Sandeshkhali Incident: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে যাক রাজ্য, সন্দেশখালি মামলায় পরামর্শ বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার
Supreme Court on Sandeshkhali: দ্রুত শুনানির আর্জি শুনলেন না বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্যকে যাওয়ার পরামর্শ।
রুমা পাল, বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: সন্দেশখালিকাণ্ড ও শেখ শাহজাহান-গ্রেফতারি সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য। গতকালের পর আজ ফের দ্রুত শুনানির আর্জি বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে। দ্রুত শুনানির আর্জি শুনলেন না বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্যকে যাওয়ার পরামর্শ। গতকালও দ্রুত শুনানির আর্জি না শুনে একই পরামর্শ দিয়েছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, 'আমরা আমাদের আবেদন আদালতকে জানিয়েছি। CBI রাতারাতি হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে চেয়েছে। তাই দ্রুততার সঙ্গে শুনানির আর্জি জানাচ্ছি। ওরা ওখানে(হাইকোর্টে) কনটেম্পট পিটিশন করেছে।' কিন্তু রাজ্য সরকারের এই আবেদনে সাড়া না দিয়ে, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।
এদিকে, শেখ শাহজাহানকে হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর না করায়, কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে ED. সেখানেও 'ধাক্কা' খেতে হয় রাজ্য সরকারকে। শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা নিয়ে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বুধবারের নির্দেশকেই বহাল রাখে বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য সরকারের তরফে সময় চাওয়া হলেও,সেই আর্জি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, যেখানে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেখানে ওই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশের কোনও কারণ নেই। বুধবার বিকেল সওয়া চারটের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।
অর্থাৎ, মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ যেমন সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল, সেই একই পথে হেঁটে বুধবারও সময়সীমা বেঁধে দেয় আরেক ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আরও বলে, রাজ্য সরকার লুকোচুরির আচরণ করে অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। যেখানে গোটা তদন্তই CBI করবে, সেখানে শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তর না করা রাজ্য সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। শীর্ষ আদালতে আর্জি মানেই হাইকোর্টের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ হয়ে যায় না। এদিন শুনানির সময় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন প্রশ্ন করেন, 'কেন আদালত অবমাননার প্রয়োজন হল?' ED আইনজীবী এমভি রাজু তখন বলেন, ইডি আদালত অবমাননার মামলা করেছে।
ইডি রেশন দুর্নীতির তদন্ত করছিল। শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে অফিসাররা আক্রান্ত হয়। সেই কারণেই মামলা করা হয়। আদালতের নির্দেশ দেওয়ার পরও কার্যকর করেনি রাজ্য সরকার। এমনকি, রাজ্য সরকারের আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর সিবিআইয়ের আইনজীবীও বলেন, অভিযুক্তকে হস্তান্তর করা হয়নি, কোনও নথিও দেওয়া হয়নি।
তারা জানায়, ঋসিআইডি মেল করে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন থাকা পর্যন্ত শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তর করা হবে না। এখান থেকেই স্পষ্ট, তদন্ত বিলম্বিত করতেই এই ধরনের কাজ করা হচ্ছে।
তখন রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, 'বিকেলে রায় আপলোড হওয়ার পর রাজ্য সরকার আবেদন করে। যা যা হয়েছে সবটাই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে হয়েছে। এখনও ফাইল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছেই আছে। ফলে আজ (বুধবার) পরে বা কাল (বৃহস্পতিবার) মামলা শোনা হোক। ইডির এত তাড়া কীসের? তাঁদের মামলায় তো অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি।'
এরপর বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন জানান, সুপ্রিম কোর্ট জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করতে রাজি হয়নি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের আইনজীবীদের বক্তব্যও পরস্পর বিরোধী। বিচারপতির এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, 'যদি তাও হয়ে থাকে, তাহলেও কীভাবে এই প্রক্রিয়া উল্লেখ করে অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখা যায়?'
বৃহস্পতিবার এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে শুনানির তালিকায় রাখা হয়েছে বলে হাইকোর্টে জানায় রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: জলের তলা দিয়ে দেশের প্রথম মেট্রো উদ্বোধন মোদির! গঙ্গার তলায় জুড়ল কলকাতা-হাওড়া