Ozone Hole: আয়তনে উঃ আমেরিকার চেয়েও বড়, আন্টার্কটিকার আকাশে এ কোন গহ্বর! প্রমাদ গুনছেন বিজ্ঞানীরা
Science News: আন্টার্কটিকার উপর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের এই ওজন স্তরেই একটি বৃহদাকারের গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে।
কলকাতা: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল ওজোন স্তর। সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনিরশ্মিকে শোষণ করে নেয় এই ওজোন স্তর। ফলে প্রাণী এবং উদ্ভিদজগৎ নিরাপদ থাকে। পৃথিবীপৃষ্টি তাপমাত্রার ভারসাম্যও বজায় থাকে। কিন্তু আন্টার্কটিকার উপর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের এই ওজন স্তরেই একটি বৃহদাকারের গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে বিষয়টি সামনে এসেছে। আর তাতেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। (Ozone Hole)
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ১৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হয়। দু’টির পরিবর্তে সেখানে অক্সিজেনের অণু তিনটি পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মিকে শুষে নিয়ে পৃথিবীকে প্রাণধারণের উপযুক্ত রাখে এই ওজন স্তর। ১৯৮৫ সালে প্রথম বার মেরু অঞ্চলে ওজোন স্তরে গহ্বর দেখতে পান বিজ্ঞানীরা। রেফ্রিজারেটর, ক্ষতিকর সামগ্রী দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র থেকে নির্গত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন নামক রাসায়নিকের প্রভাবেই ওই গহ্বরের সৃষ্টি বলে জানা যায় সেই সময়। তার জেরে ১৯৮৯ সালেই ক্লোরোফ্লুরোকার্বন নিষিদ্ধ করা হয়। (Science News)
কিন্তু তার পরও ওজোন স্তরে গহ্বরের সৃষ্টি আটকানো যায়নি। এবছর ১৬ সেপ্টেম্বর তোলা ছবিতে এযাবৎকালীন অন্যতম বৃহৎ গহ্বরটি দেখা গিয়েছে ওজোন স্তরে, যার আয়তন প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বিষয়টি সামনে এনেছে। তাদের কোপারনিকাস সেন্টিনেল-৫পি স্যাটেলাইটের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে গহ্বরটি। গহ্বরটি আকারে আন্টার্কটিকার চেয়েই দ্বিগুণ।
Pole Shift Making a Massive Ozone Hole pic.twitter.com/B1kafwAxDk
— SpaceWeatherNews (@SunWeatherMan) October 5, 2023
ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির আবহাওয়া বিভাগের গবেষক আন্তজে ইনেস জানিয়েছেন, ২০২৩ সালেই বাড়তে বাড়তে এই আকার ধারণ করেছে ওজোন গহ্বরটি। এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত অন্যতম বৃহদাকার ওজোন গহ্বর এটি, জানিয়েছেন তিনি। এই গহ্বরটি সৃষ্টির জন্য টঙ্গায় সমুদ্রের নীচে থাকা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২২ সালে সেখানে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। ক্ষমতার নিরিখে তা হিরোশিমায় ফেলা ১০০টি পরমাণু বোমার সমান ছিল বলে মত বিজ্ঞানীদের।
'One of the biggest on record'
— David Ullrich (@DavidUllrich202) October 7, 2023
Ozone hole bigger than North America opens above Antarctica
The recently measured ozone hole over Antarctica, as detected by the Copernicus Sentinel-5P satellite, is one of the largest on record, according to a report from the European Space… pic.twitter.com/hQ7ASVwv9J
২০২২ সালের অগাস্ট মাসেই এ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া যে উচ্চতায় উঠেছিল, তার সঙ্গে প্রায় ৫ কোটি টন জল বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে পৌঁছে যায় বলে জানান তাঁরা। অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলীয় জলের পরিমাণ একধাক্কায় ১০ শতাংশ বেড়ে যায়। বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্পের পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়াতেই ওজোন স্তরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের দাবি, জলের সংস্পর্শে এসে ওজোন স্তরটি ভেঙে আয়নে পরিণত হয়, যার আচরণ ক্লোরোফ্লুরোকার্বনের মতোই।
শীতকালে মেরু অঞ্চলের উপর ঠান্ডা বাতাস মেরুবৃত্তীয় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক মেঘ তৈরি করে। ক্ষুদ্র বরফের স্ফটিক থেকে তৈরি হওয়া এই মেঘকে কখনও কখনও রামধনু রংয়ের বলে ঠাহর হয়। এর জন্যও ক্ষতি হয় ওজোন স্তরের। জলীয় বাষ্পের সংস্পর্শে এসেও এমনটা হয়। তাই টঙ্গার অগ্ন্যুৎপাতকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে।