Sandeshkhali Sting: ‘সন্দেশখালি ভোটের ইস্যু নয়, বাংলার মান-সম্মান জড়িয়ে’, হেফাজত-মামলার দাবি তুলল তৃণমূল
Sandeshkhali Viral Video: সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ।
কলকাতা: সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিও নিয়ে এবার আরও একধাপ এগোল তৃণমূল। বিজেপি নেতা যেখানে ষড়য়ন্ত্রের কথা স্বীকার করছেন, সেক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ হওয়া উচিত বলে দাবি তুলল তারা। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ধর্ষণের যে মিথ্যে মামলা করিয়েছে, যেভাবে টাকা-অস্ত্র সরবরাহ করেছে, তা নিয়ে তদন্ত এবং গ্রেফতারির প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি তুলল জোড়াফুল শিবির। (Sandeshkhali Sting)
দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব পিছনে ফেলে রবিবার সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ। সরাসরি বিষয়টিতে রাজ্য পুলিশের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। কুণালের অভিযো, বিজেপি যে প্রলোভন দেখিয়েছে, পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, তা পরিষ্কার। বিজেপি-রই নেতারা বিষয়টি সামনে এনেছেন। বাংলার কোটি কোটি মা-বোন-মহিলাকে অপমান করা হয়েছে, নষ্ট করা হয়েছে বাংলার ভাবমূর্তি। কুণালের দাবি, এটা শুধুমাত্র রাজনৈতিক ইস্যু নয়, রাজ্যের মান-সম্মান জড়িয়ে এর সঙ্গে। (Sandeshkhali Viral Video)
এদিনসাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেন, "এখন কোণঠাসা হয়ে পড়ে বিজেপি নানা যুক্তি খাড়া করছে। বলছে এটা নয়, ওটা নয়। কিন্তু বিষয়টি যেন রাজনৈতিক তরজায় সীমাবদ্ধ না থাকে। এখানে ষড়যন্ত্র পরিষ্কার, রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয়েছে। সরকার বিরোধী, সমাজ বিরোধী চক্রান্ত। রাজ্যের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। অবিলম্বে বিষয়টি আইনের আওতায় আসা প্রয়োজন।"
পুলিশকে এ নিয়ে মামলা দায়ের করতে হবে বলে এদিন দলের তরফে দাবি করেন কুণাল। তাঁর অভিযোগ, ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ আনা, মানুষকে উত্তেজিত করা, হাতে অস্ত্র এবং টাকা দিয়ে তুলে দেওয়ার নেপথ্যে বড় ধরনের চক্রান্ত ছিল। মানুষকে খেপিয়ে তোলাই লক্ষ্য ছিল।শুধুমাত্র নির্বাচনে জেতার জন্য এই কাজ করা হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল বিষয়টিকে মোটেই রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দেখছে না। কুণাল জানিয়েছেনস, গোড়া থেকেই সন্দেশখালির ঘটনাকে সাজানো বলে দাবি করে আসছিলেন বলে তাঁদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আজ সত্য প্রমাণিত, তাই তদন্ত চাই বলে দাবি করলেন তিনি।
সন্দেশখালির ওই ভাইরাল ভিডিও-কে সামনে রেখে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪১ (বেআইনি জমায়েত করে সরকারকে হুমকি), ১৫৩ (দাঙ্গা হতে পারে জেনেও প্ররোচনা জোগানো) এবং ১৫৮ (টাকার বিনিময়ে গন্ডগোল পাকানো, সশস্ত্রও হতে পারে) ধারায় পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন কুণাল। পাশাপাশি, ১৯৫-এ (ক্ষতিসাধনের লক্ষ্যে ভুয়ো তথ্য-প্রমাণ পেশ), ২০১ (তথ্যপ্রমাণ লোপাট, ভুয়ো তথ্য দেওয়া), ২০৩ (অপরাধ জেনেও মিথ্যে তথ্য দেওয়া) এবং ২১১ (শাস্তি হবে জেনেও মিথ্যে অভিযোগ তোলা কারও বিরুদ্ধে) ধারায় মামলা দায়েরের দাবি তুলেছেন কুণাল। কুণালের দাবি, গোটা ঘটনাটি বিজেপি ঘটিয়েছে, আর তাতে ধুনো দিয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। বাংলার সম্মান নিয়ে ছেলেখেলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। পুলিশকে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করার পাশাপাশি, ভাইরাল ভিডিও-য় যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁদের হেফাজতে নেওয়ারও দাবি তোলেন কুণাল।
সন্দেশখালি নিয়ে গত কাল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও সামনে আসে, যাতে বিজেপি-র অঞ্চল সভাপতি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জনকে মুখ খুলতে দেখা যায়। শুভেন্দু অধিকারীর পরামর্শে তাঁরা মিথ্যে ধর্ষণের অভিযোগ করেন, তার পরিবর্তে টাকা, মোবাইল ফোন মেলে বলে জানা। এবিপি আনন্দ ওই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি। তবে এই ভিডিও ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। কারণ সিবিআই সম্প্রতি সন্দেশখালি থেকে যে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করে, তা-ও গোটাটাই সাজানো বলে ভিডিও-য় দাবি করেছেন বিজেপি নেতা। এবার সেই নিয়ে আইনি পদক্ষেপের দাবি তুলল তৃণমূল।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিজেপি-র মুখপাত্র শনীক ভট্টাচার্য বলেন, "রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞা নতুন করে দিতেই পারেন কুণাল ঘোষ। আগামী দিনে হয়ত ওঁর মতো লোকই রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞা ঠিক করবেন। কুণালের অবস্থানের পরিবর্তন হতেই পারে। উনি কবে ঢুকবেন, বেরোবেন, ওঁদের দলের ব্যাপার। কুণাল মাত্র তিন দিন আগে যে অভিযোগ এনেছিলেন, চাকরি বিক্রির টাকা নেওয়া মন্ত্রী কেন গ্রেফতার হবেন না? আগে ওঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত সিবিআই-এর। তার পর না হয় সন্দেশখালি নিয়ে দেখা যাবে।"