Ind vs Eng, Motera Test: ইংল্যান্ডকে ধোঁয়াশায় রাখতে মোতেরায় অভিনব কৌশল কোহলিদের
চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টের মতো কি আমদাবাদে তৃতীয় ম্যাচেও বনবন করে ঘুরবে বল? ছড়ি ঘোরাবেন আর অশ্বিন-অক্ষর পটেলরা? নাকি খেলা হবে ঘাসে ঢাকা সবুজ উইকেটে?
কলকাতা: চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টের মতো কি আমদাবাদে তৃতীয় ম্যাচেও বনবন করে ঘুরবে বল? ছড়ি ঘোরাবেন আর অশ্বিন-অক্ষর পটেলরা? নাকি খেলা হবে ঘাসে ঢাকা সবুজ উইকেটে?
দ্বিতীয় টেস্টে হারের ধাক্কা কাটাবেন কী, তৃতীয় টেস্টের আগে উইকেট নিয়ে ধাঁধাই সবচেয়ে বেশি বিচলিত করে তুলেছে জো রুটদের। প্রতিপক্ষকে ধোঁয়াশায় রাখতে অভিনব চাল চেলেছেন বিরাট কোহলিরা। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, আমদাবাদের নবনির্মিত মোতেরা স্টেডিয়ামে দু ধরনের পিচ তৈরি করা হয়েছে। যার একটি স্পিনারদের সাহায্য করবে। অন্যটি পেস বোলিং সহায়ক। শেষ পর্যন্ত গোলাপি বলে দিনরাতের টেস্টে ঘূর্ণি পিচে খেলতে হবে, নাকি সবুজ, বাউন্সি বাইশ গজে, তা নিয়ে ধন্দ রাখা হচ্ছে। এবং তা যেন অনেকটা পরিকল্পিতভাবেই।
চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের কাছে স্পিন-অস্ত্রে ঘায়েল হয়েছে ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচের পর প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটারেরা কেউ কেউ এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামের পিচকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। যদিও ভারতীয় শিবির দেশের মাটিতে স্পিন বোলিং সহায়ক উইকেট তৈরির মধ্যে অন্যায়ের কিছু দেখেনি। পাল্টা বলা হয়েছে, ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কি ভারতীয় দলে সবুজ বাউন্সি পিচ পায় না! সেখানে কি গতির সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের লড়াই করতে হয় না! তাহলে কেন ঘরের মাঠে ঘূর্ণি পিচে টেস্ট ম্যাচ খেললে ভারতীয় দলের সমালোচনা হবে? ভারতীয় দলও তো বিদেশের মাটিতে সমস্ত প্রতিকূলতা সামলেই সিরিজ জিতে এসেছে। তাহলে ইংল্যান্ড শিবিরেরই বা এত অভিযোগ কেন!
এবং চেন্নাইয়ের বিতর্কের পর তৃতীয় টেস্টে মোতেরায় ইংল্যান্ডের আরও বড় ধাঁধা তৈরি করে রেখেছে ভারতীয় শিবির। আমদাবাদে ফোন করে জানা গেল, পাশাপাশি তৈরি রাখা হয়েছে দুটি পিচ। যার একটির মাটি কালো রঙের। বাউন্স বেশি। সাহায্য পাবেন পেসাররা। এবং আর একটি লাল মাটির তৈরি। সেই পিচে খেলা হলে শাসন দেখা যাবে স্পিনারদের। কোন পিচে খেলা হবে, তা নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধন্দ রাখা হচ্ছে। যাতে ইংল্যান্ড আগাম পরিকল্পনা সেরে ফেলতে না পারে। এবং প্রথম একাদশ সাজানো নিয়ে সফরকারী দলের মধ্যে সংশয় থাকে।
মোতেরার মাঠ ও উইকেট তৈরির সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, এমন একজন কর্তা আমদাবাদ থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি আনন্দকে বললেন, ‘স্টেডিয়াম সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরি হয়েছে। মাঠের মাটি পাল্টে ফেলা হয়েছে। আধুনিক এই স্টেডিয়ামে দু ধরনের পিচ রাখা হয়েছে। একটিতে কালো মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। যে মাটি রোল করলে বেশি হার্ড হয়ে যায়। বল পড়ে দ্রুত গতিতে যায়। বাউন্স বেশি থাকে। পেসাররা সাহায্য পাবে। পাশাপাশি আরও এক ধরনের উইকেট তৈরি রয়েছে। এই পিচটি লাল মাটির। চেন্নাইয়ে ঠিক যেরকম মাটির উইকেটে খেলে এসেছে ভারতীয় দল। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন থেকেই এই পিচ ভাঙবে। বল ঘুরবে, লাফাবে। বাড়তি সুবিধা হবে স্পিনারদের। ম্যাচের দুদিন আগে চূড়ান্ত হবে কোন পিচে খেলা হবে।’
ঘটনা হচ্ছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার থেকে ভারত-ইংল্যান্ড তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। আর শনিবার রাত পর্যন্ত পিচ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়নি বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি জানা গেল, দুটি পিচেই রয়েছে ঘন ঘাসের আস্তরণ। তাতে বিভ্রান্তি আরও বাড়ছে।
তৃতীয় টেস্ট দিন-রাতের। খেলা হবে গোলাপি বলে। নৈশালোকের ম্যাচে সাধারণত খেয়াল রাখা হয় যাতে উইকেট বেশি না ভাঙে। কারণ, দিন-রাতের টেস্টে গোধূলির সময় এমনিতেই গোলাপি বল দেখতে সমস্যা হয় বলে বিশ্বের প্রায় সমস্ত ব্যাটসম্যান মেনে নিয়েছেন। আর ভাঙা উইকেটে বল আরও ভেল্কি দেখাতে শুরু করলে ব্যাটিং বিপর্যয়ের আশঙ্কাও থেকে যায় পূর্ণ মাত্রায়।
এই ম্যাচে আবার ভারতীয় দলে ফিরছেন সেরা পেসার যশপ্রীত বুমরা। সব মিলিয়ে রুটরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে। অশ্বিনের স্পিন-জাল কাটানোর অঙ্ক কষবেন, নাকি বসে পড়বেন বুমরার পেস বোলিং খেলার নীল নকশা সাজাতে!