Howrah Train Accident: সেকেন্দ্রাবাদ-শালিমার এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত, দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত, বিভিন্ন স্টেশনে আটকে যাত্রীরা, চরম হয়রানি
Train Accident: দুর্ঘটনার জেরে হাওড়া দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
হাওড়া: অল্পের জন্য ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচল ডাউন সেকেন্দ্রাবাদ-শালিমার সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। শালিমার স্টেশনে ঢোকার মুখে এক নম্বর লাইন থেকে আচমকা দু'নম্বর লাইনে ছিটকে যায় ট্রেনের ইঞ্জিন। ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। গতি কম থাকায় ভয়ঙ্কর কিছু ঘটেনি। কিন্তু আচমকা এক লাইন থেকে অন্য লাইনে ট্রেন ছিটকে গেল কী করে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দুর্ঘটনার জেরে হাওড়া দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। (Howrah Train Accident)
শনিবার ভোরবেলা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নলপুর স্টেশনের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। শালিমারে ঢোকার কিছুটা আগে লাইনচ্যুত হয় ট্রেনটির তিনটি কামরা। বিকট শব্দে ছুটে আসেন আসেপাশের লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলের ইঞ্জিনিয়ার থেকে আরপিএফ, জিআরপি। গতি কম থাকা সত্ত্বেও কী করে এমন কিছু ঘটল, তার খতিয়ে দেখা হয়েছে এই মুহূর্তে। কিন্তু এই ঘটনার জেরে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। (Train Accident)
এই দুর্ঘটনার জেরে হাওড়া স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ আটকে ছিল রাউরকেল্লা বন্দেভারত এক্সপ্রেস। সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও, বেলা ১০টার পর ১৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ে। নলপুরের কোন ফাঁকা লাইন দিয়ে সেটিকে পাস করানো হবে, তা রেলের আধিকারিকরা দেখছেন। পাশাপাশি, পুরী যাওয়ার বন্দেভারত ট্রেনটিও দাঁড়িয়ে রয়েছে হাওড়া স্টেশনে। সকাল ৬টা বেজে ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও, বেলা ১০টার পর যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে আর্জি জানিয়ে ঘোষণা হয়। ট্রেন চলাচলকে স্বাভাবিক করানোর চেষ্টা চলছে।
ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় হয়রানির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। নলপুর স্টেশনেও আটকে রয়েছেন যাত্রীরা। এক যাত্রী জানান, "মরতে মরতে বেঁচে ফিরেছে। তীব্র শব্দের পর দেখি, কামরা আলাদা হয়ে গিয়েছে। সেই থেকে বসে আছি। যাত্রীদের জন্য কিছু করা হয়নি। ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। এভাবে চললে সরকারের উপর থেকে আস্থা উঠে যাবে।" আর এক যাত্রী বলেন, "তিন ঘণ্টার বেশি হয়ে গিয়েছে। বসে রয়েছি। এখনও কিছু পায়নি। পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখছি না।" যদিও দুর্ঘটনার পর রেলের তরফে জানানো হয় বাসের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলে। খড়্গপুরেও হেনস্থার শিকার যাত্রীরা। রেলের তরফে সকালে ১০টা বেজে ১০ মিনিটে নলপুর স্টেশনের আপ লাইনে একটি লোকাল ট্রেনকে ধীর গতিতে চালানো হয়। ডাউন লাইন এখনও বন্ধ।
সাধারণ মানুষের যাতায়াতের প্রধান ভরসা যে রেল, তাতে পর পর এমন দুর্ঘটনা ঘটছে কেন, উঠছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, এদিন মিডল লাইন দিয়ে এগোচ্ছিল ট্রেনটি। সেখান থেকে ডাউন লাইনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল স্টেশনে ঢোকার আগে। ডাউন লাইনের যে ক্রসিং, তা পেরনোর পরই আস্তে আস্তে বেলাইন হয়ে যায় ট্রেনটি। এর ফলে শুধুমাত্র সামনের দিকেই প্রভাব পড়েছে। গতি কম থাকার জন্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যেমন, ইঞ্জিনের পরে পার্সেল ভ্যান ছিল, ফলে সেখানে যাত্রী ছিলেন না। তাই হতাহত এড়ানো গিয়েছে। পয়েন্টের গোলমাল অথবা লাইনের সমস্যার দরুণ এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সময় শীতের আগমন ঘটার অপেক্ষা চলছে। রাতের দিকে হালকা ঠান্ডা পড়ছে। তাপমাত্রার হেরফেরে রেললাইনের চরিত্রও পাল্টায়। রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় ভাল ভাবে। তা থেকেও সমস্যা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, স্বয়ংক্রিয়া ত্রুটির কথাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দেশের কথা বাদ দিলেও, এ রাজ্যেই পর পর ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফলে ট্রেনযাত্রাকে ঘিরে আতঙ্কিত মানুষ জন।