Sonarpur Sand Racket: বদল শুধু পন্থায়, সোনারপুরে ফের রমরমিয়ে চলছে বালিপাচার চক্র !
Sand Smuggling: প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে কড়া বার্তার পরেও ছবির কোনও বদল দেখা যাচ্ছে না।
হিন্দোল দে, সোনারপুর : সোনারপুরে ফের রমরমিয়ে চলছে বালিপাচার চক্র। সোনারপুর উত্তর বিধানসভার খেয়াদহে প্রকাশ্য দিবালোকে চলছে বালিপাচার। সারাদিনই চলছে বালি তোলার কাজ।
প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে কড়া বার্তার পরেও ছবির কোনও বদল দেখা যাচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত বালিপাচার চক্র সক্রিয় রয়েছে। সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত খেয়াদহ এলাকায় নতুন করে বালি মাফিয়ারা বেআইনি পথে বালি তুলে সেইসব বালি লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকায় শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রশাসনের একেবারে নাকের ডগায় হচ্ছে এটা। আগেও সংবাদ মাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। বেশ কয়েক জায়গায় বালিপাচার বন্ধ করা হলেও, আবারও সেই পাচারচক্র সক্রিয় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এখন তাদের পন্থা পাল্টে গিয়েছে। আগে তারা দিনে-দুপুরে সবসময় বালি বিক্রি করত। সেই কাজ এখন রাতে হচ্ছে। কিন্তু, বালি তোলার কাজ দিনেই হচ্ছে। পরে, রাতের দিকে বড় বড় লরি এবং অন্য গাড়িতে করে বিভিন্ন জায়গায় বালি পাচার করা হচ্ছে।
'গরু, কয়লা, পাথর, বালি সবথেকে বেশি খায় বিজেপি। টাকা যায় পুলিশের মাধ্য়মে। ওভারলোডিং ট্রাক থেকে যায়। আমাদের কিছু লোক আছে…যাতে ইডি-সিবিআই না ধরে।' সোমবার বিকেলে কয়লা-বালি পাচার নিয়ে বিজেপির পাশাপাশি প্রশাসনের একাংশকে এইভাবে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, তার পরেও সোনারপুরের খেয়াদহের চিত্রটা বদলায়নি। ফের সক্রিয় বালি মাফিয়া। প্রশ্নের মুখে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা।
থামেনি বালি পাচার
কথায় বলে - সে গুড়ে বালি। কিন্তু, বাস্তবে হয়তো বালিতেই আসল গুড়। তাই, মুখ্যমন্ত্রীর কড়াবার্তার পরও একদিকে যেমন অবাধে চলছে বালি পাচার, অন্যদিকে, বালি বোঝাই ট্রাক থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা।
সোমবার রাত তখন ১০টা ৪৫। কাটোয়া-কালনা রোডের জাজিগ্রাম মোড়ে রাখা রয়েছে পুলিশের নাকা চেকিং লেখা গার্ডরেল। আর রাস্তা দিয়ে সারি দিয়ে যাচ্ছে বালি বোঝাই লরি, ডাম্পার। তখনই দেখা গেল সেই লরি, ডাম্পার দাঁড় করিয়ে টাকা নিচ্ছেন একজন। কিন্তু কেন টাকা নেওয়া হচ্ছে ? প্রশ্ন করতেই দে দৌড়।
গরু, কয়লা, বালি পাচার নিয়ে বলতে গিয়ে প্রশাসনের একাংশেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার রাতে কাটোয়াতেও দেখা গেল, ঠিক যেখানে দাঁড়িয়ে টাকা নিচ্ছিলেন এই ব্যক্তি, তার সামান্য দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশের গাড়ি।
দীর্ঘদিন ধরেই চরখিব্রিজের কাছে অজয়ের বাঁশতলা বালিঘাট থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা হয়। একথা কারও অজানা নয়। তারপর সেই বালি রাতে লরি কিংবা ডাম্পারে করে কাটোয়া-কালনা রোড ধরে নদিয়ার নবদ্বীপের দিকে চলে যায়। কাটোয়ার BLRO জানিয়েছেন, কাটোয়ায় যে বালিঘাট রয়েছে, তার কোনওটির লাইসেন্স নেই। সেখানে অবৈধভাবে বালি তোলা হয়।
তবে এবারই প্রথম নয়, অতীতে একাধিকবার অবৈধ বালি খাদান নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালি মাফিয়ার দৌরাত্ম্য ঠেকাতে,
২০২১ সালের জুলাই মাসে, ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি’র ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু, এত কিছুর পরও যে কোনওকিছু বদলায়নি, তা বুঝিয়ে দিল এই ছবিগুলিই।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।