Narada Case Updates: 'সত্য গোপন করতেই ইচ্ছাকৃতভাবে সিবিআই সিসিটিভি ফুটেজ পেশ করেনি', হাইকোর্টে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি
পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে সিবিআইয়ের মামলা স্থানান্তর নিয়ে আবেদনের শুনানি হচ্ছে
![Narada Case Updates: 'সত্য গোপন করতেই ইচ্ছাকৃতভাবে সিবিআই সিসিটিভি ফুটেজ পেশ করেনি', হাইকোর্টে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি Narada Case Updates: Daylong developments on 09 June on Narada case hearing at larger bench of Calcutta Highcourt Narada Case Updates: 'সত্য গোপন করতেই ইচ্ছাকৃতভাবে সিবিআই সিসিটিভি ফুটেজ পেশ করেনি', হাইকোর্টে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/02/26/300e1412f6ac23881f7c33e9702cbfaa_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: নারদ মামলা স্থানান্তর নিয়ে সিবিআইয়ের আবেদন। সেই মামলায় বুধবার হাইকোর্টে সওয়াল করলেন ৪ হেভিওয়েটদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
শুরুতেই, ১৭ মে, হেভিওয়েটদের গ্রেফতারির দিনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সিঙ্ঘভি বলেন, যে জমায়েত বা চাপের কথা সিবিআই বলছে, তার উল্লেখ তারা নিম্ন আদালতে বিশেষ বিচারকের কাছে করেনি।
এরপর, ফিরহাদ হাকিমের হলফনামার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সত্য গোপন করার জন্যই, ইচ্ছাকৃতভাবে সিবিআই অফিসার সিসিটিভি ফুটেজ পেশ করেননি। নিম্ন আদালতে ৩-৪ ঘণ্টা শুনানির সময়, বিক্ষোভের কথা জানায়নি। চতুর্থতলায় যেখানে সিবিআই আদালত আছে, সেখানেও কেউ যাননি। আইন মন্ত্রী তখন ক্যাবিনেট মিটিং করছিলেন।
তিনি আরও বলেন, জামিন খারিজ করার জন্যই এই তত্ত্ব সামনে আনা হয়েছে। সিবিআই কোনও পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করেছে। তাই পরিকল্পিত জমায়েতের প্রশ্নই ওঠে না।
এরপর আইনজীবী সিঙ্ঘভি বলেন, ১৭ই মে, বিক্ষোভের দিন, সিবিআই অফিস থেকে আদালতে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে কারও কোনো অসুবিধা হয়নি। সিবিআই আধিকারিকদের ফোনের লোকেশন পরীক্ষা করলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। সিবিআই স্বেচ্ছায় ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন করেছিল। শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিল রাজ্য সরকার। চাপের মুখে ভার্চুয়াল শুনানি হয়েছে এমন কোনও তথ্য নেই।
এরপর, রাজ্যের হলফনামার সূত্র উল্লেখ করে আলোচনা শুরু করতে চান অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। কিন্তু, তাতে আপত্তি জানান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
সিবিআইয়ের আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর সওয়াল শেষ হওয়ার পর, অনেক নতুন তথ্য দিয়ে এই হলফনামা পেশ করা হয়েছে। এরপর, ৫ বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, রাজ্যের হলফনামা তারা গ্রহণ করেনি। হলফনামা গ্রহণ করলে, তবেই তা বিবেচনা করে দেখা হবে।
এরপর রাজ্যের হলফনামা পড়া শুরু করেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি বলেন, সিবিআই-এর উচিত ছিল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো, কিন্তু তারা সেটা করেনি। হলফনামা অনুযায়ী, সিবিআই অফিসের সবকটি আসা যাওয়ার গেট খোলা ছিল। ১২৯ টি গাড়ি আসা যাওয়া করেছে। মানুষের জমায়েত গেটের বাইরে ছিল।
এরপর হেভিওয়েটদের গ্রেফতারির নিয়ম প্রসঙ্গে সিঙ্ঘভি বলেন, কোনও মন্ত্রীকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল খারিজ করতেই পারেন। কিন্তু প্রথমে মন্ত্রিসভার কাছেই যেতে হবে।
এরপর হাইকোর্টের কাছে সিঙ্ঘভি প্রশ্ন রাখেন, আপনারা কি রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছেন? তিনি আরও বলেন, নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথ আর মন্ত্রীদের শপথের মাঝেই রাজ্যপালের কাছে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতে কোনও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভার শপথের আগে শপথগ্রহণ করবেন না, কারণ তাহলে আবার বিপথে চালিত কোনও ব্যক্তি এটাকে 'সাংবিধানিক শূন্যতা' বলে ব্যাখ্যা করতে পারেন। গোটা মামলাই একটা বিদ্বেষ মূলক মামলা। হয় কেউ বেশি গবেষণা করেছেন, আর না হয় গবেষণা করেননি।
এরপর অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আরও বলেন, খাঁচাবন্দি তোতা পাখিকে ছেড়ে দেওয়ার পর, সে বাড়ি বাড়ি উড়ে গিয়ে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উঠলে, সেটা আরও খারাপ।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিখ্যাত বক্সার মহম্মদ আলির সঙ্গে তুলনা করে সিঙ্ঘভি বলেন, সিবিআই যেন মহম্মদ আলি হয়ে গেছে, প্রজাপতির মত উড়ছে আর মৌমাছির মত হুল ফোটাচ্ছে। এই সওয়ালের মধ্যেই মঙ্গলবারের মত, শুনানি শেষ হয়ে যায়।
১৭ মে সকালে আচমকাই এই চার হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করে সিবিআই। প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা।
তারপর নিজাম প্যালেসে তুলে এনে তাঁদের অ্যারেস্ট মেমোতে সই করানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই পাঁচ বছর আগের নারদ-মামলায় একসঙ্গে চার হেভিওয়েটের গ্রেফতারি সাড়া ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে। কিন্তু, তারপর এই বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই একের পর এক নতুন বাঁক নেয়।
১৭ মে অর্থাৎ গ্রেফতারের দিন সন্ধেতেই চার হেভিওয়েটকে জামিন দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছে যায় সিবিআই। রাতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। ফলে জেল হেফাজতে যেতে হয় চার হেভিওয়েটকে।
২১ মে চার হেভিওয়েটের জামিন-মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতভেদ তৈরি হয়।
শেষমেশ চার হেভিওয়েটকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ডিভিশন বেঞ্চে দুই বিচারপতির মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায়, মামলাটি পাঠানো হয় হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে। গত সোমবার পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলার প্রথম শুনানি ছিল।
কিন্তু, তার আগে রবিবার রাতেই চার হেভিওয়েটকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় সিবিআই। সেই আবেদনে কিছু ত্রুটি থাকায় পরদিন, সোমবার ফের নতুন করে আবেদন জানানো হয়। সেদিনই কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে জামিন-মামলার শুনানি ছিল।
পরদিন সুপ্রিম কোর্টেও নারদ-মামলার শুনানিতে বড়সড় ধাক্কা খায় সিবিআই। চার হেভিওয়েটকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেলেও, সেখানে বিচারপতিদের একের পর এক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়েন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
এরপরই হাইকোর্টে মামলা ফেরত পাঠানোর পক্ষে সায় দেন সলিসিটর জেনারেল। নিজেরা মামলা করে, নিজেরাই সেই মামলা প্রত্যাহার করে তারা। ফলে মামলা আবার ফিরে আসে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে। সেই বেঞ্চই চার হেভিওয়েটের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে।
বর্তমানে পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে সিবিআইয়ের মামলা স্থানান্তরের আবেদনের শুনানি চলছে।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)