এক্সপ্লোর

Mahesh Rathyatra: পুরীর মতোই সুদীর্ঘ ইতিহাস, মাহেশ ঘিরেও রয়েছে রোমাঞ্চকর সব কাহিনি

সামনেই রথযাত্রা। গতকাল আমরা দেখেছি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্যেমোড়া বিভিন্ন তথ্য। আজ জানা যাক দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা হুগলির মাহেশের বিভিন্ন জনশ্রুতি।

শ্রীরামপুর : পুরী। হিন্দু মতে, চার ধামের অন্যতম। আবার শ্রী ক্ষেত্র নামেও পরিচিত। এবঙ্গেও রয়েছে শ্রী ক্ষেত্র। হুগলির মাহেশে। ঐতিহ্যের দিকে পুরীর রথযাত্রার পরেই মাহেশের স্থান। 

পুরীর মতো মাহেশের জগন্নাথ মন্দির ঘিরেও রয়েছে নানা জনশ্রুতি। পশ্চিমবঙ্গে সবথেকে পুরানো ও বড় রথযাত্রা উৎসবও পালিত হয় এখানে। পুরীর মতো মাহেশের রথযাত্রারও রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। যার পরম্পরা চলে আসছে ১৩৯৬ সাল থেকে।

মাহেশকে বলা হয় 'নব নীলাচল'। অর্থাৎ নতুন পুরী। এখানকার রথযাত্রা উৎসবকে বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রতি বছর এই উপলক্ষে ২ লক্ষর বেশি ভক্তর সমাগম হয়। 

কথিত আছে, জগন্নাথদেবের ভক্ত শ্রীচৈতন্য একবার পুরী যাত্রার পথে মাহেশের মন্দির পরিদর্শনে এসেছিলেন। এখানে তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন এবং গভীর সমাধিতে চলে যান। তার পর থেকে এই জায়গার নামকরণ হয় নব নীলাচল।

হুগলিতে জিটি রোডের ধারে ৬০০ বছরের বেশি ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে আজও উজ্জ্বল মাহেশের মন্দির। জনশ্রুতি আছে, ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক সাধুকে একবার পুরীর জগন্নাথকে ভোগ নিবেদন করতে দেওয়া হয়নি। মনমরা হয়ে ওই সাধু আমৃত্যু অনশনে বসেন। কয়েকদিন পরে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারীর স্বপ্নে আসেন প্রভু জগন্নাথ। তাঁকে অনশন তুলে নিতে বলেন। তিনি নিজেও তাঁর ভক্তের কাছ থেকে ভোগ খেতে চান বলে জানান জগন্নাথ। ধ্রুবানন্দকে মাহেশে যেতে বলেন তিনি। আশ্বাস দেন, নদী দিয়ে নিমকাঠ পাঠানোর । যা দিয়ে তৈরি হবে বিগ্রহ।

মাহেশে ফিরে আসেন সাধু। গঙ্গার তীরে শুরু করেন সাধনা। এক ঝড়বৃষ্টির রাতে একটি নিমকাঠ পান তিনি। তা দিয়েই বলরাম, জগন্নাথ ও শুভদ্রার মূর্তি তৈরি করেন। ছোট ওই শহরে এর পর একটি মন্দির স্থাপন করেন। আজ ওই মন্দিরের নতুন পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে। কিন্তু রথযাত্রা চলছে সেই ১৩৯৬ সাল থেকেই। ১৮৮৫ সাল থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে এখনকার রথটি।

মাহেশের মন্দির এবং বিগ্রহ তৈরি করেছিলেন ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী। কিন্তু, রথযাত্রা উৎসব শুরু করেন শ্রীচৈতন্যর শিষ্য কমলাকর পিপলাই । যিনি পরে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত হন। পিপলাই পরিবারের উত্তরসূরীরাই রয়েছেন মন্দিরের তত্ত্বাবধানে।

মাহেশের রথযাত্রার ইতিহাস

১৭৯৭ সালে মন্দিরে কাঠের রথ দান করেন রামকৃষ্ণ দেবের শিষ্য বলরাম বসুর দাদু কৃষ্ণরাম বসু। কয়েক বছর পর এটি পুড়ে যায়। আরও দুটি রথের একই পরিণতি হয়। এর পর ১৮৮৫ সালে তৎকালীন হুগলি জেলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ান কৃষ্ণচন্দ্র বসুর পৃষ্ঠপোষকতায় লোহার রথ তৈরি করে মার্টিন বার্ন কোম্পানি। সেই রথই এখনও চলছে। এটি নবরত্ন রথ। ১২টি লোহার চাকা আছে। চারতল বিশিষ্ট এই রথ ৫০ ফুট উচ্চতার এবং ১২৫ টন ওজনের। রথের সামনে আছে তামার দুটি ঘোড়া। ঐতিহ্যবাহী জিটি রোড দিয়ে হাজার হাজার ভক্ত প্রভু জগন্নাথকে তাঁর 'মাসির বাড়ি' নিয়ে যাওয়ার জন্য রথের দড়ি টানেন।

স্থানীয় রীতি-নীতি

মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম রথযাত্রার জন্য যে বিগ্রহ তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন তা আজও ব্যবহার হয়। স্নানযাত্রার দিন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে প্রচুর পরিমাণে দুধ ও গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই স্নানের ফলে জ্বর ভোগ করেন দেবতারা। ধীরে ধীরে তাঁদের জ্বর কমে এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্নানযাত্রার কয়েক দিন পরে হয় 'অঙ্গরাগ' উৎসব। যখন বিগ্রহগুলির রং করা হয়। এর পর 'নবযৌবন উৎসব'। রথযাত্রার একদিন আগে রাজা হিসেবে অভিষেক হয় প্রভু জগন্নাথের। সাধারণ দিনগুলিতে ভক্তদের বিগ্রহ স্পর্শ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু, রথ এবং উল্টো রথের দিন সকলেই বিগ্রহ স্পর্শ করতে পারেন। মালা পরিয়ে প্রার্থনা জানাতে পারেন। এটা এমন একটা সুযোগ যা মিস করতে চান না ভক্তরাও।

এছাড়াও এই উৎসবের রয়েছে আরও একটি বড় অংশ। প্রভুকে তাঁর পছন্দের মিষ্টি নিবেদন করা হয়। জনশ্রুতি অনুযায়ী, একবার জগন্নাথদেব মাহেশে এসেছিলেন এখানকার স্থানীয় মিষ্টির স্বাদ নিতে। এক তরুণের বেশে তিনি মন্দিরের কাছে মহেশ চন্দ্র দত্তর দোকানে ঢুকেছিলেন। 'গুটখে সন্দেশ' খেতে। তিনি এই সন্দেশ এত পছন্দ করে ফেলেন যে বেশ কয়েকটি খেয়ে ফেলেন। কিন্তু, তাঁর কাছে টাকা ছিল না। তাই তিনি নিজের সোনার বালাটি মিষ্টির দাম মেটাতে দিয়ে দেন। পরের দিন পুজোর সময় পুরোহিত দেখেন, বালাটি নেই। খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। শেষমেশ তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন। সব বুঝতে পেরে মিষ্টির দোকানদারও অবাক হয়ে যান। এখনও পর্যন্ত ভক্তরা এই মাহেশে পরিদর্শনে এল এই দোকানের গুটখে সন্দেশ কিনে নিয়ে তা প্রভুকে নিবেদন করেন।

আরও পড়ুন
Sponsored Links by Taboola

লাইভ টিভি

ABP Live TV
ABP আনন্দ
ABP અસ્મિતા
ABP ਸਾਂਝਾ
ABP न्यूज़
ABP माझा
POWERED BY
sponsor

সেরা শিরোনাম

Gold Price Today: আজ কমে পাবেন সোনার রেট, রাজ্যে কত হল দাম ?
আজ কমে পাবেন সোনার রেট, রাজ্যে কত হল দাম ?
Kia Seltos Launched : দুর্দান্ত ডিজাইন, নজরকাড়া চেহারা নিয়ে এল কিয়া সেলটস, টাটা সিয়েরা, হুন্ডাই ক্রেটার সঙ্গে হবে প্রতিযোগিতা
দুর্দান্ত ডিজাইন, নজরকাড়া চেহারা নিয়ে এল কিয়া সেলটস, টাটা সিয়েরা, হুন্ডাই ক্রেটার সঙ্গে হবে প্রতিযোগিতা
Indias Growth Forecast : ভারতের অর্থনীতি 'সুপার ফাস্ট', এবার এশিয়ান ঢেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক দিল সুখবর
ভারতের অর্থনীতি 'সুপার ফাস্ট', এবার এশিয়ান ঢেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক দিল সুখবর
New Kia Seltos or Hyundai Creta : নতুন কিয়া সেলটস না হুন্ডাই ক্রেটা নেবেন ? ডিজাইন ও পারফরম্যান্সে কোন গাড়ি এগিয়ে ?
নতুন কিয়া সেলটস না হুন্ডাই ক্রেটা নেবেন ? ডিজাইন ও পারফরম্যান্সে কোন গাড়ি এগিয়ে ?

ভিডিও

GhantaKhanek Sange Suman(১১.১২.২০২৫) পর্ব ২ : 'একটা নাম বাদ গেলেও ধর্নায় বসব,' SIR-নিয়ে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর | ABP Ananda LIVE
GhantaKhanek Sange Suman(১১.১২.২০২৫) পর্ব ১ : SIR-এর ফর্ম জমার শেষদিনেও দিনভর উত্তেজনা । পর্যবেক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ
Bengal SIR: ফলতার দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিশেষ রোল অবজার্ভারকে ঘিরে বিক্ষোভ | ABP Ananda Live
BJP News: আমতা, উদয়নারায়ণপুরে কাজ নেই, বাড়ি ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে গেছেন, দায়ী মমতা:শুভেন্দু
Suvendu Adhikari: 'মন্দির তো করতেই পারে, সরকারি টকায় মন্দির হয় না', বললেন শুভেন্দু | ABP Ananda Live

ফটো গ্যালারি

ABP Premium

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Gold Price Today: আজ কমে পাবেন সোনার রেট, রাজ্যে কত হল দাম ?
আজ কমে পাবেন সোনার রেট, রাজ্যে কত হল দাম ?
Kia Seltos Launched : দুর্দান্ত ডিজাইন, নজরকাড়া চেহারা নিয়ে এল কিয়া সেলটস, টাটা সিয়েরা, হুন্ডাই ক্রেটার সঙ্গে হবে প্রতিযোগিতা
দুর্দান্ত ডিজাইন, নজরকাড়া চেহারা নিয়ে এল কিয়া সেলটস, টাটা সিয়েরা, হুন্ডাই ক্রেটার সঙ্গে হবে প্রতিযোগিতা
Indias Growth Forecast : ভারতের অর্থনীতি 'সুপার ফাস্ট', এবার এশিয়ান ঢেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক দিল সুখবর
ভারতের অর্থনীতি 'সুপার ফাস্ট', এবার এশিয়ান ঢেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক দিল সুখবর
New Kia Seltos or Hyundai Creta : নতুন কিয়া সেলটস না হুন্ডাই ক্রেটা নেবেন ? ডিজাইন ও পারফরম্যান্সে কোন গাড়ি এগিয়ে ?
নতুন কিয়া সেলটস না হুন্ডাই ক্রেটা নেবেন ? ডিজাইন ও পারফরম্যান্সে কোন গাড়ি এগিয়ে ?
Kalker Rashifal (11 Dec, 2025) : প্রচুর চ্যালেঞ্জ আসছে কিছুক্ষণের মধ্যেই, সাবধান হয়ে যান এই রাশি; ছোট্ট একটা ভুলেও বড় ঝামেলা
প্রচুর চ্যালেঞ্জ আসছে কিছুক্ষণের মধ্যেই, সাবধান হয়ে যান এই রাশি; ছোট্ট একটা ভুলেও বড় ঝামেলা
Kalker Rashifal (11 Dec, 2025) : কিছুক্ষণের মধ্যেই অর্থভাগ্য চমকাবে ২ রাশির, অত্যন্ত ভাল সময় হওয়ায় বড় সিদ্ধান্ত
কিছুক্ষণের মধ্যেই অর্থভাগ্য চমকাবে ২ রাশির, অত্যন্ত ভাল সময় হওয়ায় বড় সিদ্ধান্ত
Morocco Buildings Collapse: পাশাপাশি থাকা ২টি বিল্ডিং ভেঙে পড়ল হুড়মুড়িয়ে, অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু মরক্কোয়; জখম আরও ১৬
পাশাপাশি থাকা ২টি বিল্ডিং ভেঙে পড়ল হুড়মুড়িয়ে, অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু মরক্কোয়; জখম আরও ১৬
Public Sector Banks: গত সাড়ে পাঁচ বছরে ৬,১৫০,০০০,০০০,০০০ টাকার ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলেছে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কগুলি, সংসদে জানাল কেন্দ্র
গত সাড়ে পাঁচ বছরে ৬,১৫০,০০০,০০০,০০০ টাকার ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলেছে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কগুলি, সংসদে জানাল কেন্দ্র
Embed widget