Jyotipriyo Mullick: ফের স্বমহিমায়, পদযাত্রা করে হাবরা পুরসভায় গেলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
Habra Municipality: হাবরা পুরসভার চেয়ারম্যান নারায়ণ সাহার কাছে পৌর উন্নয়নের খতিয়ান জানতে চান। জানান, বিধায়ক তহবিলের টাকা দিয়ে উন্নয়ন করতে চান তিনি।

সমীরণ পাল, হাবরা: ফের স্বমহিমায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আজ পদযাত্রা করে হাবরা পুরসভায় যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থক। হাবরা পুরসভার চেয়ারম্যান নারায়ণ সাহার কাছে পৌর উন্নয়নের খতিয়ান জানতে চান। জানান, বিধায়ক তহবিলের টাকা দিয়ে উন্নয়ন করতে চান তিনি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় সাড়ে ১৪ মাস জেলবন্দি থাকার পর গত মাসে জামিন পেয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জেলমুক্তির পরেই উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক নেতা তাঁর বাড়িতে আসেন, দেখা করেন। জেল থেকে ফিরে দলের কাজও শুরু করে দিয়েছেন হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক। আর জেলমুক্তির এক মাস পর পুরসভায় গেলেন তিনি।সাংবাদিক সম্মেলনে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, বিধায়ক কোটার প্রায় দু কোটি টাকা পড়ে আছে তা দিয়েই তিনি উন্নয়নের কাজে নামতে চান। কুলগুলির উন্নয়ন ফান্ডে তার টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানান। এছাড়াও হাবরাতে ইতিমধ্যেই রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। সরকার কাজ করেছে তবু কিছু কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। এখন পাখির চোখ হাবরার উন্নয়নের সেই কাজগুলিকে ত্বরান্বিত করা। ঘরে ঘরে পানীয় জলের প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ২৬ হাজার বাড়িতে পানীয় জলের লাইন চলে গেছে। হাবরায় বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির কাজও চলছে। নবনির্মিত হাসপাতাল সম্পূর্ণরূপে চালু করা বস্ত্রহট চালু করা এগুলোই প্রধান কাজ। তবে এদিন কোনও রাজনৈতিক বা বিতর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি জ্যোতিপ্রিয়। হাবরায় জ্যোতিপ্রিয়কে দেখতে এবং পদযাত্রায় অংশ নিতে বিভিন্ন বয়সের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতন। জানালেন শারীরিক কিছু সমস্যা রয়েছে। তা সত্ত্বেও তিনি জেল থেকে ছাড়া পেয়েই হাবরার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খবর নিয়েছেন।
এদিকে জামিন দেওয়ার নির্দেশনামায় ছত্রে ছত্রে ইডির তদন্ত প্রক্রিয়া। আদালতে জমা করা প্রমাণ, নথি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ইডির বিশেষ আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়। রেশন দুর্নীতি নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দাবি আর বাস্তবে তদন্তে যা উঠে এসেছে, তার মধ্যে যে বিস্তর ফারাক থেকে গেছে, তা বারবার উঠে এসেছে বিচারকের নির্দেশনামায়। ভবানীপুর থানা-সহ একাধিক থানায় দায়ের হওয়া ৬টি FIR-এর ভিত্তিতে রেশন দুর্নীতি মামলায় ECIR দায়ের করে ইডি। মূল অভিযোগ ছিল- অপর্যাপ্ত রেশন সামগ্রী সরবরাহ., পুরনোর সঙ্গে নতুন আটা মিশিয়ে গুণমানের সঙ্গে আপস এবং ভুয়ো চাষিদের থেকে ধান কিনে সহায়ক মূল্য হাতিয়ে নেওয়া। নির্দেশনামার সাতান্ন নম্বর পয়েন্টে বিচারক লিখেছিলেন, পুরনোর সঙ্গে নতুন আটা মিশিয়ে রেশনে দেওয়া সামগ্রীর গুণমান নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, তার সমর্থনে ইডি কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। সরকার অনুমোদিত কোনও ল্যাবরেটরির টেস্ট রিপোর্টও দেয়নি তদন্তকারীরা। বিচারক কটাক্ষের সুরে লিখেছিলেন, ইডি অফিসাররা কেমিক্যাল এক্সপার্ট নন যে তাঁরা ল্যাবের রিপোর্ট জমা না দিয়ে নিজেরা গুণমান নিয়ে বলবেন। অপর্যাপ্ত রেশন সামগ্রী সরবরাহ নিয়ে বিচারক তাঁর নির্দেশনামায় বলেন এর সমর্থনেও কোনও তথ্য দিতে পারেনি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এক্ষেত্রে ডায়েরিতে লেখা হিসেবের কিছু এন্ট্রি আর গোয়েন্দাদের কাছে দেওয়া জবানবন্দি। এভাবে তদন্তকারী সংস্থার অধীনে দেওয়া স্বীকারোক্তি কখনই আদালত গ্রাহ্য নয়। তদন্তকারী অফিসার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করানোর কোনও চেষ্টা করেননি, যাতে গোটা বিষয়টায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারত।
সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে তোলা অভিযোগ নিয়ে বিচারপতি বলেন, এক্ষেত্রে কিছু গ্রহণযোগ্য নথি থাকলেও, ইডির তরফে যে বিরাট দুর্নীতির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল তাতে এই নথি পর্যাপ্ত নয়। ধান কেনার প্রক্রিয়ায় গলদ হতে পারে। তা দুর্নীতি নয়। বিচারক লিখেছিলেন, কোউকে আর্থিক তছরুপে দোষী প্রমাণ করতে গেলে সেই ব্যক্তির কাছে দুর্নীতির টাকা পৌঁছেছে সেটা প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু দুর্নীতির টাকা যে অভিযুক্তের (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) কাছে পৌঁছেছে সেটা প্রমাণ করা যায়নি।
নির্দেশনামায় ইডির সমালোচনা করে বিচারক লেখেন রেশন দুর্নীতি মামলায় সহ অভিযুক্তদের জবানবন্দি ও কয়েকজন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের ওপর নির্ভর করে তদন্ত করেছে ইডি। তাঁদেরই একজন কল্যাণসিংহ রায়। তিনি বাকিবুর রহমানের সংস্থার আর্থিক দিকগুলো দেখাশোনার পাশাপাশি শঙ্কর আঢ্য এবং বিশ্বজিত দাসের ফরেক্স ব্যবসারও দেখাশোনা করতেন। অভিযোগ, তিনিই ইডির কাছে দাবি করেছিলেন, শঙ্কর আঢ্যর ফোরেক্স ব্যবসার মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে ৯ হাজার কোটি টাকা হচ্ছে জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের। বিচারক উল্লেখ করেন, এরকম দাবির পক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি ইডি।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
