IT Minister on Whatsapp: 'নয়া আইনে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ভয়ের কারণ নেই', বার্তা রবিশঙ্করের
'তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর বলেছেন, 'সরকার প্রশ্ন করার অধিকার-সহ সমালোচনাকে স্বাগত জানায়।'
নয়াদিল্লি: সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, 'হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের নতুন সোশ্যাল মিডিয়া নিয়মাবলী সম্পর্কে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এই প্ল্যাটফর্ম অপব্যবহার রোধ করার মতো করেই তৈরি করা হয়েছে।'
বৃহস্পতিবার ট্যুইটে এবং কু অ্যাপে একটি বার্তা দিয়ে রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান 'সরকার প্রশ্ন করার অধিকার-সহ সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। এ ক্ষেত্রে যেই তথ্যগুলি রাখা হবে তা আসলে গ্রাহকদের সুরক্ষার্থেই। গ্রাহকরা কোনওভাবে বিপদে পড়লে এই তথ্য মারফত তাঁদের সাহায্য করা হবে। সরকার গোপনীয়তার অধিকারকে সম্মান করে।'
সেখানে তিনি আরও লেখেন, 'ভারত সরকার জানে গোপনীয়তার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার এবং সরকারের তরফ থেকে ভারতের নাগরিকদের সেই অধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে। নতুন নিয়মে গ্রাহকদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। এ ক্ষেত্রে এই নয়া নিয়ম চালু করার মূল উদ্দেশ্য হল, কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলে, তা কে প্রথম বিষয়টির উৎস বা ঠিক কোথা থেকে বিষয়টি শুরু হয়েছে তা খুঁজে বের করা সহজ হবে।'
এখানেই শেষ নয়, এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ কু বার্তায় লেখেন, 'ভারত সরকার তার নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একইসঙ্গে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার দিকেও নজর রাখা সরকারের দায়িত্ব।'
সম্প্রতি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির জন্য নয়া আইটি আইনের কথা জানানো হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে। নেটমাধ্যমে লেখালেখির উপর নজরদারি চালানোর বিধি কার্যকর করা নিয়ে বুধবারই কেন্দ্র জানিয়েছে, গোপনীয়তা কেন, নাগরিকদের কোনও মৌলিক অধিকারই চূড়ান্ত নয়। সব অধিকারের উপরেই নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। এরপর নেটমাধ্যমে লেখালেখির উপর নজরদারি চালানোর বিধি কার্যকর করা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।
আর এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার একটি বার্তা হোয়াটসঅ্যাপ-সহ বিভিন্ন নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রের নয়া ডিজিটাল নজরদারি বিধি চালু হলেই হোয়াটসঅ্যাপ কল এবং মেসেজ রেকর্ড করা হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওই বার্তা ভুয়ো। সেই বার্তা শেয়ার না করার পরামর্শই দিচ্ছেন তাঁরা। মেসেজে লাল বা নীল টিক দেওয়ার মতো কোনও নতুন নিয়ম হোয়াটসঅ্যাপ চালু করেনি বলেও জানা গিয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো তথ্য অন্যের হাতে পড়ার সম্ভাবনা নেই বলেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য এর আগেও এই বিষয়ে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছিল হোয়াটসঅ্যাপ।
উল্লেখ্য, ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের গোপনীয়তার শর্তাবলীর নীতি প্রত্যাহার করতে হবে। এই মর্মে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষকে ফের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। এ ব্যাপারে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য কী, তা একসপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলেছে কেন্দ্র। জবাব সন্তোষজনক না হলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কেন্দ্র।
সূত্রের খবর, জনপ্রিয়তম এই চ্যাটিং অ্যাপের গোপনীয়তার শর্তাবলীর জন্য গ্রাহকদের তথ্যের নিরাপত্তা ও ব্যক্তিপরিসরের গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করছে কেন্দ্র। তাই ফের এই নির্দেশ। উল্টোদিকে, এই সংক্রান্ত মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের নতুন শর্তের ওপর হস্তক্ষেপ করলে, গোটা অ্যাপ-দুনিয়াই সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে। একাধিক সংস্থার নাম করে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারাও গ্রাহকদের তথ্য জমিয়ে রাখে। তাহলে শুধু হোয়াটসঅ্যাপের দিকেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে কেন?