Lok Sabha Speaker Election: এতদিন পারস্পরিক বোঝাপড়া ছিল, এবার ফের লোকসভার স্পিকার নির্বাচন
Lok Sabha Speaker History: কোনও রকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই এযাবৎ লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হয়ে এসেছেন।
নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। ফলে শরিক দলগুলিকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে সরকার গড়তে হয়েছে তাদের। এবার স্পিকার নির্বাচন নিয়েও লোকসভায় কড়া টক্করের মুখে গেরুয়া শিবির। এতদিন সর্বসম্মতিতে, বিনা টক্করে যেখানে স্পিকার বাছাই হতো, এবার নির্বাচনে মুখোমুখি হচ্ছেন দুই প্রার্থী। বিজেপি-র ওম বিড়লার মোকাবিলা করবেন কংগ্রেসের কে সুরেশ। দীর্ঘ সময় পর দেশে লোকসভার স্পিকার নির্বাচন হচ্ছে। (Lok Speaker Election)
কোনও রকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই এযাবৎ লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। ১৮তম লোকসভা এবার সেই নিরিখে ব্যতিক্রম হতে চলেছে। এতদিন শাসক-বিরোধী শিবিরের সাংসদরা মিলে একজনকেই স্পিকারের পদে বসাতে সম্মতি দিতেন। ফলে কোনও লড়াইয়ে না গিয়েই তিনি পদে অধিষ্ঠিত হতেন। (Lok Sabha Speaker History)
ইংরেজ আমলে, ১৯২৫ সালে তদানীন্তন সেন্ট্রাল লেজিস্লেটিভ অ্যাসেম্বলির নিম্নকক্ষ অর্থাৎ তদানীন্তন ইম্পেরিয়াল লেজিস্লেটিভ কাউন্সিলের স্পিকার নির্বাচন হয় প্রথম বার। সে বছর ২৪ অগাস্ট স্পিকার নির্বাচন হয়েছিল, যাতে স্বরাজ পার্টির বিট্টলভাই জে পটেল বিজয়ী হন। পরাজিত হন দিওয়ান বাহাদুর টি রণগাছারিয়ার। ইম্পেরিয়াল লেজিস্লেটিভ কাউন্সিলের সদস্য না হয়েও স্পিকার নির্বাচিত হন বিট্টলভাই। মাত্র দুই ভোটে জয়ী হন তিনি। তিনি পেয়েছিলেন ৫৮টি ভোট, রণগাছারিয়ার ৫৬টি।
১৯৪৬ সালে ইম্পেরিয়াল লেজিস্লেটিভ কাউন্সিলের নির্বাচন হয়, যাতে বিজয়ী হন জিভি মাভলঙ্কার। কাওয়াসজি জাহাঙ্গিরকে পরাজিত করেন তিনি। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫১ সালের অক্টোবর এবং ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম লোকসভা নির্বাচন হয়। সেবার স্পিকার নির্বাচনের রীতি তুলে দেওয়া হয়। শাসক-বিরোধী মিলেমিশে এক ব্যক্তিকেই স্পিকার পদে রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মাভলঙ্কারই ১৯৫২ সালে সর্বসম্মতিতে স্পিকার নির্বাচিত হন।
এর পর ১৯৫৬ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু মাভলঙ্কারকে স্পিকার করতে প্রস্তাব পেশ করেন। একে গোপালন শঙ্কর শান্তারামকে প্রার্থী করতে প্রস্তাব দেন। ৩৯৪ ভোটে সেবার মাভলঙ্কার জয়ী হন। এর পর ১৯৬৭ সালে নীলম সঞ্জীব রেড্ডি টি বিশ্বনাথমকে হারিয়ে স্পিকার নির্বাচিত বন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। সেবার কাগজে লিখে ভোটাভুটি হয়।
১৯৭৬ সালে জরুরি অবস্থার পর স্পিকার নির্বাচন হলে ইন্দিরা গাঁধী বিআর ভগৎের নাম প্রস্তাব করেন। পিএম মেহতা নাম প্রস্তাব করেনজন সঙ্ঘের জগন্নাথরাও জোশীর। ৩৪৪ ভোটে জয়ী হন ভগৎ. জোশী ৫৮টি ভোট পান।
এত বছর পর সেই রীতিই ফিরল। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই শাসক-বিরোধী টানাপোড়েন শুরু হয়। সবচেয়ে বেশিবারের সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও বিরোধী শিবির থেকে কে সুরেশকে প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ না করা নিয়ে শোরগোল বাধে। সেই রেশ কাটার আগেই, ডেপুটি স্পিকারের পদ নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। নিয়ম অনুযায়ী, শাসকদলের কেউ স্পিকারের পদ পান, বিরোধীদের দেওয়া হয় ডেপুটি স্পিকারের পদ।
২০১৪ সালে সেই রীতিতে ছেদ পড়ে। শরিক দলের নেতাকে ডেপুটি স্পিকার করে বিজেপি। ২০১৯ সাল থেকে ডেপুটি স্পিকারের পদ ছিল খালি। স্পিকারের ভূমিকা নিয়েও সেই সময় প্রশ্ন ওঠে। বিরোধীদের কম সময় দেওয়া থেকে ইচ্ছেমতো সাসপেন্ড করার অভিযোগ ওঠে বার বার। এবার তাই গোড়া থেকেই চাপ দিয়ে আসছিল বিরোধীরা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার স্পিকার পদের জন্য় বিরোধীদের সমর্থন চাইলেও, ডেপুটি স্পিকার পদটি বিরোধীদের দিতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার বিজেপি তথা NDA-র প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্পিকার পদে নিজেদের প্রার্থী দাঁড় করাল কংগ্রেস তথা I.N.D.I.A জোট।