NCERT: ‘হোয়াটসঅ্যাপের ইতিহাস কেন পাঠ্যবইয়ে’, NCERT-র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি, বিবৃতি ২৫০ ইতিহাসবিদের
Textbook Changes: যে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বাকিদের সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন রোমিলা থাপার, জয়তী ঘোষ, মৃদুলা মুখোপাধ্যায়, অপূর্বানন্দ, ইরফান হাবিব এবং উপেন্দ্র সিংহও
নয়াদিল্লি: মুঘল ইতিহাসের কিছু অংশ কাটছাঁট থেকে মহাত্মা গান্ধীর হত্যা, নকশাল আন্দোলন, গুজরাত দাঙ্গা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়েছে। সেই নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। সেই আবহেই এ বার মুখ খুললেন দেশের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ এবং শিক্ষাবিদরা। সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনায় লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করলেন তাঁরা। গোটা দেশ থেকে ওই বিবৃতিতে প্রায় ২৫০ জন স্বাক্ষর করেছেন (Textbook Changes)।
CBSE বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে
ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (NCERT)-এর তরফে পাঠ্যকবইয়ে বেশ কিছু কাটছাঁট করা হয়েছে। বিশেষ করে CBSE বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস, এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বিশেষ কিছু অধ্যায়। অতিমারি পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের বোঝা কমানোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে NCERT. কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে বিভাজনমূলক উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে মত ইতিহাসবিদ এবং শিক্ষাবিদদের। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে লিখিত বিবৃতিতে।
NCERT-র সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে যে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বাকিদের সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন রোমিলা থাপার, জয়তী ঘোষ, মৃদুলা মুখোপাধ্যায়, অপূর্বানন্দ, ইরফান হাবিব এবং উপেন্দ্র সিংহও। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতিমারি তথা লকডাউনকে ঢাল করে পড়ুয়াদের বোঝা কমানোর অজুহাত দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই থেকে মুঘল আদালত, ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গা, জরুরি অবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিতর্কিত’।
আরও পড়ুন: Farooq Abdullah: ‘মুঘল ইতিহাস বাদ দিলেও, লালকেল্লা লুকোবেন কী করে’, ফারুখের নিশানায় কেন্দ্র
অতিমারি পর্ব পেরিয়ে পড়াশোনা ফের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গিয়েছে। তাই অতিমারির দোহাই এ ক্ষেত্রে খাটে না বলেও মত ইতিহাসবিদদের। তাঁদের মতে, ‘ইতিহাসকে একমুখী করে তোলার এই উদ্যোগ আসলে মিথ্যা ইতিহাসকে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা। সাম্প্রদায়িক এবং জাতপাতের আধিপত্য ধরে রাখতেই এই বিশেষ উদ্যোগ। এই ধরনের ইতিহাস আজকাল হোয়াটসঅ্যাপ এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপে ঘুরে বেড়ায়। পাঠ্যবইয়ে তাকে প্রতিষ্ঠা করার মধ্যে দিয়ে আসলে শিক্ষায় রাজনীতিকে ঢোকানোর চেষ্টা চলছে’।
চলতি শিক্ষাবর্ষে দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং ইতিহাস বই থেকে মহাত্মা গান্ধী, তাঁর হত্যা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার গত বছর গুজরাত দাঙ্গা, মুঘল ইতিহাস, জরুরি অবস্থা, নকশাল আন্দোলনের অধ্য়ায়ও বাদ গিয়েছে। এ ব্যাপারে কারও সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করা হয়নি, কোনও রকম পরামর্শ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন ইতিহাসবিদ এবং শিক্ষাবিদরা। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে খামোকা জলঘোলা করা হচ্ছে, দাবি NCERT-র
গোটা ঘটনায় বিতর্কের মুখে পড়ে NCERT যদিও সাফাই দিয়েছে। তাদের দাবি, বিষয়টি নিয়ে খামোকা জলঘোলা করা হচ্ছে। পাঠ্যবইয়ের যে অংশ ‘অপ্রয়োজনীয়’ এবং ‘চাপিয়ে দেওয়া’ বলে মনে হয়েছে, সেই অংশই বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেছে বেছে মুঘল ইতিহাস, গান্ধী হত্যা, জরুরি অবস্থা বা গুজরাত দাঙ্গা কেন অপ্রয়োজনীয় মনে হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI