হাইব্রিড কাজের মডেলে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে যে ৫টি পদক্ষেপ
বিভিন্ন কাজের পরিবেশে স্যুইচ করার সময় উৎপাদনশীলতার মাত্রা বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে...
বিশ্বজুড়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে করোনা অতিমারী পরিস্থিতি। এর সাথে সাথে কাজের জন্য এখন অনেক মানুষই বাইরে বেরোচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের অফিসে নির্বিঘ্নে কাজ করতে দেওয়ার লক্ষে অনেক কোম্পানিই হাইব্রিড কাজ বেছে নিচ্ছে। অবস্থান-ভিত্তিক ব্যবস্থা থাকায়, হাইব্রিড মডেলের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন- কর্ম-জীবনের ভারসাম্য, কর্মচারী নিয়ে সন্তুষ্টি এবং উৎপাদনশীলতা। যদিও প্রায় দুই বছর বাড়ি থেকে কাজ করার পর, হঠাৎ করে এই পরিবর্তনে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়াটাই স্বাভাবিক। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে- বিভিন্ন কাজের পরিবেশে স্যুইচ করার সময় উৎপাদনশীলতার মাত্রা বজায় রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। আর সেই কারণে, ওয়ার্ক ফ্রম হোম থেকে হাইব্রিডে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি মসৃণ এবং সুপরিকল্পিত হওয়া উচিত। এই প্রতিবেদনে পাঁচটি টিপস রয়েছে যা প্রক্রিয়াটিকে সহজ করে তুলতে পারে :
১. সঠিক টুল এবং অ্যাপ ব্যবহার করুন : হাইব্রিড কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য কর্মচারী এবং সংস্থাগুলির কাছে প্রযুক্তি হল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাইব্রিড ওয়ার্কস্পেসগুলি আরও ভাল কাজে আসতে পারে যদি তাতে প্রযুক্তিগত সমাধান থাকে। যা কাজের প্রক্রিয়াকে মসৃণ রাখবে। এমনকী কর্মীরা কোথা থেকে কাজ করছেন সেটাও কোনও বিষয় হয়ে উঠবে না। এক্ষেত্রে প্রয়োজন- ক্লাউড স্টোরেজ। যাতে করে বিভিন্ন টিম যে কোনও জায়গা থেকে ফাইলের অ্যাক্সেস পেতে পারে এবং প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্টের সরঞ্জাম ব্যবহার করা যায়, টিম কোলাবরেশন টুল (যেমন- হাডল রুম), অপারেশনাল মোবাইল অফিস, সমস্ত ডিভাইস জুড়ে ওয়ার্ক অ্যাপ সিঙ্ক মেলে। যাতে কাজ সহজ হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে ডেটা এবং সময়ের ক্ষতি এড়ানো যেতে পারে এবং মসৃণ কাজ নিশ্চিত করা যাবে। এর পাশাপাশি প্রায় দুই বছর পর কাজের একটি নতুন মডেলে স্থানান্তরের প্রাথমিক ঝামেলা থেকেও মুক্তি মিলবে।
২. প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে হাইব্রিড কাজের সেট-আপকে সুসজ্জিত করুন : একটি উৎপাদনশীল কর্মক্ষেত্র হল সেটিই যেখানে সঠিক সরঞ্জাম রয়েছে। যাতে মানুষ উৎপাদনে সেরাটা দিতে পারেন। এই কারণে একটি কি বোর্ড , মাউস, একটি নির্ভরযোগ্য ল্যাপটপ, এর্গোনমিক সিট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম অপরিহার্য। অবশ্যই, ভাল ব্রডব্য়ান্ড এবং নেটওয়ার্ক সংযোগের প্রয়োজন রয়েছে। ইন্টারনেটের দ্রুত গতি আবশ্যক। সেইসাথে রিমোট কাজের জন্য একটি বিকল্প সন্ধান রাখুন। উদাহরণস্বরূপ, এয়ারটেল এক্সট্রিম ফাইবার এক Gbps পর্যন্ত গতি দিত পারে। যাতে আপনি ঘরেই বসে অফিসের মতো ইন্টারনেট উপভোগ করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এর আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। যদি নেটওয়ার্কে কোনও সমস্যা থাকে, তবে এয়ারটেল গ্রাহকদের মেসেজ পাঠায় যা ব্যবহারকারীদের আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করে। এটি বিশেষত সেই দিনগুলির জন্য উপকারী যখন কেউ বাড়ি থেকে কাজ করছেন। এর পাশাপাশি ইউজাররা তাঁদের বাড়ি থেকে নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান করতে পারবেন এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গে সমাধান মিলবে।
৩. নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্র প্রয়োজন : অফিস এবং বাড়ির মধ্যে পরিবর্তন আপনার মনের স্থিতিশীলতা এবং আপনার কাজের গুণমানকে প্রভাবিত করতে পারে। এই প্রভাব কাটাতে বাড়িতে একটি অনুরূপ সেট আপ তৈরি করা ভাল। একটি পৃথক রুম বা আরামদায়ক নিরবচ্ছিন্ন স্থান (যদি স্থান সীমিত হয়) অনেক ভাল বিকল্প। প্রায়শই যখন আপনার অফিস ডেস্ক আপনার বাড়ির কাজের পরিবেশ থেকে খুব আলাদা হয়, তখন ফোকাস এবং উৎপাদনশীলতায় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্ষেত্রে আপনি যা করতে পারেন তা হল বাড়িতে একটি এর্গোনমিক ওয়ার্কস্পেস তৈরি করুন। কাজের সঠিক টেবিল এবং চেয়ার রাখুন।
৪. টাইম ম্যানেজমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ : সময়ানুবর্তিতা হল জীবনের বেশিরভাগ জিনিসে ভারসাম্যের চাবিকাঠি। এর মধ্যে হাইব্রিড মডেলের পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া অন্তর্ভুক্ত। তাই প্রতিদিন একই সময়ে দিন শুরু করার চেষ্টা করা উচিত। যেখানে মন এবং শরীর আরও ভালভাবে প্রস্তুত হবে। বাকি কাজের পরিকল্পনা আগে থেকেই করা উচিত যাতে আপনি আপনার সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ওয়ার্ক ফ্রম হোম মোডে থাকাকালীন যাতায়াতের সময় ইমেল এবং মেসেজ পড়ে নিন। একইভাবে, অফিসে কাজ শেষ করার পর যেভাবে কেউ সেই দিনের জন্য কাজ বন্ধ করে দেন, বাড়ি থেকে কাজ করার সময়ও একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে কাজ বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে সর্বদা স্বাভাবিকতা বজায় রাখা যায়।
৫. নমনীয়তা গ্রহণ করুন : হাইব্রিড ওয়ার্কস্পেস মডেলের সাথে সাহায্য করতে পারে এমন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- নমনীয়তা। প্রথাগত কাজের মডেলের বিপরীতে, যা প্রায়শই কঠোর হয়ে থাকে, হাইব্রিড সিস্টেম বিভিন্ন মডেলকে একত্রিত করে এবং উৎপাদনশীলতার ওপর জোর দেয়। হাইব্রিড উৎপাদনশীলতার শিখরে পৌঁছানোর জন্য অফিস এবং WFH মডেলের সাথে খোলামেলা পথ বাছতে হবে। এর পাশাপাশি, সংস্থাগুলি তাদের কর্মীদের জন্য কীভাবে কাজ করছে তা বিশ্লেষণ করতে হবে। অতএব, মহামারীর আগে বিদ্যমান নিয়মগুলি শিথিল করা উচিত। কর্মচারীদের তাঁদের সেরা কাজোর সুযোগ দেওয়া উচিত। সুতরাং এটি খুব স্পষ্ট যে প্রযুক্তি এবং কিছু কাঠামোগত পরিবর্তনের সাথে, হাইব্রিড মডেলটি কর্মচারী এবং সংস্থাগুলির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে আরও ভাল ফলাফল পেতে সাহায্য করতে পারে। যেহেতু হাইব্রিড কাজ কোভিড-পরবর্তী আরও ব্যাপক হয়ে উঠেছে, এটি আমাদের কাজ করার পদ্ধতিতে একটি সৃজনশীল পরিবর্তন এনেছে এবং কর্মক্ষেত্রকে আরও ব্যক্তিগতকরণ করছে। সুতরাং, আপনি এর জন্য প্রস্তুত হন।