এক্সপ্লোর
Babita Sarkar : 'আপনি ভুল করেছেন, শাস্তি পেতে হবে', ববিতার ভূমিকায় ক্ষুণ্ণ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
আর ববিতার জায়গায় চাকরি পেলেন মেধা তালিকায় নাম থাকা, পরবর্তী দাবিদার, অনামিকা রায়

অনামিকা রায় ও ববিতা সরকার
1/10

'দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ছাত্রীদের শিক্ষা দেব।' মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দিয়ে বলেছিলেন ববিতা সরকার। ৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে হাইকোর্টের নির্দেশে শিলিগুড়ির ববিতা যখন মেখলিগঞ্জের স্কুলে কাজে যোগ দেন, তখন তাঁর সেই সাফল্যকে কার্যত উদযাপন করেছিল গোটা রাজ্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছিল সকলেই। কারণ, তাঁর করা মামলায়, দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি যায় রাজ্য়ের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার।
2/10

এবিপি আনন্দের 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে এসে নিজের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন ববিতা। জানিয়েছিলেন, কীভাবে নিজের 'হক' আদায় করতে দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছিল তাঁকে। ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা হয়েছিল। ২০১৭ সালের ২ মে সেই পরীক্ষার ফল বেরোয়। অভিযোগ, SSC-র প্রথম তালিকায় অঙ্কিতা অধিকারীর নামই ছিল না। ২০ নম্বরে নাম ছিল ববিতার। এর পর যখন নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয় এসএসসি-র তরফে, তাতে নিজের নাম ২১ নম্বরে দেখতে পান ববিতা। প্রথমে অতশত মাথাতেই আসেনি তাঁর। বরং একধাপ নেমে গেলেন কীভাবে, সেই প্রশ্নই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। তাতেই মাথা ঠান্ডা করে ফের তালিকায় চোখ বোলাতে শুরু করেন। তাতেই চোখে পড়ে এক নম্বরে জ্বলজ্বল করছে অঙ্কিতা অধিকারীর, আগে যাঁর নাম প্রথম ২০-র মধ্যেই ছিল না। সেই থেকে শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। তিনি তখন বলেছিলেন, "এর পর একে একে এসএসসি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া থেকে তথ্য জানার অধিকার আইনে RTI ফাইল করা, কিছুই বাদ দিইনি আমি। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, কোন মন্ত্রবলে একধাপ পিছিয়ে গেলাম, কোন বিষয়ে, কত নম্বর পেয়েছি, তা জানার।"
3/10

দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে জয়ের হাসি হাসেন ববিতা। এরপর গত বছর জুলাই মাসে কাজে যোগ ববিতা। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে, সেই চাকরি এবং অঙ্কিতার পাওয়া বেতনের পুরোটাই পেয়েছিলেন মামলাকারী ববিতা সরকার। নম্বর-বিভ্রাটের জেরে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশেই চাকরি খোয়ালেন স্কুল শিক্ষিকা ববিতা!
4/10

আর ববিতার জায়গায় চাকরি পেলেন মেধা তালিকায় নাম থাকা, পরবর্তী দাবিদার, অনামিকা রায়। তিন সপ্তাহের মধ্য়ে তাঁর চাকরির নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। এদিকে, অঙ্কিতা অধিকারীর বেতনের যে ১৬ লক্ষ টাকা ববিতা পেয়েছিলেন, সেই পুরোটাই এবার পাবেন অনামিকা রায়। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছেন ববিতা। তাই বেশি নম্বর দিয়েছে কমিশন। সেই কারণেই, ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ।
5/10

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে, কয়েক মাস আগে, হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিপ্রার্থীদের নম্বরের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আর তারপরই, প্রকাশ্যে আসে ববিতার নম্বর-বিভ্রাট! চাকরিপ্রার্থী অনামিকা দাবি করেন, ফর্ম ফিলাপের সময় ববিতা লিখেছিলেন, তিনি স্নাতক স্তরে ৮০০ র মধ্যে ৪৪০ পেয়েছেন। অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ। কিন্তু, ফর্মে লেখা তিনি ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন।
6/10

এর পরিপ্রেক্ষিতে ববিতার উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, আপনি ভুল করেছেন। আপনাকে শাস্তি পেতে হবে। আপনার উদ্দেশে আমি কড়া পদক্ষেপ নিতে পারতাম, কিন্তু নিচ্ছি না। এরপরই মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত। এবং কাউন্সেলিং-এর পর, অনামিকা রায়কে সুপারিশপত্র দেওয়ার জন্য় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।
7/10

অনামিকা বলছেন, ৬০ শতাংশের বেশি পেলে, অ্য়াকাডেমিক স্কোর হয় ৮। আর ৬০ শতাংশের কম পারসেনটেজ হলে, স্কোর হবে ৬। তার ভিত্তিতেই ববিতাকে অ্য়াকাডেমিক স্কোরে কমিশন ২ নম্বর বেশি দিয়েছে বলে দাবি। ফলে, ববিতার অ্য়াকাডেমিক স্কোর যেখানে ৩১ হওয়ার কথা। সেখানে তাঁকে ৩৩ নম্বর দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
8/10

ববিতা সরকারের নিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায়, চাকরির দাবি তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন, মেধা তালিকায় নাম থাকা, পরবর্তী দাবিদার, কোচবিহারেরই বাসিন্দা, অনামিকা রায়। সেই মামলায় আগেই ববিতাকে অঙ্কিতা অধিকারীর থেকে পাওয়া ১৬ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। এদিন ববিতাকে ওই ১৬ লক্ষ টাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
9/10

কিন্তু ববিতা জানান, এই মুহূর্তে পুরো টাকা তিনি ফেরত দিতে পারবেন না। একটি সেকেন্ড হ্য়ান্ড গাড়ি কিনেছেন এবং মামলার জন্য়ও কিছু খরচ হয়েছে। গাড়ি বিক্রি করে টাকা ফেরত দিতে হবে। এর জন্য় কিছুটা সময় চান তিনি। এরপরই, ববিতাকে বিচারপতি নির্দেশ দেন, ১৯ শে মে-র মধ্য়ে প্রথম কিস্তির ১১ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে । এবং বাকি টাকা দিতে হবে ৬ জুনের মধ্য়ে। তবে, এতদিনে চাকরির জন্য যে বেতন পেয়েছেন ববিতা, সেই টাকা তাঁকে ফেরত দিতে হবে না।
10/10

এদিকে অনামিক বলছেন, কারও (ববিতা) চাকরি চলে যাক আমি চাইনি। কমিশনের ভুলে এটা হল। কমিশন ঠিক করলে অনেক আগেই আমার চাকরি পাওয়ার কথা।
Published at : 16 May 2023 04:11 PM (IST)
আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
POWERED BY
Advertisement
সেরা শিরোনাম
আইপিএল
ব্যবসা-বাণিজ্যের
আইপিএল
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement
ট্রেন্ডিং
