Odisha Train Accident : ফাটা মাথা নিয়ে মৃতদেহের স্তূপের ওপর দিয়ে হেঁটে ফিরেছেন পরিযায়ী শ্রমিক পরিতোষ
Odisha Train Accident: ট্রেন দুর্ঘটনায় ফেটেছে মাথা, কিন্তু প্রাণটা বেঁচে গিয়েছে । বাড়িতে ফিরেও আতঙ্ক কাটেনি উত্তর চব্বিশ পরগনার পরিতোষের ।
সমীরণ পাল, উত্তর চব্বিশ পরগনা : ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাহানাগা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লাইনে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। কিন্তু অভিশপ্ত সেই সন্ধেয় যাঁরা মৃত্যুকে চোখের সামনে দেখেছেন, দেখেছেন সহযাত্রীদের এক মুহূর্তে প্রাণহীন হয়ে যেতে, তাঁরা এখনও কাটাতে পারছেন না দুঃস্বপ্নের ঘোর। ট্রেন দুর্ঘটনায় ফেটেছে মাথা, কিন্তু প্রাণটা বেঁচে গিয়েছে । বাড়িতে ফিরেও আতঙ্ক কাটেনি উত্তর চব্বিশ পরগনার পরিতোষের ।
মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেন পরিতোষ
গোপালনগর থানার গাজিপুরের বাসিন্দা পরিতোষ সর্দার বেঙ্গালুরুতে কর্মরত । বাড়ি ফেরার পথে ঘটে যায় মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনা । মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেন পরিতোষ । আহত অবস্থায় মাথায় সেলাই নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। শরীরে রয়েছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ।
জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন পরিতোষ
বেঙ্গালুরু থেকে বেঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন পরিতোষ। এরপর শুক্রবার সন্ধেয় ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন ঢুকতেই সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তার ট্রেন । পরিতোষ জানান, প্রথমে তিনি একটি বিকট আওয়াজ শুনতে পান l রেল লাইনে থাকা পাথর ছিটকে আসতে থাকে কামরার ভেতর। এরপরে তিনি বুঝতে পারেন ট্রেনটি কোন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে । কিছুক্ষণের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। মাথা ফাটা অবস্থায় নিজেই বেরিয়ে আসেন ট্রেন থেকে । পরে ট্রেন থেকে বেরিয়ে এসে একের পর এক মৃতদেহ দেখে কার্যত শরীর অসাড় হয়ে যাচ্ছিল । যেন এক বিরাট মৃত্যুপুরীতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। বাড়িতে ফিরেও আতঙ্কের রেশ কাটছে না তাঁর । ঘুমোতে পারছেন না। ক্রমশই চেয়ে ধরছে দুঃস্বপ্নের সেই সন্ধে।
মৃতদেহের স্তূপের ওপর দিয়ে হেঁটে ফিরেছেন। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার রেশ এখনও কাটেনি। এখনও সরকারি সহযোগিতা মেলেনি বলে দাবি বনগাঁর এই পরিযায়ী শ্রমিকের।
শুধু পরিতোষ নন, মৃত্যুর গ্রাস থেকে যাঁরা যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, প্রত্যেকেই এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছেন না মৃত্যুভয়।
অন্যদিকে, ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাহানাগা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লাইনে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। রাত ১০টা ৪০-এ ডাউন লাইনে প্রথমে একটি মালগাড়ি চালানো হয়। আপ লাইনে প্রথম ট্রেন চালানো হয় রাত ১২টা ৫-এ। পরীক্ষামূলকভাবে আপ ও ডাউন লাইনে মালগাড়ি চালানোর পর, সকাল থেকে শুরু হয় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। হাওড়া থেকে সকাল ৬টা ১০-এ প্রথম ছাড়ে হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এরপর হাওড়া-সেকেন্দ্রাবাদ ফলকনুমা এক্সপ্রেস রওনা দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, আজ থেকে হাওড়া-ভদ্রক রুটে সবকটি ট্রেনই চলছে।