Rukmini Maitra Exclusive: দেব আর আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ককে সেটে নিয়ে যাই না: রুক্মিণী
Actress Rukmini Maitra Exclusive: বিনোদিনীর পরেই সত্যবতী, রুক্মিণীর অভিনেত্রী সত্ত্বার কাছে এটা কী নতুন চ্যালেঞ্জ?
কলকাতা: সত্যবতী শুধু বাঙালি গৃহবধূ নন, সত্যবতী বুদ্ধিমতীও। এই বিষয়টাই প্রথম টেনেছিল রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)-কে। প্রথম অফার আসে, 'বিনোদিনী'-তে অভিনয়ের সময়। তখন খুব একটা ভেবে দেখেননি রুক্মিণী। এরপরে ফের যখন বীরসা তাঁর কাছে অফার নিয়ে আসে ব্যোমকেশের সফরসঙ্গী হওয়ার, না করেননি রুক্মিণী। আগামীকাল থেকে শুরু হবে ব্যোমকেশ-দূর্গরহস্যের শ্যুটিং। আর তার আগের রাতে, এবিপি লাইভের (ABP Live)-এর সঙ্গে, সত্যবতীকে অভিনেত্রীর চোখে দেখলেন রুক্মিণী।
বিনোদিনীর পরেই সত্যবতী, রুক্মিণীর অভিনেত্রী সত্ত্বার কাছে এটা কী নতুন চ্যালেঞ্জ? অভিনেত্রী বলছেন, 'কেবল বিনোদিনী নয়, অভিনেত্রী হিসেবে আমার কাছে যে চরিত্রই আসুক না কেন, আমি চেষ্টা করি প্রাণ ঢেলে অভিনয় করার। যেমন বিনোদিনীতে করেছিলাম, সত্যবতীতেও ঠিক সেটাই করব। এই চরিত্রটা নিয়ে আমায় সবাই বলছেন, সত্যবতী বাঙালি ঘরোয়া গৃহবধূ। কিন্তু আমায় সত্যবতীর যে বিষয়টা সবচেয়ে টেনেছে, সেটা হল ওঁর বুদ্ধিমত্তা। সেইসময়, আমাদের দিদা, ঠাকুমাদের মধ্যেও এমনই এক একজন সত্যবতী লুকিয়ে ছিল। সেই সময়ের মহিলারা স্বীকতির আশা করেননি, কিন্তু তাঁরা এক এক সময় পুরুষদের সঠিক বুদ্ধি দিয়ে দিশা দেখাতেন। সেটা হয়তো কেউ জানতেই পারতেন না। তবে, এই ছবিতে আমার কাছে একটা অন্যতম চ্যালেঞ্জ হল, আমার লুক। রুক্মিণী এই গল্পে অন্ত্বঃসত্তা। চ্যাম্প ছবিতে আমি অন্ত্বঃসত্তার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম বটে, কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে সেই সময়ের চালচলন, কথা বলা, অনেক কিছু মাথায় রাখতে হবে। আমি দামিনী বসু বেণীদির সঙ্গে ওয়ার্কশপ করছি।'
আগামীকাল থেকে কলকাতায় শুরু হবে 'ব্যোমকেশ'-এর শ্যুটিং। তারপরে মধ্যপ্রদেশে। ওয়েব সিরিজ থেকে শুরু করে সিনেমার পর্দা, যতবার ব্যোমকেশ নিয়ে কাজ করেছেন বিভিন্ন পরিচালক, ততবারই নতুন নতুন সত্যবতীকে দেখেছেন দর্শক। কোথাও কি তুলনার ভয় থাকে? রুক্মিণী বলছেন, 'আমি কখোনোই ভাবি না আমার অভিনয়টা অন্য কারোও মতো হয়ে যাবে। কারণ সেটা সম্ভব নয়। আমি কাউকে অনুকরণ করি না। আর বিরসা আমায় বলেছে, একেবারে নিজের মতো করেই অভিনয় করতে। প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রীই যখন চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে চায়, তার মধ্যে নিজস্বতা আনার চেষ্টা করে। পরিচালকের ক্ষেত্রেও তাই। আমি এইসব না ভেবে, চেষ্টা করি চরিত্রটার কতটা কাছাকাছি পৌঁছনো যায়।' আর ট্রোলিং? একটু হেসে নায়িকা বললেন, 'ট্রোলিং এখনকার ট্রেন্ড। ট্রোলিংয়ের কথা ভাবলে কাজই করা যাবে না। আমায় মা একটা কথা শিখিয়েছিলেন, 'তোমরা ট্রোলিং করো,আমি কাজ দিয়ে উত্তর দেব।' বেদবাক্যের মতো আমি এখনও সেটা মেনে চলি।'
ছবির লুক সেট হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। নিজেকে সত্যবতী হিসেবে দেখে কেমন লাগল রুক্মিণীর? অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি মডেলিংয়ের প্রেক্ষাপট থেকে অভিনয়ে এসেছি। তাই সবসময় চেষ্টা করি রূপটান শিল্পী থেকে শুরু করে কেশসজ্জা, পোশাক, সব শিল্পীদের তাঁদের যোগ্য মর্যাদাটা দিতে। আমায় সত্যবতী লুকে দেখে অনেকে বলেছিলেন, 'রুক্মিণীকে এইরকম দেখতে লাগতে পারে?' এর গোটা ক্রেডিট বিথিকা বেদী, হেমা মুন্সী, সোমনাথ কুণ্ডু.. সব্বার।'
দেব ব্যোমকেশ, রুক্মিণী সত্যবতী, পর্দায় এবার নতুন রসায়ন দেখবেন দর্শক? রুক্মিণী বললেন, 'আমি এখনও পর্যন্ত যতজন অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে সিরিয়াসভাবে কাজ করেছি দেবের সঙ্গে। অন্যান্যদের সঙ্গে হাসাহাসি, খুনসুটি চললেন, দেবের সঙ্গে কাজ করার সময় ক্যামেরা বন্ধ হলেও আমরা চরিত্রের মধ্যেই থাকার চেষ্টা করি। আসলে আমার ভয় লাগে, দেব কখন বকবে! আমরা সেটে আসি ব্যক্তিগত সম্পর্ককে বাড়িতে রেখে। এই ছবির ক্ষেত্রে একদিনই ওয়ার্কশপ হয়েছিল, সেদিন আমি আর দেব চরিত্র নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছিলাম একটু। এই গল্পে ব্যোমকেশ আর সত্যবতী দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাটিয়ে ফেলেছে। আর তাই ওদের মধ্যে সেই বিশ্বাস আর নির্ভরশীলতার বন্ধনটা ফুটিয়ে তোলা খুব জরুরি। তবে ক্যামেরার পিছনে আমাদের রসায়ন, ক্যামেরার সামনে আমাদের অভিনয়ের ক্ষেত্রে সাহায্য করেনি কখনও। ক্যামেরার সামনে দেব আর আমি সম্পূর্ণ আলাদা দুজন ব্যক্তিত্ব হয়েই কাজ করি। ব্যক্তিগত জীবন থেকে ধার নিয়ে অভিনয় করি না আমরা। আসলে শিল্পী দেবের প্রতি আমার যে শ্রদ্ধাটা রয়েছে, সেটা থেকেই হয়তো এই অনুভূতিটা আসে আমার।'
পর্দার রুক্মিণী বলছেন, 'কমার্শিয়ালাইজেসন ও বাঙালি আবেগকে এই প্রথম মিলিয়ে দেবে ব্যোমকেশ। যদি দর্শক সেটা ভালবাসেন, তাহলে একটা বিরাট সাফল্য হতে আমাদের জন্য।'
আরও পড়ুন: Do You Know: রান্নার তেলের বোতলে কেন এমন ঢাকনা থাকে জানেন?