Assembly Election Result: রাত পোহালেই ৫ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল, আগ্রহ তুঙ্গে উত্তরপ্রদেশ নিয়ে
Assembly Poll Result 2022: উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের ফল নিয়ে আগ্রহ রয়েছে বাংলাতেও। পর্যবেক্ষকদের মতে, সেখানে বিজেপি জিতলে এ রাজ্যে যে গেরুয়া শিবির চাঙ্গা হবে।
লখনউ: রাত পেরোলেই উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh), পঞ্জাব (Punjab), গোয়া (Goa), উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) ও মণিপুরে (Manipur) বিধানসভা ভোটের (Assembly Elections 2022) ফল ঘোষণা। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশের ফল নিয়ে আগ্রহ সবথেকে বেশি। রাজ্য রাজনীতির পাশাপাশি এখন নজর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের দিকেও।
উত্তরপ্রদেশে এবার ক্ষমতায় আসবে কে? সাড়ে তিন দশকের রেকর্ড ভেঙে যোগী আদিত্যনাথ কি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরবেন? না সাইকেলের তলায় চাপা পড়বে পদ্ম? প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর ঝোড়ো প্রচারের পর কংগ্রেস কি উত্তরপ্রদেশে দাগ কাটতে পারবে? এমন নানা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে উত্তরপ্রদেশের ফল নিয়ে। দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি বিধানসভা আসন রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। তবে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের ফলের গুরুত্ব, শুধু এই রাজ্যে সীমাবদ্ধ নয়। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, উত্তরপ্রদেশের ভোটের ফলের প্রভাব পড়বে গোটা দেশে। বিশেষ করে দু’বছর পরই যখন দেশে লোকসভা ভোট।
গত বছর বাংলার বিধানসভা ভোটের পর থেকেই লোকসভা ভোটের দামামা বেজে গেছে। বিরোধী-শিবিরে শুরু হয়ে গেছে বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ গঠনের তৎপরতা। যেখানে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কখনও তিনি দিল্লি গিয়ে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কখনও মুম্বই গিয়ে শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারে এসেছিলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন। উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদবের দলের প্রচার করেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে বলা হয়, দিল্লির রাস্তা যায় উত্তরপ্রদেশ হয়ে। অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ জিতলে দিল্লির রাস্তা মসৃণ হয়ে যায়। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের দামামা এখন থেকেই বেজে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে উত্তরপ্রদেশের ভোটের ফলের দিকে নজর রয়েছে সবার। ৩ দশকের রেকর্ড ভেঙে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরবেন যোগী? নাকি বুলডোজারকে আটকে দেবে সাইকেল? সেদিকে নজর রয়েছে সবার।
আরও পড়ুন রাত পোহালেই পাঁচ রাজ্যে ভোট গণনা, কী বলছে Poll Of Polls, কেমন ছিল ২০১৭-র ফলাফল?
সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, এবারও দেশের সবচেয়ে বড় বিধানসভায় ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের ৪০৩টি আসনের মধ্যে ২২৮ থেকে ২৪৪টি আসনে জিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে বিজেপি ও তার সহযোগীরা। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ও জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডি জোট জিততে পারে ১৩২ থেকে ১৪৮টি আসনে। ১৩ থেকে ২১টি আসনে জিততে পারে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতে পারে ৪ থেকে ৮টি আসন। ২ থেকে ৬টি আসন যেতে পারে অন্যদের ঝুলিতে।
সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও তার সহযোগীরা পেতে পারে ৪১ শতাংশ ভোট। ৩৪ শতাংশ ভোট যেতে পারে সমাজবাদী পার্টি-আরএলডি জোটের পক্ষে। মায়াবতীর বিএসপি পেতে পারে ১৭ শতাংশ ভোট। ৫ শতাংশ ভোট যেতে পারে কংগ্রেসের ঝুলিতে এবং অন্যরা প্রায় ৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে উত্তরপ্রদেশে। এই বুথ ফেরত সমীক্ষার ক্ষেত্রে সমীক্ষকরা কথা বলেছেন উত্তরপ্রদেশের ১ লক্ষ ৪ হাজার ৫৫৬ জন ভোটারের সঙ্গে। স্টেট লেভেল-এ মার্জিন অফ এরর প্লাস মাইনাস ৩ শতাংশ।
সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, পঞ্জাবে এবার পালাবদলের ইঙ্গিত। কংগ্রেসের থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিতে পারে আম আদমি পার্টি।
পাঞ্জাব বিধানসভার ১১৭টি আসনের মধ্যে আম আদমি পার্টি একাই জয়ী হতে পারে ৫১ থেকে ৬১টি আসনে। অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলার ইঙ্গিত। ২২ থেকে ২৮টি আসন পেতে পারে কংগ্রেস। ২০ থেকে ২৬টি আসনে জয়ী হতে পারে শিরোমণি অকালি দল ও বিএসপি জোট। বিজেপি ও অমরিন্দর সিংহের দলের জোটের ঝুলিতে যেতে পারে মাত্র ৭ থেকে ১৩টি আসন। ১ থেকে ৫টি আসন পেতে পারে অন্য দলগুলি।
সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত, প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে ৩৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে আম আদমি পার্টি। কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতে পারে ২৭ শতাংশ ভোট। ২১ শতাংশ ভোট পেতে পারে শিরোমণি আকালি দল। এছাড়া বিজেপি-অমরিন্দর জোট ১০ শতাংশ এবং অন্য দলগুলি ৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে বলে সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত।
সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষার ক্ষেত্রে সমীক্ষকরা কথা বলেছেন পঞ্জাবেরর ১৬ হাজার ৫৩৩ জন ভোটারের সঙ্গে। মার্জিন অফ এরর প্লাস মাইনাস ৩ শতাংশ।
বিজেপির দখলে থাকা মণিপুর বিধানসভা এবার ত্রিশঙ্কু হতে পারে। সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষায় পাওয়া ইঙ্গিত অনুযায়ী, ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় শাসক দল বিজেপি ২৩ থেকে ২৭টি আসন জিততে পারে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস পেতে পারে ১২ থেকে ১৬টি আসন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১০ থেকে ১৪টি আসন পেতে পারে। নাগা পিপলস ফ্রন্ট ৩ থেকে ৭টি আসন এবং অন্যান্যরা ২ থেকে ৬টি আসন পেতে পারে। অর্থাৎ, কোনও দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।
সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত, প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে বিজেপি ৩৮ শতাংশ ভোট পেতে পারে। কংগ্রেস পেতে পারে ২৯ শতাংশ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১১ শতাংশ, নাগা পিপলস ফ্রন্ট ৯ শতাংশ এবং অন্যান্যরা ১৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে।
এই বুথ ফেরত সমীক্ষার ক্ষেত্রে সমীক্ষকরা কথা বলেছেন মণিপুরের ৫ হাজার ২৬৯ জন ভোটারের সঙ্গে। মার্জিন অফ এরর প্লাস মাইনাস ৩ শতাংশ।
সি ভোটার, জন কি বাতের বুথ ফেরত সমীক্ষায় গোয়া বিধানসভার ফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার ইঙ্গিত। অন্যদিকে, সিএনএক্সের বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলতে পারে বিজেপি। গ্রাউন্ড জিরো রিসার্চের বুথ ফেরত সমীক্ষায় পাল্লা ঝুঁকে কংগ্রেসের দিকে। কয়েকটি আসন যেতে পারে তৃণমূল-এমজিপি জোটের ঝুলিতে।
এবার উত্তরাখণ্ড বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারে কংগ্রেস। এমনই ইঙ্গিত, সি ভোটার, ম্যাট্রিজের বুথ ফেরত সমীক্ষায়। যদিও ভেটো এবং অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ডে বিজেপিই ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে।