের সাপুরজি-পালনজি আবাসনে। সঙ্গে নিজেদের কাজ ফেলে নীচে নেমে আসেন আবাসনের বাসিন্দারা। প্রত্যক্ষদর্শী এক বাসিন্দা বলেন, আমার বাড়ি ব্যারাকপুরে। চলে যাব বলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার গাড়ির ড্রাইভার বলেন, ভেতরে ঢুকতে পারছি না। বি ব্লকের সামনে গুলি চলছে। সঙ্গে সঙ্গে নীচে নেমে আসি আমি। আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, অন্তত ৩ থেকে ৪ রাউন্ড গুলি চলেছে। দেখতে পাই বিল্ডিংয়ের ঢোকার মুখেই গুলি চালানো হচ্ছে। এক পুলিশকর্মীর হাতে লেগেছে। স্পষ্টতই, গোটা ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত তারা। এই ঘটনার পরই গোটা আবাসন চত্বরে কড়া নিরাপত্তা পুলিশের।
নিহত দুষ্কৃতী জয়পাল ভুল্লারের বাবা ছিলেন পঞ্জাবের পুলিশের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর। ফিরোজপুরের বাসিন্দা জয়পাল নিজে ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র। বরবারের মেধাবি ছাত্র হলেও ক্রমেই অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন তিনি। একাধিক খুন, ডাকাতি, তোলাবাজিতে অভিযুক্ত গ্যাংস্টার জয়পাল। পাতিয়ালায় একটি ব্যাঙ্ক ডাকাতিতেও নাম জড়ায় জয়পালের। আরও একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৩০ কেজি সোনা লুঠে অভিযুক্ত ছিল সে। ৪০টির বেশি অভিযোগ ছিল তার নামে। জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে ভাটিন্দায় খুন হয় জয়পাল ভুল্লারের বন্ধু শের খুব্বা। বদলা নিতে হিমাচল প্রদেশে গিয়ে একজনকে খুন করে জয়পাল।
পুলিশ সূত্রে খবর, পাক সীমান্তে মাদক পাচার করত ২ গ্যাংস্টার জসসি, জসপাল। ১০ মে পঞ্জাবে পুলিশ পিস্তল ছিনতাই করে তারা। ১৫ মে লুধিয়ানায় ২ পুলিশকে খুন করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ২৮ মে গ্বালিয়রে জসপালের সঙ্গী ২জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২ পুলিশকর্মীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত জয়পাল ও তার তিন শাগরেদের মাথায় দাম ঘোষণা করা হয় ১৯ লক্ষ টাকা। এরমধ্যে শুধু জয়পাল ভুল্লারেরই মাথার দাম পুলিশ ঘোষণা করে ১০ লক্ষ টাকা।
এদিন আবাসনে অভিযান চালানোর সময় এসটিএফকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। আহত হয়েছেন এক এসটিএফ অফিসার। আহত এসটিএফ অফিসারের নাম কার্তিক মোহন ঘোষ। দুষ্কৃতীদের গুলিতে পিঠ, কাঁধে গুলির আঘাত এসটিএফ অফিসারের। বর্তমানে সল্টলেক আমরিতে চিকিৎসাধীন অফিসার। এদিন এসটিএফ এডিজি বিনীত গোয়েল বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই এই দুষ্কৃতীদের খোঁজ করছিলাম। আজ আমাদের কাছে পাকা খবর আসে, ওরা ওখানে লুকিয়ে আছে। তখন আমরা দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য অভিযান চালাই। আমরা যখন গ্রেফতার করতে যাই, তখন ওরা বাধা দেয় এবং গুলি চালাতে শুরু করে। এরপর আমরাও পাল্টা গুলি চালাই। গুলির লড়াইয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের একজন ইন্সপেক্টরের গুলি লেগেছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৯ রাউন্ড গুলি এবং ৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।“
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)