'করোনার মোকাবিলায় ১৫০ দেশকে সাহায্য করেছে ভারত, অন্যরা শিক্ষা নিতে পারে', রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৫ বর্ষপূর্তিতে বক্তৃতা প্রধানমন্ত্রীর
Prime Minister Narendra Modi Speech: মোদি বলেন, "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাষ্ট্রপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল, আজ প্যানডেমিকের সময়ে এর পুনর্জন্মের সময় এসেছে..."
নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বক্তৃতা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানিয়ে রাখলেন, অন্যান্য দেশ ভারতের উন্নয়ন থেকে শিক্ষা নিতে পারে। মোদি বলেন, চাইলে ভারতের থেকে শিক্ষা নিতে পারে অন্য দেশ। উন্নয়নশীল দেশকেও সাহায্য করে চলেছে ভারত।
এখন কোভিড-১৯ অতিমারীর আতঙ্কের গ্রাসে গোটা বিশ্ব। এবছরের বক্তৃতার থিম কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়টি। তিনি বলেন, করোনায় ভারতে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্য ব্যবস্তা সাহায্য করেছে। নিচু স্তরের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর জন্যেই মৃত্যুর হার কম। বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা সুস্থতার হার ভারতে।
রাষ্ট্রপুঞ্জে আজ করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সমন্বয় নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেন, কোভিড মহামারী সমস্ত দেশের শক্তির পরীক্ষা নিয়েছে। ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। যা অর্থনীতিকে ট্র্যাকে নিয়ে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, কমন চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের হাত মেলাতে হবে। বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাষ্ট্রপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। আজ প্যানডেমিকের সময়ে এর পুনর্জন্মের সময় এসেছে। গ্লোবাল মাল্টিল্যাটারাল সিস্টেম সংস্কারের ডাক দিচ্ছি।<
প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে রাখেন, ভূমিকম্প হোক বা ঘূর্ণিঝড়-- যে কোনও বিপর্যয়ে ভারত এগিয়ে এসেছে। বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ১৫০টি দেশকে সাহায্য করেছি। সার্ক কোভিড ইমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ ছাড়াও একাধিক ইস্যুতে কথা বলেন মোদি। বলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের ৫০ প্রতিষ্ঠাতা দেশের মধ্যে ভারত ছিল একটি। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য ১৯৩টি দেশ। সময় বেড়েছে। এই সংস্থার প্রতি আশা বেড়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের উন্নয়নমূলক কাজে সমর্থন জুগিয়েছে ভারত। ইকোশক অ্যাজেন্ডায় সমর্থন করেছে। ভারত নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। ভারত উন্নয়নের নিরিখে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছলে বিশ্বের লক্ষ্যও অনেকাংশে পূরণ হবে।
আমাদের লক্ষ্য সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস। যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে। খাদ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, সবকিছুর ক্ষেত্রে। ভারত অনেক উন্নতি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর আমরা গাঁধীজির ১৫০তম জন্মদিন উদযাপন করেছি। ৫ বছরে বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করেছি। তাতে গ্রাম স্বচ্ছ হয়েছে। মহিলাদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে লিঙ্গবৈষম্য ঘুচিয়েছি।
মোদি বলেন, আমরা গরিবদের জন্য ঘর তৈরি করেছি। গরিবদের জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প। গ্রামের ৭ কোটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য। ১০ লক্ষের বেশি মহিলা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
তিনি যোগ করেন, গত ৬ বছরে আমরা ৪০০ মিলিয়ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। ২২০ মিলিয়ন অ্যাকাউন্ট মহিলাদের। প্রযুক্তির ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছি। ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের সুবিধা দিতে পেরেছি।
খাদ্যসুরক্ষা প্রোগ্রাম ৮৩০ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে। ২০২২-এর মধ্যে প্রত্যেক ভারতীয়র মাথায় ছাদ থাকবে। আমরা নিজেদের গ্রহের প্রতি দায়িত্ব ভুলে যাইনি। কার্বন নির্গমন কমাতে সক্ষম হয়েছে ভারত। গরিবের ঘরে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুন ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের দাবি দীর্ঘদন ধরেই জানিয়ে আসছে নয়াদিল্লি।