Bharat Jodo Yatra 2.0: এই শীতেই ফের শুধু টি-শার্ট পরে রাস্তায়! দ্বিতীয় দফায় ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র প্রস্ততি শুরু
Rahul Gandhi: ত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র সূচনা করেন রাহুল।
নয়াদিল্লি: সংসদে দাঁঁড়িয়েই যাত্রা এখনও বাকি বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই, দ্বিতীয় দফায় 'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুরু করতে চলেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। কংগ্রেস সূত্রে খবর, বিষয়টি এখনও পর্যন্ত পরিকল্পনার স্তরে রয়েছে। সিলমোহর পড়লে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় দফায় 'ভারত জোড়ো যাত্রা'য় বেরোবেন রাহুল। (Bharat Jodo Yatra 2.0)
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র সূচনা করেন রাহুল। পায়ে হেঁটে ৪ হাজার ৮০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছন ভূস্বর্গে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে গিয়ে সেই যাত্রা শেষ হয়। সুদীর্ঘ যাত্রা পথে ১২টি রাজ্য পায়ে হেঁটে অতিক্রম করেন রাহুল। সাধারণ, তৃণমূলস্তরের মানুষের কাছাকাছি পৌঁছন। তাঁদের সুবিধা- অসুবিধা, দাবি-দাওয়া সম্পর্কে জানতে চান।
'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। সমাজসেবা কাজের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট মানুষজন থেকে, বিনোদন, ব্যবসা জগতের পরিচিত মুখেদের ভিড়ও দেখা যায় 'ভারত জোড়ো যাত্রা'য়। দক্ষিণ থেকে উত্তর, দলে দলে মানুষজন পা মেলান পদযাত্রায়। এমনকি অসুস্থ শরীরে যাত্রায় শামিল হন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীও। পদযাত্রা থেমে গেলেও, তার পর 'ভারত জোড়ো যাত্রা'কে ডিজিটাল মাধ্যমে হাজির করে কংগ্রেস। লেহ-লাদাখ থেকে মণিপুর-মিজোরাম, দিল্লির আনন্দ বিহার বাস্টট্যান্ডে মোট বওয়া থেকে, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুকে বাড়িতে ডেকে এনে আড্ডা, রাহুলের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরা হয় সেখানে। ভারতীয় গণতন্ত্র, রাজনীতি নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন রাহুল।
'ভারত জোড়ো যাত্রা' নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রাহুল জানান, এত বছর ধরে রাজনীতি করলেও, প্রকৃত অর্থে মাটির কাছাকাছি পৌঁছনো হয়নি তাঁর। নিজের দেশকে বুঝতে, চিনতে তাই দক্ষিণ থেকে উত্তর পদযাত্রার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম দিকে একটু ভীতই ছিলেন তিনি। কিন্তু মানুষের ভালবাসা, স্নেহে সব ভয় দূর হয়ে যায়। 'ভারত জোড়ো যাত্রা'য় না বেরোলে দেশের বেকারত্ব, আর্থ-সামাজিক অসাম্যের প্রকৃত চিত্রটা এত কাছ থেকে বুঝতেই পারতেন না বলে জানান রাহুল।
বিজেপি-র তরফে লাগাতার কটাক্ষ উড়ে এলেও, 'ভারত জোড়ো যাত্রা' কিছুটা হলেও অক্সিজেন জুগিয়েছে কংগ্রেসকে, কর্নাটক, হিমাচল প্রদেশে যার ডিভিডেন্ট ঘরে তুলেছে হাতশিবির। ক্রমশ কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিলেন যাঁরা, নতুন উদ্যম জুগিয়েছে তাঁদেরও।
সর্বোপরি জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে রাহুলের গ্রহণযোগ্যতা গড়ে তোলার নেপথ্যেও 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র অবদান রয়েছে। যে কারণে কয়েক মাস আগে পর্যন্ত কংগ্রেসমুক্ত বিরোধী জোট গড়ে তোলার সপক্ষে সওয়াল করছিলেন যাঁরা, লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী শিবিরকে নেতৃত্বদানে কংগ্রেস এবং রাহুলকে যোগ্য বলে মনে হচ্ছিল না যাঁদের, একে একে একছাতার নীচে জড়ো হন সকলেই। গড়ে ওঠে বিজেপি বিরোধী I.N.D.I.A জোট।
সেই আবহেই দ্বিতীয় দফায় 'ভারত জোড়ো যাত্রা' করবেন বলে জানিয়ে রেখেছিলেন রাহুল। জানিয়েছিলেন, দক্ষিণ থেকে উত্তরের পর এবং পশ্চিম থেকে পূর্বে 'ভারত জোড়ো যাত্রা' করবেন তিনি। তবে শুধুমাত্র পদযাত্রা নয়, এবারে কর্মী-সমর্থকদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও থাকবে বলে গুঞ্জন কংগ্রেসের অন্দরে। মাসখানেক আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম দ্বিতীয় দফায় 'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির তরফেও রাহুলকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই মতোই পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।