Tripura HIV AIDS Cases: ত্রিপুরায় ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে HIV! সংক্রমিত স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারা, রিপোর্ট ঘিরে তোলপাড়
Tripura HIV Report: Tripura State AIDS Control Society-র তরফে পড়ুয়াদের মধ্যে HIV সংক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
আগরতলা: ত্রিপুরায় পড়ুয়াদের মধ্যে মাত্রাছাড়া HIV সংক্রমণ ঘিরে উদ্বেগ। সব মিলিয়ে ৮২৮ জন পড়ুয়ার শরীরে HIV সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে খবর। এর মধ্যে ৪৭ জনের মৃত্যুও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। Tripura State AIDS Control Society যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে, তা নিয়ে সাফাই দিয়েছে রাজ্য সরকার। পরে, Tripura State AIDS Control Society জানায়, ওই পরিসংখ্যান ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মে মাস (Tripura HIV AIDS Cases) পর্যন্ত সময়কালের। তবে গত এক বছরের যে হিসেব দিয়েছে তারা, তা-ও উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
Tripura State AIDS Control Society-র তরফে পড়ুয়াদের মধ্যে HIV সংক্রমণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। রাজ্যের ১৬৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে পরিসংখ্য়ান প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানায় তারা। বিষয়টি সামনে আসার পরই আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজ্যবাসীর মধ্যে। সেই আবহেই সাফাই দিয়েছে ত্রিপুরার মানিক সাহার সরকার। (Tripura HIV Report) তাদের দাবি, রিপোর্টে যে ৮২৮ জনের কথা বলা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৫৭২ জন জীবিত রয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৪৭ জন। অনেকেই উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের অন্যত্র চলে গিয়েছেন।
Tripura State AIDS Control Society- জানিয়েছে, বিবৃতিতে জানিয়েছে, ART সেন্টারগুলিতে ওই ৮২৮ জনের নাম নথিভুক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে তারা, যাঁদের অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল চিকিৎসা চলছে। গত দু'বছরের হিসেব দিয়ে তারা জানিয়েছে, ২০২২-'২৩ সালে ত্রিপুরায় ১৮৪৭ জনের শরীরে HIV সংক্রমণ ধরা পড়ে এবং তাঁদের মধ্যে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৩-'২৪ সালে ত্রিপুরায় নতুন করে সংক্রমিত হন ১৭৯০ জন, যাঁদের মধ্যে ৪৪ জন মারা যান।
ত্রিপুরা সরকার জানিয়েছে, প্রতিদিন রাজ্যে পাঁচ থেকে সাত জন করে HIV সংক্রমিত ধরা পড়ছেন। ২০২৪ সালে মে মাস পর্যন্ত ত্রিপুরার অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি সেন্টারগুলিতে (ART) ৮ হাজার ৭২৯ জনের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। এঁদের মধ্যে বর্তমানে HIV পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৭৪ জন, ৪ হাজার ৫৭০ জন পুরুষ, ১ হাজার ১০৩ জন মহিলা। রূপান্তরকামী HIV পজিটিভ রোগী একজন।
There is a report circulating that Tripura has 828 students registered as HIV positive and 47 of them died. The total figure of 828 and 47, however, is from April 2007 to May 2024. It is implied that 828 students registered over the last many years in ART centres are all getting… pic.twitter.com/h1PU1ArWM0
— ANI (@ANI) July 10, 2024
আরও পড়ুন: Supreme Court: মুসলিম মহিলাদেরও খোরপোষ প্রাপ্য, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
১৯৯৯ সালে Tripura State AIDS Control Society স্থাপিত হয়। তারা জানিয়েছে, এখনও রোজই পাঁচ থেকে সাত জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘুরে ঘুরে এই তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা। রাজ্যের কোথায় কোথায় সংক্রমণের হার বেশি, তারও বিশদ তথ্য তুলে ধরেছে তারা।
Tripura State AIDS Control Society-র দাবি, অভিজাত পরিবারের ছেলেমেয়েদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-বাবা ভাল সরকারি চাকরি করেন। অর্থাৎ পরিবারের আয় বেশি। ফলে ছেলেমেয়ের সব আবদার মেনে নেন। যখন ভুল বুঝতে পারেন, তত দিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেওয়ার দরুণই পড়ুয়াদের মধ্যে HIV সংক্রমণ বাড়ছে বলে দাবি Tripura State AIDS Control Society-র। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেওয়া ২২০টি স্কুল এবং ২৪টি কলেজের পড়ুয়াদের চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে দাবি তাদের।
Tripura State AIDS Control Society-র যুগ্ম ডিরেক্টর সংবাদ সংস্থা ANI-তে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ২২০টি স্কুল এবং ২৪টি কলেজকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে পড়ুয়ারা ইঞ্জেকশন থেকে মাদক নেওয়ায় আসক্ত। প্রত্যেক ব্লক, মহকুমার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি আমরা, তার পরই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।"
ত্রিপুরা থেকে এই খবর সামনে আসার পর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যদিও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এই সমস্যা আজকের নয়। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যাতে ত্রিপুরায় HIV/AIDS আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২০০ বলে দেখানো হয়। যৌন সংক্রমণ ২ শতাংশের নীচে নেমে এলেও, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক নেওয়ার যে আসক্তি দেখা দিয়েছে অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে, তাতেই সংক্রমণ মহামারির আকার ধারণ করছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।